ময়মনসিংহের ভালুকায় শ্রমিক ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে ও বেতনের দাবিতে শ্রমিক বিক্ষোভ, মহাসড়ক অবরোধ, দুই পক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপ, হামলা ও পালটা হামলার ঘটনা ঘটেছে। পরে পুলিশ লাঠিচার্জ, টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঐ ঘটনায় তিন পুলিশ সদস্যসহ কমপক্ষে ২৩ জন আহত হয়েছেন। ঐ সময় আত্মরক্ষার্থে মহাসড়ক পার হতে গিয়ে ট্রাকচাপায় দুই জন শ্রমিক নিহত হয়েছেন। গতকাল সোমবার সকালে উপজেলার মাস্টারবাড়ি এলাকায় ক্রাউন ওয়ার্স লিমিটেডে ঐ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা যায়, বিজিএমইএ ঘোষিত বিগত ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত কারখানা শর্তসাপেক্ষে ছুটি দেওয়ার পরও ক্রাউন ওয়ার্স প্রাইভেট লিমিটেডে কাজ করানো হয়। ঐ সময় কাজে যোগদান না করায় গত রবিবার পাঁচ শতাধিক শ্রমিককে মিল কর্তৃপক্ষ ছাঁটাই করে। সোমবার শ্রমিকেরা কাজে যোগদান করতে এসে দেখেন গেটের সামনে কারখানা বন্ধের নোটিশ টানানো রয়েছে। এ সময় শ্রমিকেরা মিল কর্তৃপক্ষের কাছে গত মাসের বেতন দাবি করেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ আগামী ৮ এপ্রিল বেতন দিতে চাইলে শ্রমিকরা তা প্রত্যাখ্যান করেন। পরে তাদের দাবি আদায়ে বিক্ষোভ শুরু করেন এবং কারখানার দিকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকেন। খবর পেয়ে শিল্প পুলিশ প্রথমে শ্রমিকদের শান্ত করার চেষ্টা চালায়। কিন্তু শ্রমিকেরা নিয়ন্ত্রণে না আসায় পুলিশ লাঠিচার্জ, টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
একই সময় মালিকপক্ষের একদল লোক শ্রমিকদের ওপর হামলা চালিয়ে তাদের বেধড়ক লাঠিপেটা করে। ঐ সময় ছবি তুলতে গেলে এক সাংবাদিকের মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। পরে শিল্প পুলিশের সহায়তায় মোবাইলটি উদ্ধার করা হয়। নিহত শ্রমিকদের একজন ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার আবদুল রহিমের ছেলে ক্রাউন ওয়ার কারখানার শ্রমিক হারুন অর রশিদ। অপরজন স্কয়ার ফ্যাশনের শ্রমিক ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার চিয়ার কান্দা গ্রামের ফয়েজ উদ্দিনের ছেলে জুয়েল (২৪)। বর্তমানে এলাকার পরিবেশ শান্ত রয়েছে। এ বিষয়ে ক্রাউন ওয়ার্স প্রাইভেট লিমিটেডের জেনারেল ম্যানেজার জাকারিয়া সুহেলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কথা বলতে রাজি হননি।