শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

পটুয়াখালীতে ভাঙনের কবলে বেড়িবাঁধ, ৮ গ্রাম প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা

আপডেট : ১৫ অক্টোবর ২০১৯, ২১:৪২

নির্মল কুমার রক্ষিত, পটুয়াখালী প্রতিনিধি

পটুয়াখালী সদর উপজেলার কাজিরহাট ও বাঁশতলা এলাকার বন্যানিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধের প্রায় আধা কিলোমিটার সড়ক গুলিশাখালী নদীর ভাঙনের কবলে পড়েছে। এতে জোয়ারের পানিতে ছোটবিঘাই ও বড়বিঘাই এই দুই ইউনিয়নের আটটি গ্রাম প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এই বেড়িবাঁধের ওপর নির্মিত বিটুমিন-কারপেটিং সড়ক জরুরিভিত্তিতে সংস্কার করা না হলে তা নদীতে সম্পূর্ণ ধসে জেলা সদরের সঙ্গে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়তে পারে বড়বিঘাই ইউনিয়নের।

নব্বইয়ের দশকে পটুয়াখালী সদর উপজেলার গুলিশাখালী নদী পাড়ের ছোটবিঘাই ও বড়বিঘাই ইউনিয়ন প্লাবনের হাত থেকে রক্ষায় পানি উন্নয়ন বোর্ড নির্মাণ করে বন্যানিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধ। পরে যাতায়াতের সুবিধার্থে সেই বেড়িবাঁধের ওপর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর নির্মাণ করে বিটুমিন-কার্পেটিং সড়ক। সেই থেকে এলজিইডি কর্তৃপক্ষই ঐ বেড়িবাঁধ সড়ক রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করে আসছে। সড়কটি উপজেলা সদরের সঙ্গে চারটি ইউনিয়নের গুরুত্বপূর্ণ সরাসরি সংযোগ সড়ক। এই সড়কের ছোটবিঘাই ইউনিয়নের কাজির হাট সেতু এলাকা থেকে বড়বিঘাই ইউনিয়নের দুটি অংশ গুলিশাখালী নদীর ভাঙনে পড়েছে। এর মধ্যে কাজিরহাট সেতু এলাকায় ১০০ মিটার ও বাঁশতলা এলাকায় ৩৫০ মিটার মোট  ৪৫০ মিটার নদীভাঙনের কবলে রয়েছে।

ছোটবিঘাই ইউপি চেয়ারম্যান মো. আলতাফ হাওলাদার বলেন, তার ইউনিয়ন এলাকা নদীভাঙনকবলিত হয়ে পড়েছে। গুলিশাখালী নদী ভাঙনে কাজির হাট  ও বাঁশতলা এলাকায় বেড়িবাঁধ-রাস্তা বিলীন হচ্ছে। বিশেষ করে ৪৩/২এ পোল্ডারের বাঁধ ভাঙনকবলিত হওয়ায় হরতকিবাড়িয়া, বাঁশতলা, ভুতুমিয়া, ভাজনা, মাটিভাঙ্গা ও ফুলতলা গ্রাম এলাকা হুমকির মুখে রয়েছে। কোনো কোনো গ্রামের বাড়িঘর ইতিমধ্যে নদীতে বিলীন হয়েছে। জোয়ারের প্লাবনে ফসলের ক্ষতি হচ্ছে। বড়বিঘাই ইউপি চেয়ারম্যান ওয়াহিদুজ্জামান মজনু মোল্লা জানান, বেড়িবাঁধ-রাস্তা বিলীন হলে জেলা সদরের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে। কেওয়াবুনিয়া ও সিকবুনিয়া এই দুই গ্রামের ফসলহানির আশঙ্কা রয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড পটুয়াখালীর নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ কামরুজ্জামান ইত্তেফাক প্রতিনিধিকে বলেন, বর্তমান নির্দেশনা অনুযায়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্মিত বেড়িবাঁধের ওপর এলজিইডির নির্মাণ করা সড়ক বক্ষণাবেক্ষণ কিংবা পুনঃনির্মাণের দায়িত্বও এলজিইডি কর্তৃপক্ষের। পটুয়াখালী এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী তীর্থজিত্ রায় জানান, এ সড়ক নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ সরকার (জিওবি) ও জাপান ইন্টারন্যাশনাল করপোরেশন এজেন্সির (জাইকা) অর্থ  সহায়তায় এলজিইডি এই সড়কের নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করবে।

এই প্রকল্পের আওতায় নদী ভাঙনের ৪৫০ মিটার বাঁধ ও বাঁধের উপর সড়ক নির্মাণকার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।