শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

রুম্পার বন্ধু সৈকত গ্রেফতার

আপডেট : ০৮ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:৪৯

স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ছাত্রী রুবাইয়াত শারমিন রুম্পার বন্ধু আব্দুর রহমান সৈকতকে  গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এর আগে স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে সৈকতের প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করা হয়।  রুম্পার সঙ্গে সৈকতের প্রেমের সম্পর্ক চলছিল গত কয়েক মাস ধরে। কিন্তু সম্প্রতি তাদের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়। এ নিয়ে টানাপড়েনও ছিল। মামলার তদন্ত সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। শনিবার সন্ধ্যায় সৈকতকে পুলিশ গ্রেফতার করে গোয়েন্দা হেফাজতে নেয়।

রুম্পার ভাই আশরাফুল আলমের সন্দেহ, এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। আর রুম্পার সাবেক প্রেমিককে নিয়ে সন্দেহের কথা বলেছেন তার সহপাঠী এক বান্ধবী। এ দিকে দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছেন স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। গতকাল শনিবার  বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ধানমন্ডি ও সিদ্ধেশ্বরী ক্যাম্পাসে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে। শিক্ষার্থীদের দাবি, রুম্পা হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। কিন্তু ঘটনার তিন দিন পেরিয়ে গেলেও হত্যা রহস্যের কূলকিনারা করতে পারেনি সংশ্লিষ্টরা।

রুম্পা থাকতেন মালিবাগের শান্তিবাগ বাসায়। কিন্তু তার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে বাসা থেকে আধা কিলোমিটার দূরে সিদ্ধেশ্বরী সার্কুলার রোডের দুই ভবনের মাঝের ফাঁকা স্থান থেকে। কে বা কারা কীভাবে তাকে সিদ্ধেশ্বরীতে নিয়ে গিয়েছিলেন, নাকি রুম্পা  নিজেই গিয়েছিলেন  সেসব প্রশ্নের   উত্তর না মেলায় রহস্য আরো ঘনীভূত হয়েছে। এসব বিষয় মাথায় রেখে পুলিশ মৃত্যুর ঘটনা তদন্ত শুরু করেছে। তদন্ত সূত্র জানিয়েছে, রুম্পা কীভাবে মারা গেছেন তা অনুসন্ধান করা হচ্ছে। তার মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করা হয়েছে। কারো সঙ্গে দেখা করার জন্য সিদ্ধেশ্বরী এলাকায় গিয়েছিলেন কি না, তা যাচাই করা হচ্ছে।

রমনা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মনিরুল ইসলাম বলেন, তার মৃত্যুর কারণ নিশ্চিতভাবে এখনই বলা সম্ভব নয়। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট গতকাল পর্যন্ত পুলিশের হাতে পৌঁছেনি। রুম্পার বন্ধু-বান্ধবী ও তার কয়েক জন আত্মীয়ের সঙ্গে কথা বলে প্রকৃত ঘটনা জানার চেষ্টা চলছে। তিনি আরো বলেন, যেহেতু হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে, সে বিষয়টি মাথায় রেখে তদন্ত চলছে। আশা করি দ্রুত সময়ের মধ্যে আমরা একটা অবস্থানে পৌঁছাতে সক্ষম হব। তার স্যান্ডেল, মোবাইল, কানের দুল, আংটি বাসায় ফেরত পাঠানোর বিষয়টি আমাদের ভাবিয়ে তুলেছে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা জোনের এসি  এস এম শামীম জানিয়েছেন, কেন তিনি সেদিন ঐ জায়গায় এসেছিলেন তা অনুসন্ধান করা হচ্ছে। হত্যার সম্ভাবনা মাথায় রেখেই তদন্ত চলছে। এরই মধ্যে অর্ধশত ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়েছে।

সিসি টিভির ফুটেজ জব্দ

মামলা তদন্তসূত্র জানায়, রমনা থানা পুলিশ সিদ্ধেশ্বরী সার্কুলার রোডে ৬৪/৪ নম্বর বাড়ির সিসি টিভির ফুটেজ উদ্ধার করেছে। ফুটেজে দেখা যায়, রুম্পা বুধবার সন্ধ্যা ৬টা ৪৭ মিনিটে ভবনে প্রবেশ এবং রাত পৌনে ১১টায় ভবন থেকে পড়ে যেতে দেখা গেছে।

ময়নাতদন্তকারী চিকিত্সক ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ জানিয়েছেন, দেখে মনে হয়েছে রুম্পা ওপর থেকে পড়ে মারা গেছে। ওপর থেকে পড়ে মারা যাওয়ার আগে তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে কি না—সেটি নিশ্চিত হতে আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে।

রমনা বিভাগের পুলিশের সহকারী কমিশনার এস এম শামীম  জানিয়েছেন, যে ভবন থেকে রুম্পা পড়েছিল ঐ ভবনের তৃতীয় তলায় ছাত্রদের একটি মেস রয়েছে। ঘটনার পরপরই সেখানে গিয়ে মেসটি বন্ধ পাওয়া গেছে।