মিহির রঞ্জন তালুকদার, প্রভাষক
বালাগঞ্জ সরকারি কলেজ, সিলেট
ভার্চুয়াল রিয়েলিটি
আমাদের বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য ভার্চুয়াল রিয়েলিটির প্রভাব অপরিসীম। বিভিন্ন পেশাগত দক্ষতা অর্জনে, ঝুঁকিপূর্ণ পেশার জন্য বাস্তবসম্মত ও নিরাপদ প্রশিক্ষণে ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ব্যাপকভাবে প্রচলন শুরু হয়েছে। চিকিত্সা ক্ষেত্রে, গাড়ি বা বিমান চালনা, সামরিক যুদ্ধ প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রগুলোতে বিভিন্ন ধরনের ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে। চিকিত্সা ক্ষেত্রে যদি কোনো ইন্টার্ন চিকিত্সক পরীক্ষামূলকভাবে কোনো রোগীর অপারেশন করতে যায় তবে রোগীর মৃত্যুও হতে পারে। সরাসরি বিমান কিংবা গাড়ী চালোনের প্রশিক্ষণে দুর্ঘটনা ঘটাতে পারে কিন্তু ভার্চুয়াল রিয়েলিটির মাধ্যমে এ কাজগুলো করলে প্রাণ নাশের আশঙ্কা থাকে না। আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে ভার্চুয়াল রিয়েলিটির এ ধরনের অনেক ব্যবহার রয়েছে যেমন- শিক্ষাক্ষেত্রে, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায়, সেনাবাহিনীতে যুদ্ধেও প্রশিক্ষণ, বিভিন্ন ধরনের কম্পিউটার গেমস তৈরি, বিভিন্ন ধরনের চলচ্চিত্র তৈরিতে এর ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে। তোমাদের বইয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত দেওয়া রয়েছে তোমরা অবশ্যই পড়বে।
ভার্চুয়াল রিয়েলিটির এতো উপকারের পরও কিছু নেতিবাচক প্রভাব রয়েছে। ভার্চুয়াল রিয়েলিটির প্রয়োজনীয় হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যার অত্যন্ত ব্যয়বহুল। আমাদের দেশে একমাত্র ঢাকায় ‘বঙ্গবন্ধু নভো থিয়েটার’ ভার্চুয়াল রিয়েলিটির কিছু অনুভব পাওয়া যায়। তোমরা একবার সময় করে বঙ্গবন্ধু নভো থিয়েটারে যাবে। ভার্চুয়াল রিয়েলিটির কী তা অনুভব করতে পারবে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে এর মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহারে মানুষের দৃষ্টিশক্তি ও শ্রবণশক্তির ক্ষতিসাধন করে। কল্পনার রাজ্যে ইচ্ছেমতো বিচরণ করার একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি। ফলে দীর্ঘ সময় ধরে কল্পনার জগতে থাকতে থাকতে মানুষ বাস্তবতা থেকে আস্তে আস্তে দূরে সরে যাবে। ফলে পৃথিবীতে একটি ভয়াবহ বিপর্যয়ের আশঙ্কাও রয়েছে।
ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ব্যাপক প্রসারের ফলে মানুষের মধ্যে পারস্পরিক ভাবের আদান-প্রদান কমে যাবে। মানুষের মধ্যে মনুষ্যত্বহীনতা চলে আসবে। যা মানব সমাজের জন্য হুমকি হয়ে উঠবে।