বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

শান্তি আলোচনা ‘শেষ হয়েও হলো না শেষ’

আপডেট : ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ২১:৩০

ড. আবদুল লতিফ মাসুম

খলিলজাদ যখন শান্তির বার্তা দিচ্ছেন, ঠিক তখনই কাবুলে তালেবানদের বোমা হামলায় ১৬ জন নিহত ও ৩০ জন আহত হওয়ার ঘটনা ঘটে। এর প্রত্যুত্তরে মার্কিনরাও তাদের অভিযান জোরদার করে। সমরবিদরা মনে করছেন, তালেবান পক্ষ তাদের ক্রমাগত হামলার মাধ্যমে মার্কিনদের সেনা প্রত্যাহারে

বাধ্য করতে চায়

আফগানিস্তানে প্রায় দুই দশকব্যাপী ‘মার্কিন-আফগান’ যুদ্ধের পরিসমাপ্তি ঘটতে যাচ্ছে— এমন আশাবাদ ছিল আন্তর্জাতিক মহলের। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তালেবানরা আফগানিস্তানে শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্য একটি সমঝোতায় পৌঁছে যাওয়ার কাছাকাছি এসেও শেষ মুহূর্তে ভেঙে গেল সমঝোতা। বিষয়টি বাংলা সাহিত্যের ছোটো গল্পের মতো- ‘শেষ হয়েও হলো না শেষ।’ শান্তি আলোচনার ও রূপরেখা ঘোষণার পর রাজধানী কাবুলসহ দেশ জুড়ে একাধিক হামলা শুরু করে তালেবানরা; গত সপ্তাহে তালেবানদের হামলায় এক জন মার্কিন সেনাসহ কমপক্ষে ১০০ জন মানুষ মারা গেছে। এর ফলে আফগানিস্তানে নিহত মার্কিন সেনার সংখ্যা ১৬-তে পৌঁছাল। রোমানিয়ার এক সেনাও নিহত হয়েছে। এ হামলার ফলে মার্কিন জনমত শান্তি আলোচনার বিপক্ষে চলে যায়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই তালেবান হামলার পরিপ্রেক্ষিতে শান্তি আলোচনা বাতিলের ঘোষণা দিয়েছেন। তালেবান নেতাদের সঙ্গে অনুষ্ঠিতব্য বৈঠকটি ৮ সেপ্টেম্বর মেরিল্যান্ডের ক্যাম ডেভিডে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। পরে ট্রাম্প আফগান প্রেসিডেন্টের সঙ্গে নির্ধারিত বৈঠকটিও বাতিল করেন। অথচ মার্কিন কূটনীতিকরা বলছিলেন, কাতার-দুবাই শান্তি আলোচনার সুফল পেতে যাচ্ছে গোটা বিশ্ব। এমনকি এ মাসের মধ্যেই একটি যৌথ ঘোষণা আসা অসম্ভব কিছু নয়। আফগান যুদ্ধে ক্লান্ত-শ্রান্ত এবং অবসন্ন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘস্থায়ী, অনিশ্চিত এবং অমর্যাদাকর এই লড়াই থেকে ‘সসম্মানে পশ্চাদাপসারণের’ উপায় নিয়ে ভাবছে অনেকদিন আগে থেকে। কিন্তু বারাক ওবামার সময়কালে যার সূচনা, ট্রাম্পের আমলে কেন অপ্রত্যাশিতভাবে তার যবনিকাপাত ঘটছে—এটা অবশ্যই ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণের অপেক্ষা রাখে। কাবুলে তালেবান সরকারের পতন এবং অবশেষে আল-কায়দা নেতা ওসামা বিন লাদেনের হত্যার মধ্য দিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার সামরিক লক্ষ্য অর্জন করে। এক তরফাভাবে যুদ্ধবিরতি দিয়ে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের তখনই ছিল চমত্কার সময়। ২০১৭ সাল থেকে শুরু হওয়া শান্তি আলোচনা এ বছর আরো গভীর ও নিবিড় করা হয়। পশ্চিমা পক্ষ ১ সেপ্টেম্বরের মধ্যেই একটা সুরাহার খবর শুনতে চায়। শান্তি আলোচনায় মার্কিন প্রতিনিধি দলের নেতা পশতু ভাষাভাষী আফগান বংশোদ্ভূত জালমে খলিলজাদ এই সেদিন আলোচনার নবম পর্ব অতিক্রম করেন। কষ্টকর প্রসব বেদনা অবশেষে একটি সম্মত ফর্মুলা উদ্ভাবনে সক্ষম হয়। গত মার্চ মাসে সমাপ্ত এই ফর্মুলার চূড়ান্তকরণে শেষ মুহূর্তের দৌড়ঝাঁপ অবশেষে ব্যর্থ হয়ে গেল। শতধা বিভক্ত, নেতৃত্বের কোন্দলে জর্জরিত এবং রাজনৈতিক লক্ষ্যে দ্বিধান্বিত আফগান সমাজের বিষয়-বৈশিষ্ট্যের কারণে চুক্তির বাস্তবায়ন সম্পর্কে অনিশ্চিত ছিল আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল। অপরদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপরও ভরসা নেই কূটনীতিকদের। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক মহলের সেই ধারণাই বাস্তব রূপ পেল। তবে আলোচনা সফলতার দ্বার প্রান্তে পৌঁছে ব্যর্থ হওয়ার দায় তালেবানদের ঘাড়েই বর্তাবে। তাদের সর্বশেষ আক্রমণের সিদ্ধান্তটি নিঃসন্দেহে অপরিপক্ব এবং অকূটনীতিসুলভ। সঙ্গতভাবেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট প্রশ্ন তুলেছেন, ‘তারা আর কত দশক যুদ্ধ করতে ইচ্ছুক?’ সব মিলিয়ে আশা-আশঙ্কার, মায়া-মরীচিকায় কঠিন সময় অতিবাহিত করছে আফগান শান্তি প্রক্রিয়া। ভেঙে যাওয়া শান্তি আলোচনা আবার কবে শুরু করা যাবে, তা অনিশ্চিতই থেকে গেল। 

ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় যে, আফগানরা স্বাধীনতা প্রিয় জাতি। রুশ-জার সাম্রাজ্য এবং ভারতের ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের দ্বিমুখী আগ্রাসন থেকে তারা রক্ষা করেছিল তাদের ভূমি। ব্রিটিশরা বারবার নাস্তানাবুদ হয়েছে আফগানদের হাতে। ভাগ্যের নির্মম পরিহাস— রুশ ও মার্কিন উভয় পরাশক্তি আফগানিস্তান দখলে নিয়েছে। যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় বিংশ শতাব্দীর শেষপ্রান্তে মুক্ত হয়েছিল আফগানিস্তান, তারাই আবার ২০০১ সালে তা দখল করে নেয়। তারাও ছেড়ে যেতে বাধ্য হবে একদিন। ইতিমধ্যে এই দুই যুগের দখলে আফগানিস্তানের প্রতিটি ইঞ্চি মাটি হয়েছে রক্তাক্ত। সমরবিদরা বলে থাকেন, আফগানিস্তানের মাটিতে এতই বোমা বর্ষিত হয়েছে যে, তা আগুন হয়ে উঠেছে। গত পাঁচ বছরে ৪৫ হাজার আফগান সেনা ও পুলিশ নিহত হয়েছে তালেবানদের হাতে।

