ইংরেজি ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা পরিবারের জার্মানীয় শাখার পশ্চিম দলের একটি ভাষা। উত্স বিচারে ইংরেজি ভাষাটির সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ ভাষাটি হলো ফ্রিজীয় ভাষা। এছাড়া এটির সঙ্গে ওলন্দাজ ভাষা, ফ্লেমিশ ভাষা (বেলজিয়ামে প্রচলিত ওলন্দাজ ভাষার উপভাষা) ও নিম্ন জার্মান উপভাষাগুলোর সম্পর্ক আছে। উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের গ্রেট ব্রিটেন দ্বীপের দক্ষিণাংশে অবস্থিত ইংল্যান্ডে খ্রিষ্টীয় আনুমানিক ৬ষ্ঠ শতকে ইংরেজি ভাষার জন্ম হয়। তবে সম্প্রতি চীনা পণ্ডিতরা দাবি করেছেন- ইংরেজি ভাষা নাকি চীনা উপভাষা থেকেই আজকের এ অবস্থানে এসেছে। তাদের মতে, খ্রিষ্টীয় পঞ্চদশ শতাব্দীর আগে পর্যন্ত নাকি ইউরোপের কোনো ইতিহাসই ছিল না।
চীনের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পণ্ডিতদের সমন্বয়ে গঠিত বিশ্ব সভ্যতা গবেষণা অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, ইংরেজি ছাড়াও ইউরোপের সব ভাষাই নাকি মান্দারিন ভাষা থেকে সৃষ্ট। সম্প্রতি বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত ‘চীনা ইন্টারন্যাশনাল ফ্রোন্টিয়ার এডুকেশন সামিটে’ এ কথা বলা হয়। সংস্থাটির মহাসচিব ঝাই গুইয়ুন গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন, ইংরেজি ভাষায় ব্যবহূত অনেক শব্দ চীনা ভাষা থেকে নেওয়া হয়েছে। অনেক শব্দের উচ্চারণও চীনা ভাষা থেকে ধার করা। ইংরেজি ভাষার কোনো স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য নেই দাবি করে তিনি বলেন, গবেষণায় উঠে আসা তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে বলা যায় চীনা উপভাষাই ধীরে ধীরে ইংরেজি ভাষায় রূপান্তরিত হয়েছে। অন্যকথায় চীনা উপভাষা থেকেই ইংরেজি ভাষার জন্ম। ইংরেজ কবি ও নাট্যকার উইলিয়াম শেকসপিয়ার ইংরেজি ভাষার সর্বশ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক এবং বিশ্বের একজন অগ্রণী নাট্যকার হিসেবে স্বীকৃত। অথচ উইলিয়াম শেকসপিয়ারকে নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন এ চীনা সংস্থাটির মহাসচিব। মি ঝাই উইলিয়াম শেকসপিয়ারকে একজন ‘অশিক্ষিত অভিনেতা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন। ইউরোপের ইতিহাস সম্পর্কে ঝাই গুইয়ুনের মূল্যায়ন—চীনা ইতিহাসের ওপর ভিত্তি করেই প্রচীন মিশরীয় সভ্যতা, গ্রিক এবং রোমান সভ্যতার মিথ্যা গল্প রচনা করেছে ইউরোপ। পঞ্চদশ শতাব্দীর আগে পৌরাণিক কাহিনি এবং কিংবদন্তির কাল্পনিক চরিত্র ছাড়া ইউরোপের কোনো ইতিহাসই ছিল না। পশ্চিমারা চীনা ইতিহাসকেই ৫০০ বছর ধরে বিকৃত করে ইউরোপের গৌরবান্বিত ইতিহাস তৈরি করেছে।—ইন্ডিপেনডেন্ট