বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

কাপাসিয়া সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ধারাবাহিক মূল্যায়ন

‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযুদ্ধকে জানি’

আপডেট : ১৬ নভেম্বর ২০১৯, ২০:৩৭

দেশব্যাপী সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের চলমান ধারাবাহিক মূল্যায়নের নাম ‘ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযুদ্ধকে জানি’ । এই ধারাবাহিক মূল্যায়নে দুইটি বিষয় অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে এক. এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন তৈরি, দুই. ভিডিও চিত্র ধারণ। সম্ভাব্য নমুনা প্রশ্নের আলোকে মুক্তিযোদ্ধার সাক্ষাত্কারের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্য, স্মৃতিচারণ, সাহসিকতার গল্প নিয়ে শিক্ষার্থীরা তৈরি করছে প্রতিবেদন এবং ভিডিও। আর এর মধ্যে বাছাই করা প্রতিবেদনগুলো দৈনিক ইত্তেফাক-এর শিক্ষা বিষয়ক পাতা অনুশীলন-এ প্রকাশিত হবে ধারাবাহিকভাবে।  আজ কাপাসিয়া সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের  শিক্ষার্থীদের নেয়া  মুক্তিযোদ্ধা মু.আব্দুল কবির মাস্টার এর সাক্ষাত্কার থেকে তৈরি করা প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হলো। প্রশ্নকর্তা, ভিডিও এবং প্রতিবেদন তৈরিতে ছিলো সপ্তম শ্রেণির  ১। অভিজিত্ দাস কাব্য ২। মো. জিহান নূর ৩। শাখাওয়াত হোসেন৪। মাহমুদুল হাসান ৫। ইলমা জাহান নীলা ৬। মনিরা আশরাফ ৭। তাবাসসুম অর্পিতা ৮। মোসা. জেরিন আক্তার ৯। সুমাইয়া আক্তার শিমু  ১০। রাবেয়া ইসলাম তাপসী। সাক্ষাত্কার গ্রহণে সহায়তা করেন বিদ্যালয়ের : রাজি উদ্দিন তুষার। সমন্বয় করেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক রিজিয়া পারভিন।

লিখিত প্রতিবেদন পাঠানোর ঠিকানা ই-মেইল: [email protected]  যোগাযোগ:০১৭১৪৭০৫৭২৭

কাপাসিয়া সরকারি পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠে সর্বপ্রথম মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণ শুরু হয়। এছাড়াও বেশ কিছু সাধারণ মানুষ ভারত থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে যোগদান করেন । কাপাসিয়ার গণমানুষের নেতা বঙ্গতাজ তাজউদ্দীন আহমেদের নেতৃত্বে কাপাসিয়ায় যুদ্ধ পরিচালিত হয় ।  আমি ১৯৬৬ সালের ৬ দফা আন্দোলনে প্রথম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে দেখেছিলাম এবং তার সাথে কুশল বিনিময় করেছিলাম । তাজউদ্দীন আহমেদ আমাকে শেখ মুজিবের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন । তখন আমার বয়স কম থাকায় কিছুটা লজ্জা আর ভয় পেয়েছিলাম।

 

বঙ্গবন্ধু তা বোঝতে পেরে আমাকে পিঠ চাপরে বলেন, ‘আরে যুবক সংকোচ কেন করছো’?

১৯৬৬ সালের ৬ দফা আন্দোলনের ৬টি দাবিই আমাদের মনে মক্তিযুদ্ধের চেতনা গড়ে তোলে। এই দাবিগুলোর মধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি দাবি ছিল, পূর্ব পাকিস্তানের আয়  পশ্চিম পাকিস্তানে পাচার বন্ধ হবে। কিন্তু পশ্চিম পাকিস্তান এ দাবিগুলো মেনে নেয়নি। আর এ আন্দোলনের মাধ্যমেই শুরু হয় ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান। যা পরবর্তীতে মক্তিযুদ্ধে প্রেরণা জোগায় । মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর বাঙালিরা দুর্বল হয়ে পড়লেও তাদের মধ্যকার প্রতিরোধ প্রবণতা ছিল দৃঢ়। এর মধ্যে সর্বপ্রথম বাঙালিদের মনে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চের ভাষণের মধ্য দিয়ে। যা মুক্তির সনদ নামে আখ্যায়িত। এবং স্বাধীনতার ঘোষণা পত্রের মাধ্যমে যুদ্ধ শুরু হয়।

প্রতিবেশী দেশের মধ্যে ভারত আমাদের আশ্রয়, প্রশিক্ষণ, হাতিয়ার, সৈন্যসহ মনোবল যোগান দিয়েছিল। এরপর মুক্তিযোদ্ধারা বীরের মতো যুদ্ধ করে জয়লাভ করে। মুক্তিযুদ্ধের সময় আমার বয়স ছিল ২৮ বছর। বঙ্গবন্ধুর সাহসিকতা এবং দেশপ্রেমই তাকে একজন বড় নেতাতে পরিণত করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত অবস্থায় ছাত্রলীগের বড় নেতা শেরে বাংলা এ.কে.ফজলুল হক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীসহ আরও অনেক নেতাকে একত্রিত করেন। নিজেদের দাবী-দাওয়া নিয়ে তিনি ঝড় তুলেন এবং সেখানে সকলের মন কেড়ে নেন। তিনি নিজের সংগ্রামী চেতনার পরিচয় দেন। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে তিনি ঘোষণা দেন ‘যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়। এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম”। আমার প্রথম সাক্ষাতে বঙ্গবন্ধু আমার সাথে করমর্দন করেছিলেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বাঙালিদের জীবনের সবচেয়ে শোকের দিন। এদিন বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। এদিনটি বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের মাধ্যমে বাংলাদেশের জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালন করা হয়।