শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

দিনাজপুরে আত্রাই নদীতে চলছে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন

আপডেট : ১৯ নভেম্বর ২০১৯, ২২:১৮

দিনাজপুর সদর উপজেলার আত্রাই নদী থেকে নিয়মনীতি উপেক্ষা করে ড্রেজার  মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। স্থানীয় বালু ব্যবসায়ী বালুমহাল ইজারা নিয়ে বালু উত্তোলন করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে ঝুঁকিতে পড়েছে নদীরক্ষা বাঁধ ও কাউগাঁ রেল ব্রিজ।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, কাউগাঁ রেল ব্রিজের পাশেই ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করায় ঝুঁকিতে রয়েছে ব্রিজটি। এছাড়াও গত কয়েক বছরে নদী রক্ষা বেড়ি বাঁধের ব্লক ভেঙে নদীতে বিলীন হয়ে গেছে বলে জানান এলাকাবাসী।

আত্রাই নদীতে সরেজমিন দেখা গেছে, ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলনের ফলে নদীর পশ্চিমতীরে বেড়ি বাঁধের ব্লক নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। গ্রাম রক্ষা বাঁধ কেটে ড্রেজার মেশিনের লাইন তৈরি করেছেন ইজারাদার। এতে বাঁধের অনেক জায়গা ভেঙে যাওয়ায় গ্রামবাসীদের চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এছাড়াও কাউগাঁ রেল ব্রিজের প্রায় একশ মিটারের       কাছে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করছে বালুমহালের ইজারাদার। আর কিছুদিন এভাবে চললে ব্রিজটির খুবই ক্ষতি হবে বলে দাবি করেছেন এলাকাবাসী। সরকারি নিয়মের তোয়াক্কা না করে বালুমহালে এ নৈরাজ্য দেখেও কেউ কিছু বলছে না। বালু উত্তোলনকারী এলাকায় প্রভাব খাটিয়ে সব ম্যানেজ করে বালু উত্তোলন করে যাচ্ছে।

নৌ বন্দর সীমার মধ্যে বালু উত্তোলন ও ড্রেজিং কার্যক্রম চালালে, ড্রেজারের কারণে নৌ চলাচল বিঘ্নিত হলে বা অননুমোদিত ড্রেজার বা বিধি বহির্ভূতভাবে ড্রেজার মেশিন মোতায়েন করলে জেলা প্রশাসন ব্যবস্থা নিতে পারে। যেখানে বালু উত্তোলন করতে হলে কোন প্রকার ড্রেজার মেশিন ব্যবহার করা যাবে না কিংবা ব্যবহার করলেও ইজারাকারীর বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে বলে ক্ষমতা দেওয়া রয়েছে; তারপরও  ঠিকাদার ড্রেজার মেশিন দিয়ে দিব্বি বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছেন।

আত্রাই নদীতে বালুমহাল ইজারাদার মো. আলতাফ হোসেন বলেন, প্রায় চার বছর ধরে  জেলা প্রশাসকের অনুমতি নিয়েই ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করছি। সরকারি নিয়মে এগুলো বেচাকেনাও হচ্ছে। তবে রেলব্রিজের পাশ থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন ও বেড়ি বাঁধের ব্লক নদীতে বিলীন হওয়ার প্রসঙ্গটি উত্থাপন করলে তিনি এ বিষয়ে কোনো কথা বলেননি।

 দিনাজপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আবু সালেহ মো. মাহফুজুল আলম বলেন, আত্রাই নদীতে ড্রেজার মেশিন ব্যবহারের বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে বিধি অনুযায়ী ইজারাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ফয়জুর রহমান জানান, জলমহাল ইজারা দেওয়ার দায়িত্ব জেলা প্রশাসকের। তাই এখানে আমার কোন হাত নেই। যেহেতু বাঁধ ও রেল লাইনের আশংকা দেখা দিয়েছে, তাই তিনি জেলা প্রশাসককে বিষয়টি জানিয়েছেন।  অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) জানিয়েছেন ইজরাদারের ড্রেজার মেশিন ইতিমধ্যেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।