ভোলার লালমোহনে সংখ্যালঘুদের বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালিয়েছে একদল দুর্বৃত্ত। এ সময় হামলাকারীদের এলোপাতাড়ি মারপিটে নারী, পুরুষ ও শিশুসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে ভবরঞ্জন, পলাশ, নিখিল, সুমি রানী, ইভান, পিংকি, সুবাস, মিতু, প্রণব, অনিল চন্দ্রসহ ১১ জনকে লালমোহন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার দুপুরে উপজেলার ধলীগৌরনগর ইউনিয়নের বাউরিয়া গ্রামের তপন চন্দ্র মাষ্টারের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
হাসপাতালে চিকিত্সাধীন নিখিল চন্দ্র জানান, শুক্রবার দুপুরে মানুষ যখন জুমার নামাজ নিয়ে ব্যস্ত, ঠিক তখন পূর্ব পরিকল্পিতভাবে স্থানীয় মিরন ও আবুল হাসেমের নেতৃত্বে এলাকার সন্ত্রাসী ফকরুদ্দিন, তোহা, তারেক, আহাদ, রাশেদ, তাহের মাঝি ও মুরাদসহ সংঘবদ্ধ বাহিনী এ হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়।
প্রায় এক ঘণ্টা ধরে চালানো এ তাণ্ডবের দৃশ্য এলাকাবাসী প্রত্যক্ষ করলেও ভয়ে কেউ ঠেকানোর চেষ্টা করেনি। এর মধ্যে জামাল উদ্দিন নামে এক প্রতিবেশী দুর্বৃত্তদের থামাতে গেলে তাকেও নির্মমভাবে পিটিয়ে আহত করা হয়।
খবর পেয়ে স্থানীয় মঙ্গলসিকদার পুলিশফাঁড়ির সদস্যরা ঘটনাস্থলে গেলেও কাউকে আটক করতে পারেনি। মঙ্গলসিকদার পুলিশফাঁড়ির এসআই হেলাল উদ্দিন বলেন, পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সবাই পালিয়ে যায়। তবে তাদের ধরার জন্য প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
লালমোহন থানার ওসি মীর খায়রুল কবীর বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে এবং মামলার প্রস্তুতি চলছে। অভিযুক্তরা গা ঢাকা দেওয়ায় তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। ঘটনার শিকার নিখিল চন্দ্র আরো বলেন, বেশ কয়েক বছর আগে তাদের বাড়ির জগত্ বন্ধুর কাছ থেকে কিছু অংশ জমি কেনে আবুল হাসেম। এর পর থেকে সে বেপরোয়া হয়ে ওঠে এবং তাদের পরিবারের ওপর নিপীড়ন চালিয়ে আসছে। শুক্রবার সকালে তিনি পুকুর থেকে পানের বরজে পানি দিতে গেলে বাধা দেয় হাসেম। এ নিয়ে কথা কাটাকাটি হলে তাকে এবং তার বড়ো ভাই সুবাস চন্দ্রকে বেদম মারপিট করে সে। এর পর দ্বিতীয় দফায় আবুল হাসেম প্রায় ৫০-৬০ জন ক্যাডার বাহিনী নিয়ে তাদের বাড়িতে অতর্কিত হামলা চালিয়ে কার্তিক, নিখিল, ভবরঞ্জন এবং লিটন দাসের ঘরে একের পর এক তাণ্ডব চালাতে থাকে। হামলাকারীরা নারী, পুরুষ ও শিশু যাকে পেয়েছে তাকেই নির্যাতন করেছে। ভাঙচুর করা ঘরের বিভিন্ন মূল্যবান জিনিসপত্রও তছনছ করে তারা। এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলেও জানান নিখিল চন্দ্র।