দেড় বছর ধরে অফিসে ঝুলছে তালা
আমিনুল ইসলাম হিরু, বগুড়া অফিস
বগুড়া অঞ্চলের কয়েক হাজার গ্রাহকের প্রায় ২৫ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে গা ঢাকা দিয়েছে বায়রা লাইফ ইনসিওরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের কর্মকতারা। দেড় বছর ধরে ঐ বিমা কোম্পানির বগুড়া বিভাগীয় অফিসে ঝুলছে তালা। প্রতিদিন অসংখ্য গ্রাহক তাদের পলিসির মেয়াদ পূরণের টাকা তুলতে এসে অফিস তালাবদ্ধ দেখে ফিরে যাচ্ছে। গ্রাকরা জানেন না, কোথায় কার কাছে গেলে তাদের কষ্টার্জিত জমাকৃত টাকা ফেরত পাওয়া যাবে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, জেলার বিভিন্ন উপজেলার দুর্গম ও প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে অধিক লাভের প্রলোভন দিয়ে কয়েক হাজার গ্রাহক সংগ্রহ করা হয়েছিল। এই গ্রাহকদের অধিকাংশই দিনমজুর, খেতমজুর, রিকশা-ভ্যানচালক নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ। বিমা কোম্পানিতে জমানো টাকা হারিয়ে তারা এখন দিশেহারা। সারিয়াকান্দির আন্দরবাড়ি গ্রাম, দারুনা গ্রাম ও দেলুয়াবাড়ি গ্রামের বেশ কয়েক জন গ্রাহক জানান, তারা ১০ বছরে ৩০ হাজার টাকার প্রিমিয়াম জমা দিয়েছেন। বিমার মেয়াদ পূরণ হওয়ার পর দেড় বছর আগে টাকা তুলতে গিয়ে দেখেন অফিস তালাবদ্ধ। এখনো তালাবদ্ধই রয়েছে। জানা গেছে, ১৫ বছর আগে বগুড়া শহরের ব্যস্ততম রাজাবাজারে শেখ ম্যানশনের তৃতীয় তলায় অফিস ভাড়া নিয়ে বিমাব্যবস্যা শুরু করে বায়রা লাইফ।
এ ব্যাপারে শেখ ম্যানশনের মালিক আলহাজ শেখ লয়া উদ্দিন বলেন, ১ লাখ টাকা বাড়ি ভাড়া বাকি রেখে দেড় বছর আগে হঠাত্ করে অফিস বন্ধ করে কর্মকর্তারা গা ঢাকা দেয়। অফিসে কয়েকটি ভাঙা চেয়ার-টেবিল, ফাইলপত্র ছাড়া আর কিছু নেই। বগুড়ার পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভুঁইয়া বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকরা অভিযোগ করলে তদন্ত করে মানি লন্ডারিং আইনে মামলা করা হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক বগুড়ার মহাব্যবস্থাপক জগন্নাথ চন্দ্র ঘোষ বলেন, আইডিআরএর (বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ) কাছে অভিযোগ করলে সমাধান মিলতে পারে।
যোগাযোগ করা হলে বায়রা লাইফ ইনসিওরেন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জহিরউদ্দিন বলেন, ব্যবসা মন্দা যাচ্ছিল। তাছাড়া মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা দায়িত্ববান ছিলেন না, তাই সাময়িকভাবে অফিস বন্ধ রয়েছে। তিনি বলেন, গত সপ্তাহে বগুড়া অঞ্চলের গ্রাহকদের ১০ লাখ টাকার চেক প্রদান করা হয়েছে। নভেম্বর, ডিসেম্বর মাসে সব গ্রাহকের টাকা পরিশোধ করা হবে।