বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

ঢাকা শিশু হাসপাতালে ডাক্তাররা যথানিয়মে উপস্থিত হন না :দুদক

আপডেট : ১৯ জুন ২০১৯, ০০:০৪

ঢাকা শিশু হাসপাতালের ডাক্তাররা হাসপাতালে যথানিয়মে উপস্থিত হন না বলে প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বিভিন্ন অনিয়ম, ঘুষ ও হয়রানির অভিযোগে গতকাল মঙ্গলবার দুদকের এনফোর্সমেন্ট টিম অভিযান চালিয়ে এ প্রমাণ পায়। এছাড়া রাজউকের অনুমোদনবিহীন নকশা অনুসারে ভবন নির্মাণের অভিযোগে রাজধানীর আদাবরে, হয়রানির অভিযোগে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে, সরকারি চাল ক্রয়ে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে এবং কুষ্টিয়ায় দুইটি মহাসড়ক সংস্কারে অনিয়মের অভিযোগে গতকাল মঙ্গলবার দুদকের পৃথক টিম অভিযান চালায়।

দুদক সূত্র জানায়, দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক রাউফুল ইসলামের নেতৃত্বে গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে শিশু হাসপাতালে অভিযান চালায় দুদকের একটি এনফোর্সমেন্ট টিম। দুদক টিম প্রমাণ পায়, শিশু হাসপাতালের ডাক্তাররা হাসপাতালে যথানিয়মে উপস্থিত হন না। দুদক টিম মে-জুন মাসের বায়োমেট্রিক হাজিরা খতিয়ে দেখেন এবং একজন চিকিত্সক দীর্ঘদিন অনুপস্থিত রয়েছেন মর্মে জানতে পারে। এছাড়াও আরো কয়েক জন ডাক্তার সঠিকভাবে হাসপাতালে উপস্থিত হননি এরূপ প্রমাণও পান। এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণে হাসপাতালের পরিচালককে পরামর্শ দেয় দুদক টিম। দুদক টিম আরো জানতে পারে, হাসপাতালের ঊর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তার বিভিন্ন অনিয়মের বিষয়ে একটি প্রশাসনিক তদন্ত প্রতিবেদন ব্যবস্থাপনা বোর্ডের নিকট কিছু সুপারিশ দাখিল করা হয়েছিল; কিন্তু এখন পর্যন্ত সেই সুপারিশ অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। দুদক টিম অবিলম্বে ওই রিপোর্টের সুপারিশ অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণে হাসপাতালের পরিচালককে পরামর্শ প্রদান করে।

এদিকে রাজউকের অনুমোদনবিহীন নকশা অনুসারে ভবন নির্মাণের অভিযোগে দুদকের সহকারী পরিচালক মো. জাহিদ কালামের নেতৃত্বে রাজউক কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে একটি টিম রাজধানীর আদাবরে অভিযান চালিয়েছে। আদাবরের বায়তুল আমান হাউজিং সোসাইটির ৬ নম্বর রোডের একটি বাড়িতে অনুমোদিত নকশার বাইরে বেশ কিছু অংশ নির্মিত হয়েছে। আগামী ৫ জুলাইয়ের মধ্যে ভবনের বর্ধিতাংশ অপসারণে নোটিশ প্রদান করে রাজউক। এছাড়াও নির্মাণাধীন ওই ভবনের মালিক শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন এমএলএসএস বিপুল পরিমাণ অর্থের মালিক হয়ে অবৈধভাবে এ বাড়িটি নির্মাণ করেছেন এরূপ তথ্য পাওয়ায় তার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধান করার অনুমতি চেয়ে কমিশনে প্রতিবেদন উপস্থাপন করেছে এনফোর্সমেন্ট টিম।

এদিকে হয়রানির অভিযোগে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে অভিযান চালিয়েছে দুদক। দুদক টিম জানতে পারে, সাধারণ জনগণ যথাযথভাবে পাসপোর্টের ফরম পূরণ করে জমা দিতে গেলেও পাসপোর্ট অফিসের লোকজন তা জমা নেয় না, অথচ বিভিন্ন অজুহাতে হয়রানি করতে থাকেন; কিন্তু দালালের মাধ্যমে আবেদন করা হলে এ ধরনের হয়রানির শিকার হতে হয় না। দালালদের দৌরাত্ম্য এবং সাধারণ সেবা গ্রহীতাদের হয়রানি বন্ধে পাসপোর্ট কর্তৃপক্ষকে সুপারিশ করে দুদক টিম।

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে সরকারি চাল ক্রয়ে দুর্নীতি ও অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছে দুদক। দুইটি রাইস মিল বন্ধ থাকা সত্ত্বেও তাদের নিকট হতে চাল ক্রয় দেখিয়ে অনৈতিকভাবে অবৈধ অর্থ আয় করা হচ্ছে। এ অনিয়মের বিষয়ে অনুসন্ধানের সুপারিশ করে কমিশনে প্রতিবেদন উপস্থাপন করেছে এনফোর্সমেন্ট টিম। এছাড়া কুষ্টিয়ায় দুইটি মহাসড়কের বেশ কিছু জায়গায় সংস্কারে অনিয়মের অভিযোগে অভিযান পরিচালনা করেছে দুদক টিম। ওই সড়কে নির্মাণকাজে ব্যাপক অনিয়মের বিষয়ে প্রাথমিকভাবে অবহিত হয়ে অবিলম্বে সড়কের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ সংস্কারে সড়ক ও জনপথ বিভাগকে নির্দেশনা দেয় দুদক টিম।