বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

ডেঙ্গু :প্রচারণায় চাই শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ততা

আপডেট : ০২ আগস্ট ২০১৯, ২১:৩৯

মহামারী আকারে ছড়িয়ে পরা ডেঙ্গু ভোগাচ্ছে দেশকে, এই পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছেই। দেশের সবক’টি  জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের চাপে হাসপাতালগুলো, স্বজনদের উত্কণ্ঠা, রক্তের সংস্থান সর্বোপরি সর্বোচ্চ চিকিত্সাসেবা প্রদানে সদা প্রস্তুত স্বাস্থ্য বিভাগের চলমান কার্যক্রমই বলে দিচ্ছে কতটা ভয়াবহ হয়ে উঠেছে পরিস্থিতি। এটা ঠিক, সরকারি পর্যায়ে ডেঙ্গুবাহী অ্যাডিস মশা নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া সত্ত্বেও সার্বিক ডেঙ্গু পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। আর এর কারণ স্বভাবতই সমন্বয়হীনতা, আর সকলের সমন্বিত উদ্যোগের অভাব।

আর এই উদ্যোগকে কার্যকর করতে অগণিত মানুষের অংশগ্রহণ প্রয়োজন। সমীক্ষা বলছে, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ১৬ থেকে ৩০ বছর বয়সী মানুষেরা রয়েছে সবচেয়ে ঝুঁকির মধ্যে। এরই মধ্যে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর যে পরিসংখ্যান বেরিয়েছে, তাতেও এই বয়সী মানুষের সংখ্যাই বেশি। আর তাই অ্যাডিস মশার প্রজনন রোধে বিদ্যালয়গামী কিশোর-কিশোরীদের সম্পৃক্ত করার সময় এসেছে। স্কুল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দিনের একটা বড় সময় বিদ্যালয়ে অবস্থান করে। অথচ দুঃখজনক সত্যি হলো এই বিশাল শ্রেণি ভয়াবহ এই মহামারী প্রতিরোধে সচেতন করা এবং সচেতনতামূলক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করানোর ক্ষেত্রে উদ্যোগ লক্ষ করা যাচ্ছে না। যদি নিজ নিজ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ ও এর চারপাশের জায়গা পরিচ্ছন্ন রাখা যায়, যদি শিক্ষার্থীরা নিজেদের ঘরবাড়ি ও তার চারপাশ পরিষ্কার করার উদ্যোগ নেয়, নির্দিষ্ট জায়গায় ময়লা ফেলা, পলিথিন বা অন্য কোনো বর্জ্য ফেলে ড্রেন, পরিত্যক্ত জলাশয় কিংবা কোনো ঢালু স্থানের জমে থাকা জলকে মশার উত্পত্তিস্থল হিসেবে তৈরি না করে এবং এ ব্যাপারে অন্যদের সহায়তা করে, সচেতন করে তোলে তাহলেই এটির সমাধান হয়ে যাই অনেকাংশেই।

বিশেষভাবে উল্লেখ্য,  ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সেবা ও যত্নে করণীয় সম্পর্কে অবহিত করতে দেশের সকল সরকারি ও বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়োজিত বিশেষ টিম বিদ্যালয়ভিত্তিক প্রচারণা চালাতে পারে এবং তা যত শীঘ্রই সম্ভব, ততই ফলপ্রসূ হবে। নিঃসন্দেহে, এটি শিশুদের  পাশাপাশি বড়োদের সচেতন করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। কারণ একটি বার্তা যত বেশি প্রচার—প্রচারণায় যায়, তত বেশি এর কার্যকারিতা প্রকাশ পায়। অন্যদিকে, আমাদের অভিভাবকদের মনে রাখতে হবে শিশুরা বাঁচে কর্ম উদ্দীপনায়, পরোপকারী মানসিকতা নিয়ে। বন্ধুর অসুস্থতা, তার চিকিত্সার জন্য অর্থ সংগ্রহ,  নিজেদের টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে অনুদান এসব কিছুই শিশুদের কাছ থেকে আসে। চৌদ্দ থেকে আঠারো কিংবা তার চেয়েও বেশি বয়সীদের এই কাজে স্বতঃপ্রণোদিত হবার মানসিকতা তৈরি করে দিতে হবে আমাদেরই। সকলের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা ডেঙ্গু মহামারীকে জয় করতে আমাদের সাহায্য করবে, এই প্রত্যাশা।

ঢাকা