শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

যানবাহন চালকদের সাইকোলোজিক্যাল টেস্ট

আপডেট : ০৭ জুন ২০১৯, ২২:০৮

বোরহান বিশ্বাস

 

ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালের নার্স ছিলেন শাহিনুর আক্তার তানিয়া। গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে থাকা বাবার কাছে যাচ্ছিলেন তিনি। যে বাসটিতে অবস্থান করছিলেন তানিয়া, তারই চালক ও সহযোগীদের দ্বারা গণধর্ষণ ও হত্যার শিকার হন তিনি। আদালতের কাছে অপরাধীরা তাদের অপরাধের কথা স্বীকার করেছে।

এখানে দুটি বিষয় লক্ষণীয়। প্রথমত, মানবাধিকার লঙ্ঘন করে একজন নারীকে গণধর্ষণ করার মতো জঘন্য অপকর্ম, দ্বিতীয়ত, কৃত অপকর্মটির পর তাকে হত্যা করা। দুটি ঘটনার জন্যই পৃথক পৃথক আইন দেশে বিদ্যমান আছে। তারপরও কেন এই গণধর্ষণ ও হত্যা?  কী এমন ক্ষমতা ঐ গাড়ির চালক ও তার সহযোগীদের?     

বিসিএস পরীক্ষায় সাইকোলোজিক্যাল টেস্ট বলে একটি পরীক্ষা আছে। লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ সব পরীক্ষার্থীকেই ঐ মানসিক যোগ্যতার পরীক্ষায় অবতীর্ণ হতে হয়। সেটিতে উত্তীর্ণ হওয়ার পরই কাউকে চূড়ান্তভাবে নিয়োগ দেওয়া হয়। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতেও নিয়োগপূর্ব ‘সাইকোলজিক্যাল অ্যান্ড পারসোনালিটি টেস্ট’ পরীক্ষা দিতে হয়।

কিন্তু বাংলাদেশের সব নিয়োগের ক্ষেত্রেই কি এমনটি করা হয়? বিশেষত যানবাহন চালনার ক্ষেত্রে গণপরিহন বাসের কথাই বলা যেতে পারে। যে মানুষটির হাতে স্টিয়ারিং, অর্থাত্ যে চালকের নেতৃত্বে তার পেছনে বসা যাত্রীরা সুদূর গন্তব্যে পৌঁছবেন নির্ভাবনায়। যে কাজটি দ্বারা ঐ চালক তাঁর জীবিকা নির্বাহ করেন, যাত্রীদের সঙ্গে তার ব্যবহার নিশ্চয়ই মার্জিত হওয়া বাঞ্ছনীয়। কিন্তু সেটি না করে কখনো কখনো তারা কী করে ঐ সম্মানিত যাত্রীর সঙ্গে চরম দুর্ব্যবহার করতে পারেন! গণধর্ষণের মতো পৈশাচিক ঘটনা ঘটাতে পারেন! প্রাণসংহারও করতে পারেন!

সমীক্ষায় দেখা গেছে, গণধর্ষণের ক্ষেত্রে মদ এবং নেশাজাতীয় দ্রব্যের প্রভাব থাকে বেশি। দিনের তুলনায় রাতে এ ধরনের ঘটনা বেশি ঘটে। মাদকদ্রব্যের ব্যবহারই এ ধরনের আক্রমণে বড় ধরনের ভূমিকা রাখে বলে বিভিন্ন সমীক্ষায় উঠে এসেছে। তাই চালক ও সহযোগীদের হাতে লাইসেন্স তুলে দেওয়ার আগে রাজপথে তাদের গাড়ির স্টিয়ারিং ধরার আগে সততা ও মানসিক দৃঢ়তার পরীক্ষা নেওয়া বাধ্যতামূলক করা উচিত। পাশাপাশি বিচারের দীর্ঘসূত্রতা কমিয়ে এনে কম সময়ের মধ্যে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা উচিত।

ঢাকা