সেবা খাতের বিদেশি কোম্পানিগুলোর অনুমোদন দেওয়ার ক্ষেত্রে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) তাদের নিজেদের বিধিমালা মানছে না। বিশেষ করে এ খাতের সবচেয়ে বড়ো উপখাত ফ্রেইট ফরোয়ার্ডিং ব্যবসার ক্ষেত্রে অনিয়ম হচ্ছে সবচেয়ে বেশি। এক সময় ফ্রেইট ফরোয়ার্ডিং ব্যবসার ক্ষেত্রে শতভাগ বিদেশি কোম্পানিগুলোকে রেজিস্ট্রেশন দেওয়া হতো। বিদেশি কোম্পানিগুলো এ খাত থেকে প্রচুর বিদেশি মুদ্রা নিয়ে যাচ্ছে বলে এনবিআরের কাছে প্রতীয়মান হয়। এরপর এনবিআরের পক্ষ থেকে এ সংক্রান্ত বিধিমালা সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়।
২০০৮ সালে এনবিআর ফ্রেইট ফরওয়ার্ডিং ব্যবসা পরিচালনার জন্য যে বিধিমালা জারি করে, তাতে এ খাতের ব্যবসার শতভাগ মালিকানা বিদেশিদের থাকতে পারত। কিন্তু ২০১৫ সালে এই বিধিমালা সংশোধন করে শতভাগ বিদেশি বিনিয়োগ ৪০ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়। অর্থাত্ বাংলাদেশে কোনো বিদেশি ফ্রেইট ফরোয়ার্ডিং কোম্পানি ব্যবসা করতে গেলে তাদের ৬০ শতাংশ শেয়ার স্থানীয়দের দিতে হতো। এ ব্যবসায় মূলধনের পরিমাণ সামান্য হওয়ার কারণে এনবিআর ঐ নীতিমালাটি সংশোধন করে। কিন্তু এনবিআরের আগে যে লাইসেন্সগুলো ইস্যু করেছিল, সেগুলো নবায়নের ক্ষেত্রে তারা পরিবর্তিত বিধিমালা মানছিল না। বিষয়টি আদালতের নজরে নিয়ে আসেন এ খাতের একজন ব্যবসায়ী। তিনি এওসাম নেটওয়ার্ক লি.-এর পক্ষে সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশনে একটি রিট পিটিশন দায়ের করেন। বাদী পক্ষে আইনজীবী ব্যারিস্টার অনিক আর হক রিট পিটিশনটি পরিচালনা করেন। শুনানি শেষে বিচারপতি এম এনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত দ্বৈত বেঞ্চ একটি রুল ইস্যু করেন। বিষয়টি কেন প্রতিপালন করা হচ্ছে না—তা আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে জানাতে অর্থ সচিব, আইন সচিব, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট অন্যদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।