শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

২৫ বছর ধরে অচল জাবির সুইমিং পুল

আপডেট : ১৯ জানুয়ারি ২০২০, ২২:৩৭

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্য ১৯৭৮ সালে একটি সুইমিং পুল নির্মাণের কাজ শুরু করে প্রশাসন। তবে বরাদ্দের সম্পূর্ণ অর্থ নির্মাণকাজে ব্যয় করা হয়নি। ফলে নির্মাণকাজ অসম্পূর্ণ থাকায় সুইমিং পুলে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। তার পরিপ্রেক্ষিতে কয়েক বছরের মধ্যেই এটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। প্রশাসনের অযত্ন আর অবহেলায় গত ২৫ বছর ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে এ অবকাঠামোটি। এতে প্রায় দুই যুগ যাবত্ সুইমিংয়ের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা। এর ফলে প্রতিভা থাকা সত্ত্বেও জাতীয় মানের সাঁতারু তৈরি হচ্ছে না।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সুইমিং পুলটির নির্মাণের জন্য ৪২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। তবে বরাদ্দকৃত টাকা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চসহ কয়েকটি অবকাঠামো নির্মাণে ব্যয় করা হয়। নির্মাণকাজ অসম্পূর্ণ থাকায় সুইমিংপুলে পানি দিলে দুই দিন পরেই পানিতে শেওলা জমতো এবং পানি নিষ্কাশিত হয়ে যেত। পরে ১৯৯৬ সালে সুইমিং পুলের পানি সরবরাহ    বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয় শারীরিক শিক্ষা বিভাগ। এতে সুইমিং পুলের তলানিতে জমতে থাকে নোংরা পানি। এছাড়া দীর্ঘদিন ব্যবহার না হওয়ার ফলে আবর্জনার ভাগাড়েও পরিণত হচ্ছে লাখ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ অবকাঠামোটি।

এদিকে সুইমিং পুলের কার্যক্রম বন্ধ থাকায় ও ভৌগোলিক কারণেই তা বর্তমানে পরিত্যক্ত স্থানে রূপ নিয়েছে। এ এলাকায় প্রশাসনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার না হওয়ায় নিয়মিত অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটছে। সম্প্রতি সুইমিং পুল এলাকায় ঘুরতে গিয়ে মারধর ও লাঞ্ছনার শিকার হন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মরত এক সাংবাদিক ও তার বান্ধবী। এছাড়া এ এলাকায় নিয়মিত অনৈতিক কর্মকাণ্ডও হয়ে থাকে বলে অভিযোগ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক নিরাপত্তাকর্মী।

শারীরিক শিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পর্যাপ্ত বরাদ্দের অভাবে প্রয়োজনীয় দর্শক গ্যালারি, ড্রেসিং রুম এবং এর চার পাশের দেয়াল, ছাদ ও টাইলস লাগানোর কাজটি অসম্পূর্ণ রয়ে গেছে। নিরাপত্তার জন্য আলাদা প্রহরীর বরাদ্দও দেওয়া হয়নি। ফলে গেটে সার্বক্ষণিক প্রহরীর ব্যবস্থা না থাকায় একাধিকবার সুইমিং পুলের সিঁড়ি, হাতল, গেট চুরির ঘটনাও ঘটেছে। এছাড়া প্রয়োজনীয় দেয়াল এবং প্রবেশদ্বার না থাকায় সাধারণ শিক্ষার্থী এবং বহিরাগতদের এখানে প্রবেশের ক্ষেত্রে বাধা দেওয়া সম্ভব হয় না। ফলে ক্যাম্পাসের সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি এখানে অবাধে চলাচল করে বহিরাগতরা। সন্ধ্যা হলেই মাদকাসক্তদের দখলে চলে যায় সুইমিং পুলের পুরো এলাকা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, সুইমিং পুল এলাকাটি অপেক্ষাকৃত নির্জন হওয়ায় চুরি, ছিনতাইয়ের পাশাপাশি বিভিন্ন সময় নারীদের শ্লীলতাহানির মতো ঘটনা হরহামেশাই ঘটে থাকে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা বলেন, ‘নিরাপত্তার জন্য কোনো প্রহরীর ব্যবস্থা নেই। এছাড়া পুরো এলাকাটি অপেক্ষাকৃত নির্জন। ফলে ঐ এলাকায় অপ্রীতিকর ঘটনাগুলো বেশি ঘটে।’

শারীরিক শিক্ষা অফিসের উপপরিচালক মোহাম্মদ সেলিম মিয়া বলেন, ‘সুইমিং পুলের অভাবে শিক্ষার্থীদের সাঁতার প্রশিক্ষণ দিতে পারছি না। যার ফলে এখন আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভালো মানের সাঁতারু বের হচ্ছে না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শারীরিক শিক্ষা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক হাবিবা ইয়াসমীন ইত্তেফাককে বলেন, ‘আমরা এ বিষয়ে প্রশাসনকে একাধিকবার জানিয়েছি।