এ মাসের ২ তারিখে মার্কিন প্রধান মধ্যস্থতাকারী জালমে খলিলজাদ একটি অন্তর্বর্তীকালীন শান্তি চুক্তির খসড়া প্রকাশ করেন। তাতে বলা হয়, প্রাথমিক ব্যবস্থা হিসেবে আফগানিস্তান থেকে ৫ হাজার ৪০০ সেনা প্রত্যাহার করবে যুক্তরাষ্ট্র। ২০ সপ্তাহের মধ্যে এসব সৈন্য প্রত্যাহার করা হবে বলে ঘোষণা করা হয়েছিল। তবে বিষয়টি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায় ছিল। চুক্তি অনুযায়ী অবশেষে আরো ৫ হাজার সৈন্য স্থায়ীভাবে রয়ে যাবে আফগানিস্তানে। তারা বাগ্রাম ও কান্দাহারের মার্কিন বিমান ঘাঁটির প্রহরা ও অন্যান্য মার্কিন স্থাপনার নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। আফগানিস্তানে বর্তমানে সর্বমোট ১৪ হাজার মার্কিন সৈন্য রয়েছে। সব সৈন্যই একটি নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে প্রত্যাহার করা হবে। গত কয়েক বছরে ন্যাটো সামরিক জোটের কয়েকটি দেশ সেনা প্রত্যাহার করে নেয়। বর্তমানে সেখানে ন্যাটো জোটের অংশীদার ৩৯টি দেশের ১৭ হাজার সেনা মোতায়েন রয়েছে। দীর্ঘ প্রতীক্ষিত মার্কিন-তালেবান শান্তি আলোচনার বিষয়বস্তু সম্পর্কে প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানিকে অবহিত করা হয়েছে। আলোচনা বাতিল হওয়ার পর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেছে মার্কিন মদতপুষ্ট আফগান সরকার। দেশটির প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানির দপ্তর বলেছে, ‘শান্তি প্রতিষ্ঠায় আফগান সরকার তার মিত্রদের সুবিবেচক উদ্যোগের প্রশংসা করে।’ উল্লেখ্য, শান্তি আলোচনায় আশরাফ গানির সরকার বরাবর অনুপস্থিত ছিল। তালেবান পক্ষ তাদের আফগানিস্তানের বৈধ শাসক বলে মনে করে না। চুক্তির বিষয়াবলি সম্পর্কে বলা হয়েছিল, ১৩৫ দিনের মধ্যে পাঁচটি সামরিক ঘাঁটি থেকে পর্যায়ক্রমে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করা হবে। সম্পাদিত চুক্তি অনুযায়ী মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের বিনিময়ে ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্র কিংবা তার মিত্রদের আক্রমণে কেউ আফগানিস্তানের মাটি ব্যবহার করতে পারবে না। তালেবানপক্ষ বিষয়টি নিশ্চিত করবে। শান্তি রক্ষার ব্যাপারে তালেবানরা সচেষ্ট থাকবে। চুক্তি পর্যালোচনায় দেখা যাচ্ছে, তালেবান তথা মার্কিনবিরোধী পক্ষ সেনা প্রত্যাহারের ওপর সমধিক গুরুত্ব আরোপ করছে। অপরদিকে মার্কিনিরা নিশ্চিত হতে চাইছে যে এটি ওসামা বিন লাদেনের মতো ব্যক্তিদের আশ্রয়স্থল হবে না। ঘটনাবলি বিশ্লেষণ করে রাজনৈতিক ভাষ্যকারগণ মন্তব্য করছেন, উভয় পক্ষ একই সঙ্গে শান্তির কথা বলছে, অপর দিকে শক্তি প্রয়োগ করছে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, খলিলজাদ যখন শান্তির বার্তা দিচ্ছেন, ঠিক তখনই কাবুলে তালেবানদের বোমা হামলায় ১৬ জন নিহত ও ৩০ জন আহত হওয়ার ঘটনা ঘটে। এর প্রত্যুত্তরে মার্কিনরাও তাদের অভিযান জোরদার করে। সমরবিদরা মনে করছেন, তালেবান পক্ষ তাদের ক্রমাগত হামলার মাধ্যমে মার্কিনদের সেনা প্রত্যাহারে বাধ্য করতে চায়। যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা আফগানিস্তানে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নিশ্চিত করতে চায়। তারা আরও চায় যে একটি গণতান্ত্রিক কাঠামোর মাধ্যমে আফগানিস্তানের ভবিষ্যত্ শাসক নির্ধারিত হোক। এ বিষয়ে বর্তমানে ক্ষমতাসীন মার্কিন আস্থাভাজন আশরাফ ঘানি সরকারের অবস্থান চুক্তির অনুকূল নয় বলে পর্যবেক্ষক মহলের ধারণা।

প্রতিবেশী দেশগুলো তো বটেই, দূরবর্তী বৃহত্ শক্তিগুলোর বিপরীত সমীকরণে এক অস্বাভাবিক ক্ষেত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে আফগানিস্তান। আজকে যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি চীন, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য, জার্মানি ও ফ্রান্স হয়ে উঠেছে একেকটি প্রতিপক্ষ। বার্তা সংস্থা জানিয়েছে, যথাযথভাবে সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রসমূহকে অবহিত রেখেই চুক্তির আয়োজন করা হয়েছিল। এ প্রসঙ্গে আফগস্তািনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও কৌশলগতভাবে নির্ভরশীল প্রতিবেশী হচ্ছে পাকিস্তান। পাক-আফগান সীমান্তের দৈর্ঘ্য ১৫১০ মাইল। এছাড়া রয়েছে ভাষা, গোষ্ঠী, ধর্ম, ইতিহাস ও ঐতিহ্যের এক দীর্ঘকালীন সম্মিলন। আফগান উদ্বাস্তুতে অতি ভারাক্রান্ত পাকিস্তান। সঙ্গতভাবেই পাক-আফগান সম্পর্ক বাস্তব ও প্রাসঙ্গিক। অন্যদিকে প্রত্যক্ষ সীমান্ত না থাকলেও সোভিয়েত দখলদারির সময়কাল থেকেই ভারত সক্রিয় আফগানিস্তানে। ভারত সরকার বরাবরই কাশ্মীরে অব্যাহত পাকিস্তানি হস্তক্ষেপের অভিযোগ করে আসছে। এখন পাকিস্তান সরকার একই স্টাইলে পাকিস্তানের বেলুচিস্তানে ভারতীয় অন্তর্ঘাতের কথা বলছে। প্রত্যাশিত চুক্তির ফলে অবশেষে আফগানিস্তানে তালেবান সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে—এটি সকলেই বিশ্বাস করেন।

