শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

রেলের টিকিটিং সেবা হাতের মুঠোয় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে রেলসেবা অ্যাপ

আপডেট : ১০ জুন ২০১৯, ২০:৪৩

মোজাহেদুল ইসলাম ঢেউ

 

টাইম, কস্ট ও ভিজিট কমিয়ে রেলওয়ে যাত্রীদের টিকিট প্রাপ্তি সহজ করতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সহযোগিতায় বাংলাদেশ রেলপথ মন্ত্রণালয় রেলওয়ের ওয়ান স্টপ টিকিটিং সার্ভিস ‘রেলসেবা’ নামে অ্যাপ চালু করেছে। এবার ঈদে অ্যাপটি হয়েছে উঠেছে বেশ জনপ্রিয়।

সম্প্রতি আনুষ্ঠানিক ‘রেলসেবা’ অ্যাপটি রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন ও তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহেমদ পলক যৌথভাবে উদ্বোধন করেছেন। এ অ্যাপের মধ্যে টিকিট ক্রয়ের পাশাপাশি ট্রেনের সাধারণ তথ্য, সময়সূচি ও সিটের তথ্য রয়েছে।

এছাড়া এসএমএসভিত্তিক ট্রেন ট্রাকিং, ট্রেনে বসে খাবারের অর্ডার দেওয়া ও ট্রেনের যাত্রার অভিজ্ঞতার রেটিং দেওয়ার সুবিধা রয়েছে। বাংলাদেশ রেলওয়ের সূত্র থেকে জানা যায়, এ পর্যন্ত প্রায় ২ লাখ ৩১ হাজার অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারী ও ১০ হাজার ৫১৭ জন আইওএস ব্যবহারকারী টিকিট ক্রয়ের জন্য অ্যাপসটি ডাউনলোড করেছেন। আর এবার ঈদে অ্যাপের মাধ্যমে বিক্রি হয়েছে ১ লাখ ৬৬ হাজার ৬৮৭টি  টিকিট। ইন্টারনেট ও অ্যাপ ব্যবহার করে যাত্রীসাধারণ নিজের স্মার্টফোনে টিকিট কাটার ফলে কাউন্টারে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ভিড় কমেছে। সে হিসেবে কাউন্টারে লাইনে দাঁড়িয়ে গড়ে যাত্রীপ্রতি ৩ শ্রমঘণ্টা ব্যয় হলে এক্ষেত্রে অ্যাপ ব্যবহারে অন্ততঃ ৫ লাখ শ্রমঘণ্টা সাশ্রয় করা গেছে। স্টেশনে যাওয়ার বিড়ম্বনা এড়িয়ে যাওয়ায় রাস্তায় জ্যামসহ পরিবহনের খরচ ও জ্বালানি তেল সাশ্রয় হয়েছে। এছাড়া সরাসরি ই-টিকিট ব্যবহার করে ভ্রমণের সুযোগ থাকায় বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রচলিত টিকিট প্রিন্ট করার ঝামেলা না থাকায় যাত্রীরা স্বাচ্ছন্দ্যে ট্রেনে উঠতে পেরেছেন। যে সব গন্তব্যে টিকিটের চাহিদা বেশি ও যে সব গন্তব্যের টিকিট কালোবাজারিদের নজরে থাকে, সেগুলো খুব দ্রুত সাধারণ যাত্রীরা স্মার্ট ফোনে অ্যাপের মাধ্যমে কিনে নেওয়ায় কালোবাজারিদের পক্ষে সেই সব টিকিট কিনে নিতে পারার সম্ভাবনা খুবই কমে যায়।

