শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

যুক্তরাষ্ট্রের পণ্য দেশে পৌঁছে দিচ্ছে এয়ারপোস্টেড

আপডেট : ১১ ডিসেম্বর ২০১৯, ২১:০২

মাহবুব শরীফ

 

নির্ভরযোগ্য এবং ঝামেলাহীন দ্রুততম সময়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশে পণ্য ডেলিভারি প্রদানের মাধ্যমে এরই মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে অনলাইনভিত্তিক দেশের প্রথম পিয়ার টু পিয়ার শিপিং প্ল্যাটফরম এয়ারপোস্টেড ডটকম। যুক্তরাষ্ট্রে এমন অসংখ্য পণ্য রয়েছে যা দেশে বসে পাওয়া যায় না, নানা ঝামেলা পেরিয়ে কিছু পণ্য পাওয়া গেলেও কয়েক গুণ বেশি দাম পরিশোধ করতে হয়। আবার সময়ক্ষেপণ হয় বেশি। সময় এবং খরচ বাঁচিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় পণ্যকে দেশের গ্রাহকের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতেই যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী দুই বাংলাদেশি রায়ান রহমান এবং ইকবাল আনোয়ার চালু করেছেন ই-কমার্স প্ল্যাটফরম এয়ারপোস্টেড (airposted.com)। চলতি বছরের জানুয়ারিতে আনুষ্ঠানিকভাবে এয়ারপোস্টেড কার্যক্রম শুরু করে। এই উদ্যোগের সঙ্গে অংশীদার হিসেবে যুক্ত আছেন আইসিসি কমিউনিকেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফুল ইসলাম সিদ্দিক এবং বিবিএস কেব্লসের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ বদরুল হাসান। রায়ান রহমান এবং ইকবাল আনোয়ার উভয়ই যুক্তরাষ্ট্রের স্থায়ী নাগরিক। রায়ান রহমান উদ্যোক্তা হিসেবে ক্যারিয়ার গড়তেই যুক্তরাষ্ট্রের জর্জ মেসন ইউনিভার্সিটি থেকে এন্ট্রাপ্রেনিওরশিপে স্নাতক করেছেন। ইকবাল আনোয়ার প্রকৌশল ও স্থাপত্যবিষয়ক ফার্ম পিএসবিএর ব্যবসায়ী পার্টনার ও ভাইস চেয়ারম্যান। নটর ডেম কলেজের সাবেক এই শিক্ষার্থী ভারতের আইআইটি থেকে প্রযুক্তিতে স্নাতকের পর যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানের ওয়েন স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতকোত্তর করেন। এরপর ডিপল ইউনিভার্সিটি থেকে এমবিএ করেন। এয়ারপোস্টেডের প্রধান নির্বাহী রায়ান রহমান জানান, ওয়েবসাইট ছাড়াও এয়ারপোস্টেডঅ্যান্ড্রয়েড ও আইওএস উভয় প্ল্যাটফরমের অ্যাপে পাওয়া যাবে। গুগল প্লেস্টোর কিংবা অ্যাপলের অ্যাপস্টোর থেকে এয়ারপোস্টেড অ্যাপ ডাউনলোড করা যাবে। বর্তমানে ঢাকা এবং যুক্তরাষ্ট্র মিলিয়ে প্রায় ৪০ জন কর্মী এয়ারপোস্টেডে কাজ করছেন। এয়ারপোস্টেড উদ্যোক্তারা জানান, যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যেও সেবাটি অচিরেই চালু করবেন।

যেভাবে কিনবেন এয়ারপোস্টেডের পণ্য

এয়ারপোস্টেডের সহপ্রতিষ্ঠাতা ইকবাল আনোয়ার জানান, এয়ারপোস্টেড ওয়েবসাইট কিংবা অ্যাপ থেকে দুইভাবে পণ্য কেনা যাবে। আপনার কাঙ্ক্ষিত পণ্য সার্চ করে যেমন খুঁজে নিতে পারবেন, তেমনি সার্চ করে না পেলে আপনার পণ্যটির লিংক (যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েবসাইটের) অনুসন্ধান বক্সে পেস্ট করে দিতে পারেন। এয়ারপোস্টেডের কর্মীরা এক ঘণ্টার মধ্যে সংশ্লিষ্ট পণ্য অর্ডার প্রসেসিং লিংক আপনার ই-মেইল ঠিকানায় পাঠিয়ে দেবে। এয়ারপোস্টেডে কী পরিমাণ পণ্য আছে—এমন প্রশ্নের জবাবে রায়ান রহমান জানান, এয়ারপোস্টেড হচ্ছে একটি প্ল্যাটফরম। ফলে আমাদের সাইটে যে পণ্য আছে আমরা শুধু সেগুলো ডেলিভারি দেব, এমন নয়। বিশ্বের সবচেয়ে বৃহত্ ই-কমার্স প্ল্যাটফরম অ্যামাজনসহ যুক্তরাষ্ট্রের যে কোনো ওয়েবসাইটের পণ্যই আমরা এয়ারপোস্টেডের মাধ্যমে গ্রাহকের কাছে পৌঁছে দিতে সক্ষম। এজন্য সংশ্ল্লিষ্ট পণ্যের লিংক আমাদের প্ল্যাটফরমে পেস্ট করতে হবে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে পণ্য বাংলাদেশে গ্রাহকের ঘরে পৌঁছে দিতে সামান্য পরিমাণ চার্জ করে থাকে এয়ারপোস্টেড, যা ফেডেক্স কিংবা ডিএইচএল থেকে অনেক কম। উদ্যোক্তা জানান, মূলত এয়ারপোস্টেড হচ্ছে এমন একটি প্ল্যাটফরম যেখানে পণ্যের গ্রাহক এবং ভ্রমণকারীর মধ্যে যোগসূত্র স্থাপন করে। গ্রাহক চাইলে অর্ডারকৃত পণ্য তার ঠিকানায় পৌঁছে দেওয়া হয়।  

ভ্রমণকারীদের জন্য আয়ের সুযোগ

যুক্তরাষ্ট্র এবং বাংলাদেশে ভ্রমণকারীদের জন্য বাড়তি আয়ের সুযোগ করে দিচ্ছে এয়ারপোস্টেড। এ সম্পর্কে ইকবাল আনোয়ার বলেন, ভ্রমণকারীরা তাদের লাগেজের অব্যবহূত খালি জায়গায় এয়ারপোস্টেডের পণ্য বহন করে আয় করতে পারেন। এজন্য ভ্রমণকারীকে ভ্রমণের বিস্তারিত তথ্য জানিয়ে www.airposted.com ঠিকানায় নিবন্ধন করতে হবে।

কত নিবন্ধনের পর আমরা এয়ারপোস্টেডে অর্ডারকৃত পণ্যের তালিকা দেখাব। বহনের জন্য ভ্রমণকারী তার পছন্দ মতো পণ্য বেছে নিতে পারবেন। নিউইয়র্কের এয়ারপোস্টেডের কর্মীরা ভ্রমণকারীকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতার মাধ্যমে পণ্য বহনের কাজটিকে সহজ করে দেবে।  এয়ারপোস্টেড কেবল বৈধ পণ্যের অর্ডার নিয়ে থাকে। পণ্যটি বহনের সময় ভ্রমণকারীকে কোনো প্রকার ট্যাক্স-ভ্যাট দিতে হলে সংশ্লিষ্ট স্লিপ এয়ারপোস্টেডের কাছে জমা দিলেই এ অর্থ দিয়ে দেবে প্রতিষ্ঠানটি।

পণ্য ডেলিভারির সময়সীমা

সাধারণত দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের পণ্য গ্রাহকের কাছে পৌঁছে দিয়ে থাকে এয়ারপোস্টেড। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে ১০ দিনের মধ্যেই গ্রাহকের হাতে পৌঁছে দেওয়া হয় অর্ডারকৃত পণ্য।