শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

পদ্মা সেতু নিয়ে গুজব সৃষ্টিকারীদের ধরতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী

আপডেট : ১১ জুলাই ২০১৯, ২২:৫২

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতুর পাইলিংয়ের জন্য ‘মাথা লাগবে’ বলে গুজব রটনাকারীদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনার নির্দেশ দিয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার বনানীর সেতু ভবনে ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের পরামর্শক নিয়োগের চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ কথা বলেন।

বিএনপির দিকে ইঙ্গিত করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘প্রধান বিরোধী দল নির্বাচন, আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে গুজব ছড়িয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। নইলে পদ্মা সেতুতে কেন মানুষের মাথা লাগবে, কেন রক্ত লাগবে—এরকম একটা অদ্ভুত, উদ্ভট, অবিশ্বাস্য কল্পকাহিনীর মতো বিষয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়ানো হয়েছে। এটা নিয়ে সারা দেশে আতঙ্ক সৃষ্টিরও একটা পাঁয়তারা চলছে। গুজব রটনাকারীদের ধরতে ইতিমধ্যে কার্যক্রম শুরু হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সেতু বিভাগ, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা, র্যাব এদের সঙ্গে কথাবার্তা হয়েছে। তারা দায়িত্ব নিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তিনিও নির্দেশ দিয়েছেন এ ধরনের একটা অবৈজ্ঞানিক, অবাস্তব, হাস্যকর গুজব রটনাকারীদের খুঁজে বের করার। এদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া উচিত।’

তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যারা এ ধরনের অপপ্রচার চালিয়েছে সেটা তো চাপা দিয়ে রাখা যাবে না। সত্য উদঘাটিত হবে, দেশের এমন একটা বিষয় নিয়ে অপপ্রচারে যারা জড়িত শাস্তি তাদের পেতেই হবে। অনুষ্ঠানে পদ্মা সেতুর অগ্রগতি তুলে ধরে সেতুমন্ত্রী বলেন, এখন পর্যন্ত মূল সেতুর কাজের বাস্তব অগ্রগতি ৮১ ভাগ, সার্বিক অগ্রগতি ৭১ ভাগ। নদীতে মূল সেতুর ২৬২টি পাইলের মধ্যে ১৬১.৫টি পাইলের কাজ হয়ে গেছে। অবশিষ্ট পাইলের অর্ধেকের কাজ জুলাইয়ের ১৫ তারিখের মধ্যে শেষ হবে। মূল সেতুর ৪২টি পিলারের মধ্যে ৩০টির কাজ শেষ হয়েছে। মাওয়া প্রান্তে ২৫টি স্প্যানের মধ্যে ১৪টি স্থাপন করা হয়েছে। ফলে এখন পদ্মা বহুমুখী সেতুর দুই হাজার ১০০ মিটার দৃশ্যমান হয়েছে।

ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান স্পেনের টিপসা এবং বাংলাদেশের দোহওয়া অ্যান্ড ডিডিসির সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ। সেতু কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রকৌশলী কাজী ফেরদৌস আলম এবং পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের পক্ষে অ্যান্তোরিও রদ্রিগেজ ক্যাস্টেলানস চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ৩০৪ কোটি ১৪ লাখ ৬৯ হাজার টাকার চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। ২৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণে ব্যয় হবে ১৬ হাজার ৯০১ কোটি ৩২ লাখ টাকা। রাজধানীর বিমানবন্দর থেকে আবদুল্লাহপুর, ধউর, বড় আশুলিয়া, জিরাবো, বাইপাইল হয়ে ঢাকা ইপিজেড পর্যন্ত যাবে এই এক্সপ্রেসওয়ে। প্রকল্পের আওতায় ১০ দশমিক ৮৩৪ কিলোমিটার র্যাম্প, ১৪ দশমিক ২৮ কিলোমিটার রাস্তা, নবীনগরে এক দশমিক ৯৫১ কিলোমিটার ফ্লাইওভার, ২ দশমিক ৭২ কিলোমিটার সেতু এবং ১৮ কিলোমিটার ড্রেনেজ ব্যবস্থা নির্মাণ করা হবে। আগামী ডিসেম্বরে এই প্রকল্পের নির্মাণকাজ শুরু হবে বলে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে জানান মন্ত্রী কাদের।