শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

কৃত্রিম মাতৃগর্ভ এক দশকের মধ্যেই

আপডেট : ১৭ অক্টোবর ২০১৯, ২২:৩৬

বিশ্বব্যাপী এখনো নবজাতকের মৃত্যুর অন্যতম বড়ো কারণ অপরিণত শিশু জন্ম। তবে অপরিণত শিশুর জন্ম প্রতিরোধে এবার নেদারল্যান্ডসের একদল বিজ্ঞানী আগামী এক দশকের মধ্যে কৃত্রিম মাতৃগর্ভ তৈরির ঘোষণা দিয়েছেন। সেটি সম্ভব হলে ‘প্রিম্যাচিউরড বেবি’ বা অপরিণত শিশু জন্মের হার উল্লেখযোগ্য হারে কমে আসবে।

কৃত্রিম মাতৃগর্ভের গঠন সম্পর্কে বিজ্ঞানীরা জানান, একটা প্লাস্টিকের ব্যাগের মতো দেখতে এই কৃত্রিম জরায়ুর ভেতরে থাকবে অপরিণত শিশুটি, তার সঙ্গে জুড়ে দেওয়া পাইপ দিয়েই তার জন্য আসবে রক্ত ও অন্যান্য তরল। ঠিক মায়ের গর্ভের মতোই পরিবেশ সৃষ্টি করা হবে সেখানে। নেদারল্যান্ডসের ম্যাক্সিমা মেডিক্যাল সেন্টারে এই মুহূর্তে এই কৃত্রিম মাতৃগর্ভ তৈরির কাজ চলছে, যা প্রধানত খুবই অপরিণত অবস্থায় জন্ম নেওয়া শিশুদের কথা মাথায় রেখে করা হচ্ছে।

কৃত্রিম মাতৃগর্ভের নকশা তৈরি করছেন লিসা ম্যান্ডিমেকার। তিনি বলছেন, কৃত্রিম মাতৃগর্ভ হবে একটি প্লাস্টিকের ব্যাগের মতো। নির্ধারিত সময়ের আগেই পৃথিবীতে চলে এসেছে যে শিশু, মায়ের পেট থেকে বের করে তাকে সেই ব্যাগে ঢোকানো হবে। সেখানে সে চার সপ্তাহ সময় অবস্থান করবে। তারপর নতুন করে সে আরেকবার পৃথিবীতে ভূমিষ্ঠ হবে। তিনি বলেন, এই মুহূর্তে বড়ো বড়ো বেলুন বানানো হয়েছে, প্রত্যেকটির সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়েছে অসংখ্য পাইপ। এই বেলুনগুলোর মধ্যে শিশুরা মাতৃগর্ভে যে তরলের মধ্যে সাঁতার কাটে, তার ব্যবস্থাও করা হবে। আর বিভিন্ন পাইপের মাধ্যমে সেখানে তরল ও রক্ত সঞ্চালনের ব্যবস্থা করা হবে। লিসা বলেন, প্রতিটি বেলুন তৈরি করা হবে একটি শিশু মাতৃগর্ভে সর্বশেষ যে ওজনে রয়েছে তার দ্বিগুন আকৃতিতে, যাতে শিশুটির চলাফেরা মাতৃগর্ভের মতোই স্বাভাবিক থাকে।

নৈতিক প্রশ্ন :লিসার মতে, কৃত্রিম মাতৃগর্ভ আবিষ্কারের ফলে গর্ভধারণ সম্পর্কেও মানুষ একেবারে ভিন্নভাবে ভাবতে পারবেন। কিন্তু প্রাকৃতিক উপায়ে গর্ভধারণ জায়গায় কৃত্রিম পদ্ধতি কতটা নৈতিক হবে, তা নিয়েও অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন। সমালোচকরা মনে করেন, এর ফলে আগামীদিনে নারীরা সন্তান ধারণকালীন জটিলতা এড়ানোর জন্য প্রাকৃতিকভাবে গর্ভধারণে আগ্রহ হারিয়ে ফেলতে পারেন। —বিবিসি