শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

অনাবৃষ্টি, সেচের অভাবে মরছে চা-গাছ

আপডেট : ২৯ মার্চ ২০২০, ২৩:০০

বৃহত্তর সিলেটে আবহাওয়ার বিরূপ প্রভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। দীর্ঘ অনাবৃষ্টি আর প্রখর তাপে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন চা-বাগানে চা-গাছ বিবর্ণ হয়ে মারা যাচ্ছে। অনাবৃষ্টিতে নদ-নদী, ছড়া ও লেক শুকিয়ে যাওয়ায় চাহিদা মতো সেচও দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। ফলে এবার চায়ের উত্পাদন মাত্রাতিরিক্তহারে হ্রাস পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

সরেজমিনে কমলগঞ্জ উপজেলার কয়েকটি চা বাগান ঘুরে জানা যায়, অনাবৃষ্টিতে এ বছর উপজেলার ২২টি চা-বাগানে ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। খরতাপে নতুন সৃজিত চা এর ৩০ শতাংশ চারা গাছ ও ১০ শতাংশ পুরাতন চা-গাছ পুড়ে গেছে। চা-বাগান কর্তৃপক্ষ কিছু কিছু টিলায় নিয়মিত সেচ দিয়েও এ বিপর্যয় থেকে রেহাই পাচ্ছে না।

সরকারি মালিকানাধীন ন্যাশনাল টি কোম্পানির (এনটিসি) পাত্রখোলা চা-বাগান ব্যবস্থাপক মো. শফিকুর রহমান জানান, এসময়ে সাধারণত চা-বাগান অঞ্চলে ১৫ সে. মি. বৃষ্টিপাত হয়। তবে এ বছর এ সময়ে শুরু হয়েছে খরা।  প্রায় উত্পাদন বন্ধই বলা যায়। এর প্রভাব পড়বে এ বছরের সার্বিক উত্পাদনে। গত কয়েক মাস ধরে চায়ের বিক্রয় মূল্য অর্ধেকে নেমে এসেছে বলে তিনি জানান।               

বাংলাদেশ চা সংসদের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মকর্তারা বলেন,               চা-গাছ রক্ষায় উদ্যোগ নিয়েও পানির অভাবে সেচ দেওয়া যাচ্ছে না। তাছাড়া বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রভাব এখন চা-শিল্পের উপরও পড়েছে। চা-শিল্পে কর্মরত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুই জন কর্মকর্তা জানান, বাংলাদেশে চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় এমনিতেই চায়ের আন্তর্জাতিক বাজার হারাচ্ছে। তার ওপর বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রভাবে বৃষ্টিপাতের তারতম্য ঘটতে শুরু করেছে। এতে চা-শিল্পে বিরাট প্রভাব পড়বে এবং আশঙ্কাজনকহারে উত্পাদন হ্রাস পাবে।

বাংলাদেশ চা গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক ড. মোহাম্মদ আলী জানান, এখন পানি দিয়েই চা-গাছ রক্ষা করা কঠিন হচ্ছে। আবার পানি না দিলে চা-গাছ মারা যেতে পারে। খরতাপের কারণে চা-গাছে  বিভিন্ন ধরনের পোকার আক্রমণ দেখা দেবে। লাল মাকড়শার আক্রমণে চা-গাছের উপরাংশ লাল হয়ে যাবে। ফলে কীটনাশক প্রয়োগ করতে হবে। এখন গাছ থেকে চা-পাতা উত্তোলন না করলে গাছের পাতা বড়ো হয়ে যাবে। এ ক্ষেত্রে উত্পাদনে ক্ষতি হবে।