সিদ্ধিরগঞ্জের জালকুড়ি গ্রামের কৃষকরা মৌসুমি শাকসবজি বিক্রি করেই স্বাবলম্বী। এ গ্রামে এখন শীতকালীন শাকসবজির চাষাবাদ শুরু করেছে কৃষকরা। জালকুড়ির কৃষিজমিতে শাকসবজি ছাড়া অন্য কিছুর আবাদ হয় না। জালকুড়ি এলাকার প্রতিটি কৃষক পরিবারই শাকসবজির আবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করছে। এ গ্রামটি শাকের গ্রাম হিসেবেই পরিচিত। এ গ্রামের শাক রাজধানী ঢাকার কাওরান বাজার, যাত্রাবাড়ী, শিমরাইল, কাঁচপুর সোনারগাঁওসহ আশপাশের বাজারে সরবরাহ হচ্ছে।
জানা যায়, জালকুড়ি এলাকার প্রায় ৫ হাজার বিঘা জমিতে লক্ষাধিক কৃষক শাক চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। জালকুড়ির দক্ষিণ পাড়া, উত্তর পাড়া, মধ্য পাড়া, মধুবাগ, তালতলা, মাহমুদপুর, মিজমিজি দক্ষিণ পাড়া, বাতান পাড়া এলাকায় কৃষকরা লাল শাক, পালং শাক, নাপা শাক, সরিষা শাক, লাউ শাক, পুঁই শাক, কলমি শাক, মুলা শাক, ডাঁটা শাক ও পাট শাকের চাষ করে থাকেন। সারা বছর ধরেই এখানে শাকসবজির আবাদ হয়। তবে শাকের চাষ বর্ষার চেয়ে শীতের সময় বেশি পরিমাণে হয়ে থাকে।
জালকুড়ি উত্তর পাড়া এলাকার কৃষক রোকসেদ আলী রসু (৬৫) ৪৫ বছর ধরে শাক চাষ করছেন। বছরে তিনি কয়েক লাখ টাকা আয় করেন। এ বছর নিজের জমি ছাড়াও কিছু জমি বাত্সরিক ভাড়া (রেহান) নিয়ে মোট ২০ বিঘা জমিতে শীতকালীন শাকের আবাদ করেছেন। তার পরিবারের দুুই ছেলেও তার সঙ্গে চাষাবাদের কাজ করছেন। চাষের জন্য মাসে ১৫ হাজার টাকা বেতন দিয়ে কর্মচারীও নিয়োগ করেছেন তিনি। ডিএনডির জলাবদ্ধতার কারণে চাষাবাদে বিঘ্ন ঘটে। এজন্য খেতের চারিদিকে মাটির উঁচু প্রাচীর তুলে সেচ মেশিনের সাহায্যে জমিতে পানি দিয়ে বীজ রোপণ করতে হয়েছে। এখন তার জমিতে কলমি, পালং, লাল, নাপা, পাট শাক, মুলা শাক, লাউসহ বিভিন্ন শাকের আবাদ হচ্ছে। এছাড়া জালকুড়ি এলাকার সালাউদ্দিন, নুর মোহাম্মদ, আসলাম, মহি মিয়া, সানোয়ার, রহিমসহ অনেকেই সবজি চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। কৃষক সালাউদ্দিন জানান, শাক বিক্রি করতে তার কোনো সমস্যা হয় না। প্রতিদিন সকালে পাইকাররা এসে জমি থেকেই শাক কিনে নিয়ে যান। ঢাকার যাত্রাবাড়ী, কাওরান বাজার, শিমরাইল, কাঁচপুর, সোনারগাঁওসহ আশপাশের বাজারের পাইকাররা ভিড় করেন শাক ক্রয় করতে।
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল মতিন জানান, জালকুড়ি গ্রামের কৃষকদের চাষাবাদের জন্য প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে থাকি। এছাড়াও উন্নতমানের বীজ সংরক্ষণ ও অধিক ফলনের জন্য কৃষকদের প্রয়োজনীয় কারিগরি প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।