সাময়িকভাবে চুক্তিটি মার্কিন পক্ষ থেকে বাতিল ঘোষিত হলেও চূড়ান্তভাবে শান্তি প্রক্রিয়া বাস্তব কারণেই বাতিল হবে না। তবে শান্তির সম্ভাবনার পাশাপাশি রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের  দুশ্চিন্তা এবং হতাশাও রয়েছে। প্রথমত, মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করা হলে এই তাবেদার বিরাট জনগোষ্ঠী যে মহাবিপদে পড়বে সে সম্পর্কে আফগানিস্তানে সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত রায়ান ক্রোকার উদ্বেগ-উত্কণ্ঠা প্রকাশ করেছেন। তাই রায়ান প্রস্তাব করছেন ভবিষ্যত্ চুক্তিতে মার্কিন দালালদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিতে হবে। তিনি সতর্ক করেছেন, সেখানে যেন ভিয়েতনাম যুদ্ধের পুনরাবৃত্তি না ঘটে। সুতরাং চূড়ান্ত শান্তি প্রতিষ্ঠায় বিষয়টি সংকট সৃষ্টি করবে। দ্বিতীয়ত, মার্কিন বিরোধী সকল পক্ষকে তালেবানরা তাদের সম্পাদিত চুক্তি মেনে নেওয়াতে পারবে কি না তাও একটি বিরাট সমস্যা। কাবুলের হামলা তালেবানদের দ্বিধা বিভক্তির প্রকাশ ঘটিয়েছে। সাবেক মার্কিন কূটনীতিবিদ পিটার গলব্রেথ আল-জাজিরায় দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে এ বিষয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানে পক্ষ-বিপক্ষের বাইরে আরো পক্ষ রয়েছে। সেখানে মাদক ব্যবসায়ীরা রয়েছে। গোত্রভিত্তিক স্বার্থান্বেষী মহল রয়েছে। স্রেফ লুটপাট ও সুবিধাভোগী গ্রুপ রয়েছে। সুতরাং চুক্তি পরবর্তী আফগানিস্তানে শাস্তির অন্বেষা সহজ হবে না। তৃতীয়ত, ইরাক ও সিরিয়া থেকে বিতাড়িত আইএস যোদ্ধারা শান্তির প্রতি আর একটি বড়ো ধরনের হুমকি হিসেবে বিরাজ করবে। ইতিমধ্যে তারা দক্ষিণ-পশ্চিম আফগানিস্তানে সন্ত্রাসী তত্পরতা চালিয়েছে। আই এস এবং তালেবানদের মধ্যে দৃশ্যত ঐক্য থাকলেও প্রভাব বলয় নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা রয়েছে। চতুর্থত, যেহেতু শান্তিচুক্তিটি অবশেষে সত্যি যদি স্বাক্ষরিত হয়, তাহলে পাকিস্তানের স্বার্থের অনুকূলে যাবে, ভারত তা মেনে নেবে না—এটাই স্বাভাবিক। কাবুলে ভারতের গুণগ্রাহীরও অভাব নেই। কাবুল সরকারের ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং দেশটির সাবেক গোয়েন্দা প্রধান আমরুল্লা সালেহ এমন একজন ব্যক্তি। সম্প্রতি তাকে হত্যা করার জন্য বড়ো ধরনের আক্রমণ পরিচালিত হয়। তাছাড়া কাবুলে ভারতের বিনিয়োগ ও বাণিজ্য স্বার্থ রয়েছে। পরবর্তী আফগান সরকারের পক্ষে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ভারসাম্য বিধান কঠিন হবে। বিগত শান্তি প্রক্রিয়ায় ভারতকে তেমন জায়-জিজ্ঞাসা করা হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। পঞ্চমত, এ ধরনের পরিস্থিতিতে আবারও আফগানিস্তান হয়ে উঠতে পারে নানা মতের নানা পথের ইসলামি জঙ্গিদের আন্তর্জাতিক অভয়ারণ্য। সুতরাং আফগানিস্তানে অনেকেই আশঙ্কা করেন, আফগানিস্তানে মার্কিন দখলদারির অবসান ঘটলেও সংঘাতের অবসান ঘটবে না।

n লেখক :অধ্যাপক, সরকার ও রাজনীতি বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়