বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

বৃহস্পতিবার থেকে টানা বৃষ্টির পূর্বাভাস, উত্তরবঙ্গে জেঁকে নেমেছে শীত

আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০১৯, ২২:৩১

যেন ফিরে এসেছে রোদেলা দিন। উদয়াস্ত সূর্যের আলোয় ঝলমল করছে প্রকৃতি। সরে গেছে মেঘ আর ঘন কুজ্ঝটিকার চাদর। ওপরে আদিগন্ত নীলাকাশ। তবে ঠান্ডা কমছে না। উত্তাপ দিতে পারছে না শীতের সূর্য। হিম হিম বাতাস গায়ে কাঁটা দিচ্ছে। দেশের প্রায় সর্বত্রই ঠান্ডার প্রকোপ থাকলেও উত্তরাঞ্চলের সবগুলো জেলায় জাঁকিয়ে শীত নেমেছে। তেজহীন নরম রোদে তাপমাত্রা সেভাবে বাড়ছে না। রোদ্র প্লাবিত দুপুরের পর কিছুটা উষ্ণতা ছড়ালেও রাত গভীরে ভীষণ ঠান্ডা নেমে আসছে সারাদেশেই।

আবহাওয়াবিদরা বলছেন, ঠান্ডা হাওয়ায় এবার শীত যেন বেশি অনুভূত হচ্ছে। ফের পশ্চিমী ঝঞ্ঝা আসলে তবে পারদ কিছুটা ঊর্ধমুখী হতে পারে। গতকাল সকালে উত্তরাঞ্চলে দেশের সর্বশেষ জেলা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। চলতি বছরে এখন পর্যন্ত এটিই দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রার রেকর্ড। আবহাওয়ার পূর্বাভাসগুলো বলছে, বাংলাদেশে প্রায় সর্বত্রই আগামী বৃহস্পতিবার থেকে টানা তিন-চার দিন বৃষ্টি হবে। তারপর শুরু হবে দ্বিতীয় শৈত্যপ্রবাহ। অতপর ক্রমশ বাড়তে থাকবে তাপমাত্রা।

আবহাওয়াবিদ ড. মো. আবুল কালাম মল্লিক জানান, আজ সোমবার দিনের তাপমাত্রা কিছুটা বাড়বে এবং রাতের তাপমাত্রা কমবে। তবে দিনে এবং রাতে সব সময়ই শীত অনুভূত হবে। সারাদেশে আবহাওয়া থাকবে প্রধানত শুষ্ক। উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত থাকবে। আগামী ৭২ ঘণ্টায় রাতের তাপমাত্রা আরো হ্রাস পাবে। হিমালয়ের খুব কাছাকাছি হওয়ায় জেলার সর্বউত্তরের উপজেলা তেঁতুলিয়ায় অনুভূত হচ্ছে হাড় কাঁপানো শীত। কয়েক দিন ধরে ভালোভাবে দেখা মিলছে না সূর্যের। আবার সূর্য উঠলেও তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে না। রাজধানীর মতো তেঁতুলিয়ায় গতকাল রবিবার সকালটি শুরু হয়েছিল বেশ ঝলমলে রোদের আলোতেই। সকাল ৭টায় সূর্যের দেখা মেলে। দীর্ঘদিন পর ঝলমলে রোদে ক্ষণিকের স্বস্তি ফিরে আসে জনমনে। রোদের আলোতে বসে উষ্ণতা নিতে ঘরবাড়ি, দোকানপাট থেকে বেরিয়ে আসেন শীতার্ত মানুষ। কিন্তু বেলা বাড়তেই আবারও জেঁকে বসছে হাড় হিম করা ঠান্ডা। জানুয়ারিতে সেখানে তাপমাত্রা আরো কমে আসতে পারে বলে আবহাওয়া কার্যালয়ের পূর্বভাস রয়েছে।আমাদের প্রতিনিধি ও সংবাদদাতাদের তথ্য অনুযায়ী, দিনাজপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৬  দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। সেখানে প্রতিদিনই বাড়ছে শীতের তীব্রতা। এতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। বৃদ্ধ ও শিশুরা প্রতিদিন আক্রান্ত হচ্ছে শীতজনিত নানা রোগে।

মৌলভীবাজারে তীব্র শীতে দুর্ভোগে পড়েছে মানুষ। প্রতিদিনই কমছে এ জেলার তাপমাত্রা। শীতের কারণে নষ্ট হচ্ছে সবজি ক্ষেত। দিনে ও রাতে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করছেন ছিন্নমূল মানুষ।  একই অবস্থা কুড়িগ্রাম জেলায়ও। মানুষের পাশাপাশি শীতে কাবু হয়ে পড়েছে গবাদি পশুও।

তেঁতুলিয়ায় শীতের তাপমাত্রা দিনের বেলা কমলেও রাতে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ ও কুয়াশার কারণে শীতের তীব্রতা অনেক গুণে বেড়ে যায়।  কনকনে হাড় কাঁপানো শীতের কামড়ে এলাকার নিম্ন আয়ের মানুষেরা খড়কুটো জ্বালিয়ে আগুন পোহাচ্ছে। ঘন কুয়াশা ও শৈত্যপ্রবাহের কারণে ঘর থেকে বের হচ্ছে না অনেকেই।  

পঞ্চগড়ে সকাল ৬টায় তাপমাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটি দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বলে জানিয়েছেন তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রহিদুল ইসলাম।