তাছাড়া, অ্যাপ ব্যবহারের ফলে যাত্রীর মোবাইল ফোন নম্বর, জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর, বয়স, লিঙ্গ, নাম ও ঠিকানার তথ্য সার্ভারে সংরক্ষিত থাকায় ও প্রযোজ্য ক্ষেত্রে সেটি টিকিটের গায়ে লেখা থাকায় টিকিটগুলো কাউন্টারে বিক্রীত টিকিটের মতো কালোবাজারে বিক্রি করা সম্ভব হয় না। রেল সূত্র থেকে জানা যায়, যে সব গন্তব্যে টিকিটের চাহিদা বেশি, সেগুলো টিকিটিং শুরুর প্রথম ঘণ্টায়ই অ্যাপের মাধ্যমে বিক্রি হয়ে গেছে। ঈদুল ফিতরের টিকিটিং চলাকালীন অ্যাপের তথ্য উপাত্ত নিয়ে দেখা যায়, প্রথম ঘণ্টায় ৫ হাজার জনের বেশি যাত্রী অ্যাপের মাধ্যমে টিকিট ক্রয় করেছেন। ইতোমধ্যেই অ্যাপটির আপগ্রেডের ক্ষেত্রসমূহ চিহ্নিত করা হয়েছে ও পরবর্তী সংস্করণে ঘণ্টায় ১৫ হাজারের বেশি যাত্রী টিকিট ক্রয় করতে পারবেন।

যেভাবে কিনতে হবে টিকিট https://play.google.com/store/apps/details?id=com.cnsbd.railsheba থেকে অ্যাপটি ডাউনলোড করতে হবে। আইওএস  সংস্করণও রয়েছে, সেটি পাওয়া যাবে অ্যাপল অ্যাপ স্টোর থেকে। অ্যাপটি ডাউনলোডের পর ইনস্টল করে চালু করলে লগইন অপশন দেখা যাবে (https://itunes.apple.com/us/app/ rail-sheba/id1460553594?ls= 1&mt=8)। যদি রেলসেবা অ্যাপে আপনি নিবন্ধন করে থাকেন তাহলে ফোন নম্বর ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করতে হবে। আর আগেই যদি আপনি বাংলাদেশ রেলের ই-সেবা ওয়েবসাইট নিবন্ধন করে থাকেন তাহলে সেই আইডি ব্যবহার করে লগইন করতে পারবেন। আর যদি অ্যাপটি নিবন্ধন না করে থাকেন তাহলে নতুন করে সাইন আপ বাটনে ক্লিক করতে হবে। তারপর নতুন একটি পেজ চালু হবে। সেখানে নাম, ফোন নম্বর, আইডির পাসওয়ার্ড, দিয়ে নিবন্ধন করতে হবে। তারপর আপনার ফোনে একটি কোড যাবে। সেই কোডটি অ্যাপে সাবমিট করলেই আইডিটি তৈরি হয়ে যাবে। প্রথমে অ্যাপের ‘purchase’ অপশনে যেতে হবে। তারপর ‘from station’ অপশনে ক্লিক করে ড্রপ ডাউন মেন্যু থেকে কোন স্টেশন থেকে যাবেন নির্ধারণ করতে হবে। যদি স্টেশন না থাকে তাহলে সার্চ বাটন থেকে কিওয়ার্ড লিখে স্টেশন খুঁজে পাওয়া যাবে। একই পদ্ধতিতে কোথায় যাবেন তা নির্ধারণ করতে হবে ‘to station’ অপশন থেকে। এরপর ‘journey date’ থেকে কোন তারিখ যাবেন নির্ধারণ করে ‘search train’ বাটন চাপতে হবে। তাহলে ট্রেনের তালিকা পাওয়া যাবে। সেখান থেকে যে ট্রেনের টিকিট কাটা যাবে দেখা যাবে। সেখানে ‘select class’ অপশনে ক্লিক করে কোন ধরনের আসন নেবেন তা নির্ধারণ করতে হবে। তারপর ‘adult’ ও ‘child’ অপশন থেকে টিকিটের ধরন ও সংখ্যা নির্ধারণ করতে হবে। তারপর ‘select seat’ অপশনে ক্লিক করতে হবে। এরপর আসন নির্বাচন করতে হবে। তারপর নতুন একটি পেজে টিকিটের সম্পর্কে বিস্তারিত দেখা যাবে। সেখান থেকে ‘pay now’ বাটনে ক্লিক করতে হবে। তাহলে অনলাইনের পেমেন্ট অপশনগুলো দেখা যাবে। ভিসা, মাস্টারকার্ড, এমেক্স কার্ড, নেক্সাস কার্ড, রকেট অথবা বিকাশের মাধ্যমে অর্থ পরিশোধ করা যাবে। ফিরতি মেইল ও এসএমএসে টিকিট কনফারমেশন পাবেন গ্রাহকরা।