বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

যাত্রী কমেছে ট্রেন-বাস-লঞ্চে

আপডেট : ২২ মার্চ ২০২০, ২২:২৪

বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাস আতঙ্কে বাস, ট্রেন ও লঞ্চে ক্রমান্বয়ে কমে আসছে যাত্রীসংখ্যা। রাজধানী ও দূরপাল্লার সড়কে কমে গেছে যানবাহনও। গত কয়েক দিন ধরেই রাজধানীর চিরচেনা যানজট নেই। যাত্রী কমে যাওয়ায় অনেক রুটেই ট্রিপ কমিয়ে দিয়েছে বাস কোম্পানিগুলো। গণপরিবহন-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে সংক্রমণের সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন পরিবহন শ্রমিকেরা। তাদের সুরক্ষার জন্য মাস্কসহ প্রয়োজনীয় উপকরণ সরবরাহ করা হয়নি।

নৌপথে যাত্রীসংখ্যা ক্রমান্বয়ে কমে আসার বিষয়ে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেক জানান, নৌপথে ক্রমান্বয়ে যাত্রীসংখ্যা কমছে। শুক্রবার ঢাকা নদীবন্দর দিয়ে প্রায় ৪২ হাজার যাত্রী দক্ষিণাঞ্চলে গেলেও শনিবার তা কমে ছিল ৩০ হাজারের কাছাকাছি। এই মুহূর্তে আমরা নৌযাত্রা নিরুত্সাহিত করছি।

বাংলাদেশ লঞ্চ মালিক সমিতির সিনিয়র সহসভাপতি মো. শহীদুল ইসলাম ভুঁইয়ার মতে, সাধারণ সময়ে যেসব লঞ্চে ৭০০-৮০০ যাত্রী হতো, এখন সেখানে কমে ৪০০-৫০০ যাত্রী হচ্ছে। রবিবার রাতে বরিশাল থেকে ঢাকাগামী পারাবত-৯ লঞ্চে প্রথম শ্রেণির (কেবিন) ১৮৭টি সিটের মধ্যে ৪০টিতে এবং পারাবত-১২ লঞ্চের কেবিনে  ১৮৮টি সিটের মধ্যে ৫০টিতে যাত্রী রয়েছে। একইচিত্র অন্যান্য লঞ্চের ক্ষেত্রেও। একই ধরনের সমস্যার কথা জানান আরো কয়েক জন লঞ্চ মালিক।

রাজধানীর কমলাপুর, বিমানবন্দর স্টেশনসহ গাবতলী, শ্যামলী, কল্যাণপুর, মালিবাগ, ফার্মগেটসহ কয়েকটি বাস-ট্রেন স্পট ঘুরে দেখা গেছে, রাজধানীতে চলাচলকারী বাসে যাত্রী কমে গেছে। ট্রেনের স্টেশনগুলো অনেকটা ফাঁকা। বাসের চালক, হেলপার ও কন্ডাকটরদের মুখে মাস্ক নেই।

কমলাপুরের এক ট্রেনযাত্রী জানান, আগের তুলনায় স্টেশনে ভিড় অনেক কম। ট্রেন কর্তৃপক্ষের সংশ্লিষ্টরা জানান, ফিরতি ট্রেনে যাত্রী শূন্য। ঢাকা থেকে কিছু যাত্রী পাওয়া যাচ্ছে।

কয়েকটি কোম্পানির বাসমালিকরা জানান, ঢাকা থেকে বিভিন্ন জেলাগামী বাসে যাত্রী অনেকটা কমেছে। তবে ঢাকাগামী বাসগুলোতে যাত্রী নেই বললেই চলে। বিশেষ করে পর্যটন স্পটগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় যাত্রী আরো কমেছে। ঢাকার ভেতরে চলাচলকারী বাসগুলোতে যাত্রী কমে অর্ধেকে নেমেছে। যাত্রী কমে যাওয়ায় অনেক বাস রাস্তায় নামছে না। কমে গেছে সিএনজি অটোরিকশার সংখ্যাও। এতে রাজধানীর প্রধান সড়কগুলোও অনেকটাই ফাঁকা হয়ে গেছে।

শ্যামলী-এনআর পরিবহনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শুভঙ্কর ঘোষ রাকেশ বলেন, ভারতের সঙ্গে সব ধরনের বাস চলাচল বন্ধ আছে। পর্যটন স্পট বন্ধ থাকায় ঢাকা-কক্সবাজার রুটের ৮০ শতাংশ ট্রিপ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। উত্তরাঞ্চল ও দক্ষিণাঞ্চলের রুটগুলোতে যাত্রী এখনো আছে। ফিরতি পথে যাত্রী খুব একটা নেই।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী বলেন, আমরা সবাইকে মাস্ক ও হ্যান্ডওয়াশ ব্যবহার করতে বলেছি। আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকেও এসব উপকরণ বিতরণ শুরু করেছি। সচেতনতা বাড়াতে লিফলেট বিতরণ শুরু করেছি।