বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

নতুন এক সমুদ্রের জন্মস্থান আফ্রিকা!

আপডেট : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২০, ২৩:২০

আফ্রিকার পূর্বতম অঞ্চলটিকেআফ্রিকার শিংবলে ডাকা হয়। ইরিত্রিয়া, ইথিওপিয়া, সোমালিয়া এবং জিবুতি নিয়ে গঠিত এইআফ্রিকার শিং জিবুতি এবং ইথিওপিয়া সীমান্তের অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকালেক এবে জিবুতির লেক এবের চুনাপাথরের চিমনি এবং সক্রিয় ভূতাত্ত্বিক কার্যক্রমের কারণে এই নির্জন দৃশ্যপটই এক দিন পরিণত হবে বিশ্বের পরবর্তী সমুদ্রের জন্মস্থানে!

হাজার হাজার বিশালাকৃতির চুনাপাথরের চিমনি রয়েছে এখানে। যা কিনা ৫০ মিটার পর্যন্ত উঁচু হয়ে থাকে। নীল-সবুজ লবণাক্ত ভূমির নিচের দিকেও বিস্তৃত রয়েছে এই চুনাপাথরের চিমনি। মোচাকৃতির এই চুনাপাথরের চিমনি অনেক সময় সালফারের বাষ্প বাতাসে ছড়িয়ে দেয়। সবকিছু মিলিয়ে অন্যরকম এক পরিবেশ বিরাজ করে আফ্রিকার অন্যতম বিরল অঞ্চলটিতে।

শুকনা, রহস্যময় মরুভূমিকে আপাতদৃষ্টে পানির উত্স হিসেবে খুবই অনুপযোগী মনে হলেও এটি একাধারে তিনটি টেকটোনিক প্লেটের সংযোগস্থলে গড়ে উঠেছে। এর এক পাশে রয়েছে আফ্রিকান প্লেট, এক পাশে এরাবিয়ান প্লেট এবং এক পাশে ইন্ডিয়ান প্লেট। তিনটি প্লেটের ওপর গড়ে ওঠা এই মরুময় লেক ১৯ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং ১৯ কিলোমিটার প্রস্থ অঞ্চল নিয়ে গড়ে উঠেছে। এখানকার পানি পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে লবণাক্ত। এই পানি পানের জন্য খুবই বিষাক্ত। মারাত্মক ক্ষারযুক্ত          এই লেক দেখতে অনেকটাই মরুভূমির মতো।  

ভূতাত্ত্বিক মতবাদ অনুসারে, ভূতত্ত্ব প্রধানত সাতটি বড় কয়েকটি ক্ষুদ্র গতিশীল কঠিন প্লেট দ্বারা গঠিত। যেগুলো নিম্নস্থ ভ্রাম্যমাণ উষ্ণ গুরুমণ্ডলীয় পদার্থের ওপর ভাসছে। সাধারণত দুটি অপসারী প্লেট একে অপর থেকে দূরে সরে যেতে থাকে। এই ধরনের প্লেটের সীমানার দূরে সরে যাওয়ার ফলে নতুন সমুদ্র তলদেশ কিংবা সামুদ্রিক আগ্নেয়গিরির সৃষ্টি হয়। জিবুতির এই লেক এবে অঞ্চলের থাকা তিনটি টেকটোনিক প্লেটও অপসারী প্রকৃতির, ধীরে ধীরে একে অপর থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। কিন্তু এই সরে যাওয়ার গতি এতটাই কম যে, খালি চোখে সাধারণত চোখে ধরা পড়ে না। প্রতি বছর গড়ে দুই সেন্টিমিটার গতিতে সরে যাচ্ছে। ভূতত্ত্ববিদদের মতে, আগামী কোটি বছর পরে এই টেকটোনিক প্লেটগুলো পরস্পর থেকে দূরে গিয়ে এখানে তৈরি করবে পৃথিবীর নতুন এক সমুদ্র। তাদের ধারণা, এটি হলে জিবুতির উপকূলীয় যতো উঁচু ভূমি রয়েছে সেগুলোও লোহিত সাগরের পানিতে তলিয়ে যাবে অর্থাত্ পুরো অঞ্চলই পানির নিচে চলে গিয়ে তৈরি করবে নতুন এক সমুদ্র।বিবিসি