মিহির রঞ্জন তালুকদার
প্রভাষক- বালাগঞ্জ সরকারি কলেজ, সিলেট
ন্যানো টেকনোলজি
গত কয়েক মাস আগে সিলেটে ছোট একটি ভূমিকম্প হয়েছিল। সেদিন আমার ছোট বোন তাড়াহুড়া করে সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামতে গিয়ে পায়ের একটি আঙ্গুল ভেঙ্গে ফেলে। মেডিকেলে নিয়ে গেলে ডাক্তার হাঁটু থেকে পা পর্যন্ত প্লাস্টার করে দেয়।
এখন স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন জাগে ভেঙ্গেছে পায়ের একটি আঙ্গুল কিন্তু প্লাস্টার করতে হয়েছে সমস্ত পা। যদি শুধু ভাঙ্গা জায়গায় প্লাস্টার বা চিকিত্সার ব্যবস্থা থাকতো কেমন হতো? তবে হ্যা, কিছু কিছু ক্ষেত্রে চিকিত্সা বিজ্ঞানেও ন্যানো টেকনোলজির ব্যবহারও শুরু করার চিন্তা রয়েছে। যেমন পূর্বে ক্যান্সারের চিকিত্সায় যে রেডিয়েশন দেওয়া হতো তাতে আক্রান্ত কোষ ছাড়াও আশেপাশের ভালো কোষও ক্ষতিগ্রস্ত হতো। কিন্তু ন্যানো প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারলে শুধু ঐ আক্রান্ত কোষেই রেডিয়েশন দেয়া সম্ভব হবে। ন্যানোটেকনোলজি ব্যবহার করে কৃত্রিম অঙ্গ-প্রতঙ্গ তৈরি করাও সম্ভব। ঔষধ তৈরির আনবিক গঠনে ন্যানোটেকনোলজি ব্যবহার করে স্মার্ট ড্রাগ তৈরি করা হচ্ছে, ফলে রোগাক্রান্ত কোষে সরাসরি ঔষধ প্রয়োগ করা যায় এবং দ্রুত কাজ শুরু করে।
কম্পিউটারের বিভিন্ন হার্ডওয়ার থেকে শুরু করে ইলেক্ট্রনিক্স যন্ত্রপাতিতে বর্তমানে ন্যানোটেকনোলজি ব্যবহূত হচ্ছে। খাদ্যজাত দ্রব্য প্যাকেজিং এর সিলভার তৈরির কাজে ন্যানোটেকনোলজির ব্যবহার হচ্ছে ফলে খাদ্য দ্রব্য দীর্ঘদিন ভালো থাকে। তাছাড়া খেলাধুলার সামগ্রীতে যেমন- খেলাধুলার জুতা, মোজা, ট্রাউজার, বলের স্থায়িত্ব বৃদ্ধির জন্য ন্যানোটেকনোলজি ব্যবহূত হয়।
ন্যানোটেকনোলজি নিয়ে গবেষণা এবং এর প্রয়োগ অনেক ব্যয়সাপেক্ষ। বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান বা কলকারখানায় ব্যবহার করা হলে প্রতিষ্ঠান কম জনবলেই কাজ করতে পারবে ফলে অনেকই কর্মহীন হয়ে যাবে। খাদ্য শিল্পে অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে মস্তিষ্ক এবং ফুসফুসের ক্ষতি হতে পারে।
ন্যানো প্রযুক্তি ব্যবহার করে যুদ্ধাস্ত্র তৈরি করা হলে পৃথিবীর ভয়াবহতার আশঙ্কা দেখা দেবে।