বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

মানিকগঞ্জে করোনার উপসর্গ নিয়ে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু

আপডেট : ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২১, ২২:৩০

গতকাল বৃহস্পতিবার মানিকগঞ্জে করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা গেছে অষ্টম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রী। ঠাকুরগাঁওয়ের একটি স্কুলের পাঁচ ছাত্রী এবং খুলনার মোংলায় এক জন স্কুলশিক্ষক করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, মানিকগঞ্জে করোনার উপসর্গ নিয়ে গতকাল মারা গেছে অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রী।  সুরেন্দ্র কুমার (এস কে) সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী সুবর্না ইসলাম রোদেলাকে বুধবার সন্ধ্যায় ঢাকায় নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। জেলা সদরের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিত্সা কর্মকর্তা কাজী এ কে এম রাসেল বলেন, এক জন ছাত্রী করোনায় আক্রান্তের খবর ছড়িয়ে পড়লে বুধবার রাতে ঐ বিদ্যালয়ের বেশ কয়েক জন শিক্ষার্থীর অভিভাবক তাদের সন্তানদের করোনা পরীক্ষা করানোর জন্য ফোনে যোগাযোগ করেন।      

 জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটি এবং বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, অসুস্থ থাকায় গত ১৫ সেপ্টেম্বরের পর থেকে রোদেলা বিদ্যালয় আসা বন্ধ করে দেয়। এরপর গত তিন দিন ধরে রোদেলার জ্বর এবং শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। স্থানীয় চিকিত্সকের পরামর্শে ওষুধ খায়। তবে গত শনিবার দুপুরের পর থেকে তার  মারাত্মকভাবে শ্বাসকষ্ট, গলা ও বুকে ব্যথা হলে দ্রুত জেলা সদরের গিলন্ড এলাকায় মুন্নু জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে  রাজধানীর কুর্মিটোলা হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেয় হাসপাতালের  চিকিত্সক। সেখানকার চিকিত্সকদের পরামর্শে তাকে ঢাকায় নেওয়ার  পথে অ্যাম্বুলেন্সে নিস্তেজ হয়ে পড়ে। পরে ঢাকার বেসরকারি একটি হাসপাতালে নিলে সেখানকার চিকিত্সকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আবদুল লতিফ বলেন, করোনার উপসর্গ নিয়ে রোদেলার মৃত্যু হয়েছে। তবে করোনায় মারা যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

ঠাকুরগাঁওয়ে পাঁচ ছাত্রী করোনায় আক্রান্ত, ক্লাস বন্ধ

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি জানিয়েছেন, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার বাহাদুরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির পাঁচ জন শিক্ষার্থী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। এতে ঐ দুই শ্রেণির ক্লাস বন্ধ রেখেছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার বিকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জগন্নাথপুর ইউনিয়নের কলোনি এলাকায় অবস্থিত ঐ স্কুলটির প্রধান শিক্ষক মোছা. ফারহানা পারভীন।

জানা গেছে, গত সোমবার করোনা ভাইরাস পরীক্ষার জন্য ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে চতুর্থ শ্রেণির দুই জন ও পঞ্চম শ্রেণির তিন জন ছাত্রীর নমুনা দেওয়া হয়। মঙ্গলবার নমুনা পরীক্ষা শেষে তাদের শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়।

করোনায় আক্রান্ত চতুর্থ শ্রেণির দুই জন ও পঞ্চম শ্রেণির তিন জনের বয়স ১০ থেকে ১২ বছরের মধ্যে। তারা ঠাকুরগাঁও সরকারি শিশু পরিবার বালিকার সদস্য। প্রধান শিক্ষক মোছা. ফারহানা পারভীন বলেন, গত মঙ্গলবার সরকারি শিশু পরিবার বালিকা কর্তৃপক্ষ জানায়, আমাদের স্কুলে পড়ুয়া চতুর্থ শ্রেণির দুই জন ও পঞ্চম শ্রেণির তিন জন ছাত্রী সর্দি-জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে। সেদিনই তাদের নমুনা দেওয়া হয় করোনা পরীক্ষার জন্য। বুধবার আমরা জানতে পারি ঐ পাঁচ ছাত্রী করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার মৌখিক নির্দেশে আপাতত চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির পাঠদান বন্ধ করা হয়েছে এবং প্রথম শ্রেণি থেকে তৃতীয় শ্রেণির পাঠদান কার্যক্রম সচল রয়েছে।

ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. রকিবুল আলম চয়ন জানান, সরকারি শিশু পরিবার বালিকার ১৩ জন ছাত্রীর শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। আমরা তাদের আলাদাভাবে আইসোলেশনে রেখেছি। তারা বর্তমানে সুস্থ আছে। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, উপজেলার প্রত্যেকটি বিদ্যালয়ে স্বাস্থ্য সুরক্ষা বজায় রেখে ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। আমরা সব বিদ্যালয়কে সার্বক্ষণিক তদারকি করছি।

মোংলার স্কুলে শিক্ষকের করোনা, সব শিক্ষক-শিক্ষার্থীকে পরীক্ষার নির্দেশ

বাগেরহাট প্রতিনিধি জানান, বাগেরহাটের মোংলা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের এক সহকারী শিক্ষক করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় ঐ বিদ্যালয়ের সব  শিক্ষক-কর্মচারী ও আড়াই শতাধিক শিক্ষার্থীর নমুনা পরীক্ষার নির্দেশ দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। বৃহস্পতিবার স্কুল পরিদর্শন করে মোংলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কমলেশ মজুমদার এ নির্দেশনা দেন। সেই সঙ্গে কর্তৃপক্ষকে স্কুল চলাকালে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এদিকে ঐ নির্দেশনার পর গতকাল দুপুরে মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্কুলটির শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নমুনা পরীক্ষা শুরু হয়েছে।

জানা গেছে, গত মঙ্গলবার বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পুলিন মণ্ডল ও তার স্ত্রী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নার্স সুচন্দা মণ্ডলের নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়। আক্রান্ত ঐ শিক্ষক স্কুলে আসায় প্রশাসন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এরপর থেকে তারা হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন।