প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেছেন, বিদেশি কোম্পানি এদেশে শান্তিপূর্ণভাবে ব্যবসা করুক সেটা আমরাও চাই। কিন্তু তাদেরকে ব্যবসা করতে হলে এ দেশের সকল আইন ও নিয়মকানুন মেনে চলতে হবে। গ্রামীণ ফোনের (জিপি) কাছে বিটিআরসির পাওনা সাড়ে ১২ হাজার কোটি টাকার মামলার শুনানিকালে প্রধান বিচারপতি এ মন্তব্য করেন। একই সঙ্গে সর্বোচ্চ আদালতের বেঁধে দেওয়া আপাতত ২ হাজার কোটি টাকার মধ্যে বাকি ১ হাজার কোটি টাকা তিন মাসের মধ্যে দিতে জিপিকে নির্দেশ দিয়েছে আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের ছয় বিচারপতির বেঞ্চ গতকাল সোমবার এই আদেশ দেন। এর আগে আপিল বিভাগের নির্দেশে রবিবার বিটিআরসিকে ১ হাজার কোটি টাকা পে-অর্ডারের মাধ্যমে পরিশোধ করে জিপি।
গত ২৪ নভেম্বর আপিল বিভাগ বিটিআরসির অডিট আপত্তির সাড়ে ১২ হাজার কোটি টাকার মধ্যে আপাতত ২ হাজার কোটি টাকা দিতে জিপিকে তিন মাস সময় বেঁধে দিয়েছিল আপিল বিভাগ। কিন্তু টাকা না দিয়ে ঐ আদেশ পুনঃবিবেচনা চেয়ে আবেদন করে জিপি। গত বৃহস্পতিবার আপিল বিভাগ ১ হাজার কোটি টাকা প্রদানের নির্দেশ দিয়ে সোমবার রিভিউ শুনানির জন্য দিন ধার্য রাখেন।
গতকাল মামলার শুনানির শুরুতে আদালতের নির্দেশে হাজার কোটি টাকা প্রদানের বিষয়টি হলফনামা আকারে আপিল বিভাগকে অবহিত করেন জিপির কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট এএম আমিন উদ্দিন। তখন প্রধান বিচারপতি বলেন, বাকি টাকা কবে দিবেন? আইনজীবী বলেন, ছয় মাস সময় দিন। পাঁচটি কিস্তিতে ১৪০ কোটি টাকা দিতে রবিকে সময় দেওয়া হয়েছে।
প্রধান বিচারপতি বলেন, তিন মাসের মধ্যে বাকি টাকা দিয়ে দিন। আমরা বিটিআরসিকে বলে দিব আপনাদের কোনো ঝামেলা না করে, ব্যবসা করতে দিতে। আইনজীবী আবার বলেন, ছয় মাস না হলে পাঁচ মাস সময় দিন। প্রধান বিচারপতি বলেন, সময় বাড়ানো হবে না। যদি এই সময়ের মধ্যে টাকা না দেন তাহলে অর্থ আদায়ের ওপর হাইকোর্টের দেওয়া স্থগিতাদেশ রয়েছে তা প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে। এ পর্যায়ে কিস্তিতে অর্থ পরিশোধের বিষয়টি বিবেচনার জন্য প্রধান বিচারপতিকে অনুরোধ জানান জিপির আইনজীবীরা। তখন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, আপিল বিভাগ তিন মাসের মধ্যে ২ হাজার কোটি টাকা পরিশোধের নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু তারা মাত্র ১ হাজার কোটি টাকা দিয়েছে। বাকি ১ হাজার কোটি টাকা দিতে সর্বোচ্চ এক মাস সময় দেওয়া হোক। শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ অর্থ পরিশোধ করতে জিপিকে তিন মাস সময় দেয়। আদালতে বিটিআরসির পক্ষে ব্যারিস্টার খোন্দকার রেজা ই রাকিব ও খোন্দকার রেজা ই রাব্বি ও জিপির পক্ষে মেহেদী হাসান চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।