শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

কক্সবাজারের অপরাধ জগতের ‘কিং’ কাজী রাসেল গ্রেফতার

আপডেট : ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ২২:৫৫

কক্সবাজার সৈকতের পর্যটন জোনের সব ধরনের অপরাধের ‘কিং’ হিসেবে পরিচিত কাজী রাসেল আহমদ নোবেল ওরফে কাজী রাসেল অবশেষে গ্রেফতার হয়েছেন। গতকাল সোমবার  ভোরে নারীসহ কলাতলীর সৈকতপাড়ার একটি নির্মাণাধীন বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

গুরুত্বপূর্ণ এক মন্ত্রীর সঙ্গে ছবি তুলে তিনি নিজেকে তার ভাগিনা পরিচয় দিয়ে পর্যটন এলাকার অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করতেন বলে অভিযোগ রয়েছে। গ্রেফতারের পর তাকে ছাড়িয়ে নিতে জোর তদ্বির চালাচ্ছেন তার ভাই কক্সবাজার পৌরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর কাজী মোরশেদ আহমদ বাবুসহ তার সাঙ্গপাঙ্গরা। গ্রেফতার কাজী রাসেল (৩৩) কক্সবাজার পৌরসভার কলাতলীর লাইটহাউজ এলাকার মৃত কাজী তোফায়েল আহমদের ছেলে। তিনি জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস্য এবং কলাতলী কটেজ মালিক সমিতির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। তার সঙ্গে আটক নারী ঢাকার দোহারের জয়পাড়ার বাসিন্দা।

কক্সবাজার সদর থানার ওসি (অপারেশন) মাসুম খান জানান, পর্যটন এলাকার কলাতলীর হোটেল-মোটেল জোনে দীর্ঘদিন ধরে দলীয় পরিচয়ে কাজী রাসেল নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিলেন। প্রায় সময় তার বিরুদ্ধ নানা অভিযোগ পাওয়া যেত। কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) ইকবাল হোসাইন বলেন, কাজী রাসেলকে নারীসহ আটক করা হয়েছে। এ সময় অস্ত্র এবং অন্যকিছু পাওয়া গেছে বলে জানাননি সদর মডেল থানার ওসি সৈয়দ আবু মো. শাহাজান কবির। তারপরও বিষয়টির খবর নেওয়া হচ্ছে। কাজী রাসেলের বিরুদ্ধে থানায় মামলা রয়েছে। তাকে আটকের পর বিভিন্ন জায়গা থেকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। সবকিছু আমলে নিয়ে তদন্তপূর্বক পরবর্তী ব্যবস্থা  নেওয়া হবে।

কলাতলী পর্যটন জোনের একাধিক ব্যবসায়ী ও স্থানীয় বাসিন্দা জানান, কাজী রাসেলের অপরাধের রাজ্য খুবই বিস্তৃত। তারা বেশ কয়েকটি কটেজে পতিতা           সরবরাহ, ইয়াবা এবং বিভিন্ন ধরনের মাদক সরবরাহ দিতেন। এছাড়া বিভিন্ন হোটেল-মোটেল থেকে টাকা আদায় করতেন। পর্যটন এলাকায় নির্মাণাধীন বা তৈরি হওয়া অনেক অ্যাপার্টমেন্ট, ভবন ও হোটেলের কক্ষ, ফ্ল্ল্যাট বা পুরো ফ্লোর দখলে নিয়ে ভাড়া দিত কাজী রাসেলরা।

এদিকে, জেলা গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) ওসি মানস বড়ুয়া ও সদর থানার ওসি (অপারেশন) মাসুম খান মিলে কাজী রাসেলকে অন্তরঙ্গভাবে কেক খাওয়ানোর একটি ছবি ফেসবুকে দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে। এতে অনেকে অনেক ধরনের মন্তব্য করছেন। এ বিষয়ে মাসুম খান বলেন, অপরাধী ধরতে গেলে অনেক সময় অপরাধীর সঙ্গেও অন্তরঙ্গ সম্পর্ক গড়তে হয় আমাদের। এটি এমনই একটি পদ্ধতির চিত্র। ওসি মাসুমের মতো একই কথা বলেছেন, ডিবির ওসি মানস বড়ুয়াও।

কক্সবাজার জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান কায়সারুল হক জুয়েল বলেন, অপরাধী কোনো দলের হতে পারে না। দলীয় পরিচয়ে অপরাধ করলে শাস্তি পেতেই হবে। কাজী রাসেলের দায় দল নেবে না।