শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবন কোন প্রাণী ভৌগোলিক অঞ্চলের অন্তর্ভূক্ত?

আপডেট : ১৬ নভেম্বর ২০১৯, ২০:৩৯

জীববিজ্ঞান প্রথমপত্র

অলোক কুমার মিস্ত্রী প্রভাষক

সরকারি বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মহিলা কলেজ, পিরোজপুর

প্রিয় শিক্ষার্থীরা, আজ জীববিজ্ঞান বিষয়ের  জীবের পরিবেশ, বিস্তার ও সংরক্ষণ-বিষয়ের ওপর সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর আলোচনা করা হলো,

সৃজনশীল প্রশ্ন ঃ

(ক) ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবন কোন প্রাণী  ভৌগোলিক অঞ্চলের অন্তর্ভূক্ত?                              ১

(খ) বায়োমাস পিরামিড বলতে কী বোঝ?          ২

(গ) চিত্রে প্রদর্শিত অভিযোজিত বৈশিষ্ট্য দুটি যে বনের উদ্ভিদে পরিলক্ষিত হয় সেই বনের

মৃত্তিকার বৈশিষ্ট্যসহ তিনটি উদ্ভিদের বৈজ্ঞানিক নাম লিখ।                                                        ৩

(ঘ) চিত্রে প্রদর্শিত ক ও খ অভিযোজিত বৈশিষ্ট্যের কারণ বিশ্লে­ষণ কর।                                   ৪

সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর :

(ক) উত্তর : ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবন ওরিয়েন্টাল প্রাণী ভৌগোলিক অঞ্চলের অন্তর্ভূক্ত।

 

(খ) বায়োমাস পিরামিড : একটি বাস্তুতন্ত্রে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে খাদ্যচক্রের বিভিন্ন পুষ্টিস্তরে অবস্থিত জীবের শুষ্ক ওজনের উপর ভিত্তি করে যে খাদ্য পিরামিড গড়ে উঠে তাকে বায়োমাস-এর পিরামিড বলে। এ পিরামিডে নিজ থেকে উপরের পুষ্টিস্তরে জীবভর ক্রমশ: কমতে থাকে। কিন্তু পরজীবীদের বেলায় বায়োমাস বা জীবভরের পিরামিড বিপরীতমুখী হয়।

(গ) উত্তর : চিত্রে প্রদর্শিত অভিযোজিত বৈশিষ্ট্য দুটি হলো শ্বাসমূল ও জরায়ু অঙ্কুরোদগম, যা ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চলের উদ্ভিদের ক্ষেত্রে পরিলক্ষিত হয়। ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চলের মৃত্তিকার বৈশিষ্ট্যসহ তিনটি উদ্ভিদের নাম নিম্নে তুলে ধরা হলো:-

ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চলের মৃত্তিকার বৈশিষ্ট্য :

সুন্দরবনের নদ-নদীতে জোয়ার-ভাটা থাকায় এখানকার মৃত্তিকা পললসমৃদ্ধ। চিরহরিত্ বনাঞ্চল তৈরিতে যা ভূমিকা রাখে।

সমুদ্রের নিকটবর্তী হওয়ায় এ বনাঞ্চলের মাটিতে প্রচুর লবণ থাকে। এ কারণে এখানকার উদ্ভিদের কাণ্ড হতে ঠেসমূল বের হয়ে উদ্ভিদকে মাটির সাথে দৃঢ়ভাবে আটকে রেখে মাটি ক্ষয় রোধ করে।

ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চলের মৃত্তিকা লবণাক্ত, কর্দমাক্ত ও জলাবদ্ধ । এখানেই উদ্ভিদের বীজের জরায়ুজ অঙ্কুরোদগম পরিলক্ষিত হয়।

এখানকার মাটিতে পর্যাপ্ত  অভাব থাকায় মূল হতে খাড়াভাবে শ্বাসমূল বা নিউমেটাফোর মাটির উপরে উঠে আসে।

উদ্ভিদের নাম :                   বৈজ্ঞানিক নাম :   

সুন্দরী                        Heritiera fomes   

কেওড়া                       Sonneratia apetala            

গোলপাতা                   Nipa fruticans     

 

(ঘ) উত্তর ঃ ক-প্রদর্শিত বৈশিষ্ট্যটি হলো শ্বাসমূল এবং খ প্রদর্শিত বৈশিষ্ট্যটি হলো জরায়ুজ অঙ্কুরোদগম। এ ধরনের অভিযোজিত বৈশিষ্ট্যের কারণ নিম্নে তুলে ধরা হলো-

এ অঞ্চলের মাটি লবণাক্ত, কর্দমাক্ত ও জলাবদ্ধ। এছাড়াও প্রাত্যহিক জোয়ার-ভাটা একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ পরিবেশীয় নিয়ামক। এগুলো প্রত্যেকটিই সাধারণ গাছপালার জন্য প্রতিকূল। এ প্রতিকূল পরিবেশে বেঁচে থাকার জন্য শ্বাসমূল এখানকার গাছপালার জন্য একটি অন্যতম অভিযোজনিক বৈশিষ্ট্য। মাটিতে পর্যাপ্ত  অভাব থাকায় অনেক গাছের মাটির নিচের সমান্তরালভাবে বিস্তৃত মূল হতে খাড়াভাবে শ্বাসমূল বা নিউমেটাফোর উপরে উঠে আসে। শ্বাসমূলে বায়ুছিদ্র এবং ভিতরে বায়ুকুঠুরী থাকে। এরা গ্যাসীয় আদান-প্রদানে সাহায্য করে। এজন্যই শ্বাসমূল ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চলের এক অনন্য বৈশিষ্ট্য। জোয়ার-ভাটার টানে বীজ ভেসে যায় বলে কিছু কিছু উদ্ভিদে জরায়ুজ অঙ্কুরোদগম দেখা যায়। এর ফলে গাছে থাকা অবস্থায় বীজের অঙ্করোদগম হয় এবং মূল বড় ও ভারী হলে ফলটি মাটিতে পড়ে। বোরা, খলসি, হারগোজা প্রভৃতি উদ্ভিদে জরায়ুজ অঙ্কুরোদগম হয়ে থাকে। অন্যদিকে সুন্দরী ও গেওয়া জাতীয় উদ্ভিদে জরায়ুজ অঙ্করোদগম পরিলক্ষিত হয় না।