শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

বিমান হতে পারে অন্যতম লাভজনক সরকারি প্রতিষ্ঠান

আপডেট : ২৪ মে ২০১৯, ২১:১৮

অনল চৌধুরী

 

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ছাড়া পৃথিবীর কোনো দেশের রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী বিমান সংস্থা লোকসান দেয় না। মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্স, এমিরেটস, ইতিহাদ, এরোফ্লত, গড়ুর-এর মতো পৃথিবীর সেরা বিমান সংস্থার প্রতিটিই রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন। একমাত্র বাংলাদেশ বিমান প্রতিবছর হাজার কোটি টাকা লোকসান দিচ্ছে শুধুমাত্র দুর্নীতির কারণে।

দুদকের তদন্তে বিমানের টিকেট বিক্রি, বিমানচালক নিয়োগ, বিমান ক্রয়, কার্গো, ক্যাটারিং ইত্যাদিসহ আরো অসংখ্য খাতে দুর্নীতির অনুসন্ধান চলছে। যে দেশের এক কোটির বেশি মানুষ বিদেশে থাকে এবং প্রতি মাসে কয়েক লাখ যাত্রী বিমানে করে দেশ-বিদেশ যায়, সে দেশের জাতীয় বিমান সংস্থার কোনোভাবেই লোকসান দেওয়ার কথা নয়। বাংলাদেশে ফ্লাইট পরিচালনাকারী কোনো বেসরকারি বিমান সংস্থা লোকসান দিচ্ছে না বরং নতুন নতুন গন্তব্যে তাদের বিমান চালাচ্ছে। আর ইংল্যান্ড-আমেরিকা-ইউরোপের বিভিন্ন গন্তব্যে বাংলাদেশি যাত্রী পরিবহন করে কোটি টাকার ব্যবসা করে যাচ্ছে বিদেশি বিমান সংস্থাগুলি। এমনকি এদের ব্যবসার সুবিধা দেওয়ার জন্য ২০১৪ সাল থেকে বিমানের দিল্লি­ রুট বন্ধ করে দেওয়া হয় যেটা ছিল বিমানের অন্যতম লাভজনক একটা গন্তব্য।

প্রায় ৭ লাখ বাংলাদেশি বসবাসকারী আমেরিকায় বিমান কোনো ফ্লাইট পরিচালনা করে না। ইউরোপের ইতালি, ফ্রান্স, জার্মানি, সুইডেনে প্রচুর বাংলাদেশি বসবাস করলেও লন্ডন ছাড়া ইউরোপের কোনো দেশেই বিমান যায় না। অথচ এসব দেশে যাতায়াতকারীরা সমান বা কিছুটা কম ভাড়া পেলে নিজেদের বিমান সংস্থা বাদ দিয়ে বিদেশি বিমানে উঠবেন না।

বিমানকে লাভজনক ও আন্তর্জাতিকভাবে জনপ্রিয় বিমান সংস্থায় পরিণত করতে হলে দুর্নীতি দমনের সঙ্গে সঙ্গে যেসব গন্তব্যে প্রতি সপ্তাহে অন্তত ১০০০ যাত্রী যায়, সেগুলিতে ফ্লাইট পরিচালনা করতে হবে। নতুন নতুন বিমান কিনতে হবে। কারণ কোনো ব্যবসা লাভজনক হলে সেটাতে বিনিয়োগ করাটাই যুক্তিসঙ্গত। আভ্যন্তরীণ বিভিন্ন নতুন রুটেও বিমান পরিচালনা করা প্রয়োজন। যানজটের কারণে সময় ও শ্রম বাঁচানোর জন্য অনেকেই বিমান ভ্রমণে আগ্রহী।

বিমান অত্যন্ত লাভজনক একটা সংস্থা যাকে দুর্নীতির মাধ্যমে সুকৌশলে লোকসানি করে রাখা হয়েছে। ২০১৮-র এপ্রিলের তুলনায় ২০১৯-এর এপ্রিলে বিমানের টিকেট বিক্রি থেকে আয় ১৪৩ কোটি টাকা বেশি হয়েছে। এ থেকেই বোঝা যায়—বিমানে কী পরিমাণ দুর্নীতি হয় এবং প্রতিষ্ঠানটা বছরে হাজার কোটি টাকা আয় করতে পারে।

বিমানের শেয়ার ছাড়া হলে শেয়ারবাজার চাঙ্গা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিনিয়োগকারীরাও লাভবান হতে পারেন। সুতরাং এই বিষয়গুলি বিবেচনা করা প্রয়োজন।

ঢাকা