বাংলাদেশ সরকারের বিশ্বব্যাপী কূটনৈতিক তত্পরতা ও জাতিসংঘের চাপে পড়ে মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গা শরণার্থীদের দেশে ফিরিয়ে নিতে সম্মত হলেও তাদের সদিচ্ছার অভাবে প্রত্যাবাসন কার্যক্রম শুরু হতে পারছে না। মিয়ানমার সরকারের শরণার্থী প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ ও কার্যক্রম থেকে বোঝা যাচ্ছে যে, বিশ্ববাসীকে ধোঁকা দিতেই তারা প্রত্যাবাসনের এক প্রতীকী উদ্যোগ নিয়েছে। তারা ফিরে যাওয়া শরণার্থীদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে বা নিরাপত্তা দিতে তেমন কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। এর ফলে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অত্যাচার-নির্যাতনের সেই বিভীষিকাময় দিনগুলোর কথা মনে করেই রোহিঙ্গারা সেখানে যেতে নিরাপদবোধ করছে না। কাজেই তাদের নাগরিকত্ব, নিরাপত্তা, বাড়িঘর জমি-জমা ফেরত পাওয়ার নিশ্চয়তা মিয়ানমার সরকারকেই দিতে হবে। একইসঙ্গে নিশ্চিত করতে হবে তাদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কর্মসংস্থানের সুযোগ। তাদের মৌল মানবিক চাহিদা পূরণের ব্যবস্থা করা গেলে তারা একদিন উন্নত ও দক্ষ মানব সম্পদ হবে। আর তাদের প্রত্যাবাসন ও নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে, তারা শুধু এশিয়ার জন্যই নয় বরং সারা বিশ্বের জন্যই হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে। কাজেই মিয়ানমার সরকারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ আরো বাড়াতে হবে, যাতে তারা রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করে। এছাড়া শরণার্থী প্রত্যাবাসন কার্যক্রম সফল করতে হলে শুধু বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা নয়, বরং শরণার্থীদের একটি প্রতিনিধি দলকে অন্তর্ভুক্ত করে ত্রিপাক্ষিক আলোচনার উদ্যোগ নিতে হবে। জাতিসংঘকেও পুরো বিষয়টির প্রতি নজর রাখতে হবে।
বিপ্লব বিশ্বাস
গোয়ালচামট, ফরিদপুর