শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

শ্বশুর ও দেবর গ্রেফতার, রিমান্ড আবেদন

আপডেট : ২১ জানুয়ারি ২০২০, ০১:০৫

মুন্সীগঞ্জের রামপাল কলেজের ছাত্রী লাবনী আক্তার আঁখিকে অবরুদ্ধ রেখে নির্মম নির্যাতনের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় তার শ্বশুর ও দেবর গ্রেফতার হয়েছেন। সোমবার সকালে হাতিমারা গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে শ্বশুর রুহুল আমিন ভূইয়া (৫৫) ও দেবর রিফাত ভূইয়া (২১) গ্রেফতার হন। পরে সাত দিন করে রিমান্ডের আবেদন করে দুজনকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

এর আগে গতকাল সোমবার সকালে এই অভিযোগে মুন্সীগঞ্জ সদর থানায় এ-সংক্রান্ত মামলা হয়। যৌতুকের জন্য মারপিট করে গুরুতর জখম এবং জখমে সহায়তার অপরাধে মামলাটি দায়ের করা হয়। মামলার বাদী আঁখির পিতা আব্দুর রহিম। এতে চার জনকে আসামি করা হয়েছে। মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ওসি আনিচুর রহমান জানান, এর মধ্যে প্রধান আসামি আঁখির স্বামী হূদয় ভূইয়া (২৪) ও ৩ নম্বর আসামি মাহফুজা বেগমকে (৫০) পুলিশ গ্রেফতারে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। মামলার পর থেকে তারা পলাতক।

আঁখির স্বজনদের অভিযোগ, গত বছর তারা প্রেম করে বিয়ে করেন। আখির শ্বশুর এ বিয়ে মেনে নিতে পারেননি। একপর্যায়ে স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও দেবর একসঙ্গে নির্যাতন চালান আঁখির ওপর। তাকে একদিন মারতে মারতে বেহুশ করে ফেলে এবং বাম চোখের ওপরে ক্ষত করে ফেলেন। সেখানে প্রায় ১০টি সেলাই দেওয়া হয়েছিল। আরেক দিন জোর করে ফিনাইল খাইয়ে দেওয়া হয়। এতে তার খাদ্যনালি নষ্ট হয়ে যায়। এ ঘটনার পর শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাকে সদর হাসপাতালে আনার পর অবস্থার অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিক্যালে পাঠানোর সুপারিশ করা হয়। অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকলে তাকে সেখানে ফেলে শ্বশুরবাড়ির লোকেরা পালিয়ে আসেন। সেখানে নিঃসঙ্গভাবে সপ্তাহখানেক কাটানোর পর পাশের সিটের রোগীর আত্মীয়ের মাধ্যমে আঁখি তার বাবা ও মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তারপর তার বাবা-মা গিয়ে ডাক্তারের পরামর্শে খাদ্যনালির অপারেশন করান। এরপর আবার তাকে মুন্সীগঞ্জ সদর হাসপাতালে এনে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে মুন্সীগঞ্জ সদর হাসপাতালের ৯ নম্বর বেডে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন তিনি।

সিভিল সার্জন ডা. আবুল কালাম আজাদ জানান, এখন আঁখি চোখে দেখতে পারছেন না। এ বিষয়ে চক্ষু বিশেষজ্ঞের মতামত লাগবে। মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে চোখের কোনো ডাক্তার নেই। বাইরে নিয়ে ডাক্তার দেখানের প্রক্রিয়া চলছে।