শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

পাকিস্তানে বিমান বিধ্বস্ত হয়ে নিহত অন্তত ৬০

আপডেট : ২৩ মে ২০২০, ০০:৩৮

পাকিস্তানের করাচিতে একটি যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্ত হয়ে অন্তত ৬০ জন নিহত হয়েছেন। পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের (পিআইএ) বিমান এ-৩২০ লাহোর থেকে করাচি যাচ্ছিল। বিমানটিতে ৯৯ আরোহী ছিলেন। এদের মধ্যে দুই জনের জীবিত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে হতাহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। খবর বিবিসি ও ডনের।

দুর্ঘটনার পর সিন্ধু প্রদেশের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন যে, কমপক্ষে ৬০ জন নিহত হয়েছেন। কিন্তু অনেক হতাহতের আশঙ্কা করা হচ্ছে। যেখানে বিধ্বস্ত হয়েছে সেখানের বাসিন্দারাও প্রাণ হারাতে পারেন। ফ্লাইট পিকে ৮৩০৩ লাহোর থেকে যাত্রা শুরু করে পাকিস্তানের অন্যতম ব্যস্ত করাচির জিন্নাহ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাচ্ছিল। স্থানীয় সময় বেলা পৌনে ৩টায় বিমানবন্দরে অবতরণের কথা ছিল বিমানটির। কিন্তু প্রায় এক মিনিটের দূরত্বে থাকাবস্থায় বিমানবন্দরের দুই মাইল উত্তর-পূর্বে করাচির মডেল কলোনি নামক একটি আবাসিক এলাকায় বিমানটি ভেঙে পড়ে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করা ছবিতে দেখা যাচ্ছে—করাচির যে আবাসিক এলাকায় বিমানটি ভেঙে পড়েছে সেখান থেকে ধোঁয়ার কুণ্ডলি উঠছে।

এক জন প্রত্যক্ষদর্শী মোহাম্মদ উজায়ের বিবিসি উর্দু বিভাগকে জানিয়েছেন বিকট আওয়াজ শুনে তিনি বাইরে বেরিয়ে আসেন। প্রায় চারটি বাড়ি পুরো বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। প্রচুর ধোঁয়া আর আগুন জ্বলছে। আরেক জন প্রত্যক্ষদর্শী ড. কানওয়াল নাজিম বলেন, তিনি মানুষের চিত্কার শুনতে পেয়েছিলেন।

পাকিস্তান সেনাবাহিনী বলেছে, তাদের দ্রুত মোকাবিলা বাহিনীর সৈন্যরা দুর্ঘটনাস্থলে উদ্ধার কাজে সহায়তা করেছে। স্থানীয় হাসপাতালগুলোয় জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। পিআইএর প্রধান নির্বাহী এয়ার ভাইস মার্শাল আরশাদ মালিক বলছেন, পাইলট ট্রাফিক কন্ট্রোলকে জানিয়েছিলেন যে, বিমানে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা যাচ্ছে। পাকিস্তানের দুনিয়া নিউজ সংবাদ সংস্থা ট্রাফিক কন্ট্রোলের সঙ্গে পাইলটের কথোপকথনের রেকর্ড হাতে পেয়েছে এবং লাইভএটিসি.নেট নামে একটি মনিটরিং ওয়েবসাইটে সেটা পোস্ট করেছে। এই কথোপকথনে পাইলটকে বলতে শোনা গেছে, তারা দুটি ইঞ্জিন হারিয়েছে। কয়েক সেকেন্ড পরে তাকে বলতে শোনা যায় মে-ডে, মে-ডে, মে-ডে। এরপর সব সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। দুর্ঘটনার কারণ সম্পর্কে এখনো নিশ্চিতভাবে কিছু জানা যায়নি। তবে কারিগরি ত্রুটিকেই গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন, তিনি দুর্ঘটনার খবরে মর্মাহত। অবিলম্বে ঘটনার তদন্তের প্রতিশ্রুতি তিনি দিয়েছেন।

পাকিস্তানের বিমান নিরাপত্তা রেকর্ড

২০১০ সালে বেসরকারি বিমান সংস্থা এয়ারবস্নু পরিচালিত একটি বিমান বিধ্বস্ত হয় ইসলামাবাদের কাছে। ঐ দুর্ঘটনায় ১৫২ জন যাত্রীর সবাই মারা যায়। সেটি ছিল পাকিস্তানের বিমান চলাচলের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনা। এরপর ২০১২ সালে ভোজা এয়ার পরিচালিত বোয়িং ৭৩৭-২০০ রাওয়ালপিন্ডিতে বিধ্বস্ত হয়। ১২১ জন যাত্রী এবং ছয় জন ক্রুর সবাই প্রাণ হারান। আর ২০১৬ সালে পিআইএর একটি বিমানে ইসলামাবাদ যাবার সময় আগুন ধরে যায় ও বিমানটি বিস্ফোরিত হয়ে ৪৭ জন মারা যায়।