শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

ঢাকা সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা-কর্মীদের ফরিয়াদ

আপডেট : ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ২১:২১

আমাদের কাজ হলো ঢাকা নগরকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা। আমরা জীবন বাজি রেখে রাস্তা, অফিস-আদালত, বাসাবাড়ির পরিচ্ছন্নতার কাজ করি। আমাদের মধ্যে অনেকে ৩১ বছর ধরে অস্থায়ীভিত্তিতে কর্মরত রয়েছেন। আমরা বেশিরভাগই বংশানুক্রমে আবর্জনা অপসারণের কাজ করে আসছি। ঢাকা আজ নানাবিধ নাগরিক সুবিধা নিয়ে তিলোত্তমা নগরীতে পরিণত হলেও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজে নিয়োজিতদের ভাগ্যের কোনো পরিবতর্ন হয়নি। ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করতে গিয়ে দুরারোগ্য নানা ব্যাধিতে আক্রান্ত হলেও আমরা সেজন্য কোনো সুবিধা পাই না। ঢাকা সিটি করপোরেশনের অধীনে কর্মরত ৭৫০০ পরিচ্ছন্নতাকর্মীর মধ্যে আমরা ৪৫০০ পরিচ্ছন্নতাকর্মী সম্পূর্ণ অস্থায়ীভিত্তিতে কাজ করছি। আমাদের মাসিক বেতন নির্ধারিত—১৪ হাজার ৩০০ টাকা। নেই ইনক্রিমেন্ট, বোনাস, উত্সবভাতা বা ন্যূনতম চিকিত্সাভাতাও। যার ফলে এই দুর্মূল্যের বাজারে পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে। ঢাকা সিটি করপোরেশনে মেয়র আসেন মেয়র যান। সবাই আশ্বাস দেন, কিন্তু আমাদের চাকরি স্থায়ী হয় না।

ঢাকা সিটি করপোরেশন বিভক্ত হওয়ার পর ঢাকা উত্তরে মোট ২৭৪২ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মী রয়েছেন। তার মধ্যে চাকরির বসয়সীমা ৫৯ বছর করে প্রায় ৩০০ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মীকে চার লাখ টাকা নগদ দিয়ে বাদ দেওয়া হয়েছে। দৈনন্দিন সাংসারিক ব্যয় মেটাতে গিয়ে এঁরা অনেকে ভিক্ষা পর্যন্ত করছেন এবং ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ছেন। যদি ৫৯ বছরে বাদ দেওয়া হয়, তাহলে চাকরিকালীন (৩০ বছর থেকে ৪০ বছর) পরিচ্ছন্নতাকর্মীর সরকারি বিবিধ সুবিধা পাবেন না কেন তাঁরা? উল্লেখ্য, অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনে পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কাজ করতে পারতেন। অসুস্থ হলে বা মারা গেলে তাঁর পরিবারের একজন সদস্যের চাকরি পাওয়ার সুযোগ ছিল। বিভক্ত হওয়ার পর দক্ষিণ সিটি করপোরেশন আগের নিয়মেই চলে, অথচ উত্তর সিটি করপোরেশনে নতুন নিয়ম চালু হয়। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের অনেক পরিচ্ছন্নতাকর্মীর শিক্ষিত ছেলেমেয়ে রয়েছে, অথচ তারা দুর্বিষহ বেকার জীবন কাটাচ্ছে। পরিশেষে, আমাদের ভাগ্যোন্নয়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে আমার আশা করি।

মোহাম্মদ আলী

অঞ্চল-৫,

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন,

গাবতলী বেড়িবাঁধ সিটি কলোনি,

দারুসসালাম, মিরপুর, ঢাকা