বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

কাশ্মীরে আংশিকভাবে চালু টেলিফোন ও ইন্টারনেট

আপডেট : ১৮ আগস্ট ২০১৯, ০০:৩২

প্রায় দুই সপ্তাহ ‘অবরুদ্ধ’ কাশ্মীরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার উদ্যোগ নিয়েছে ভারত সরকার। এর অংশ হিসেবে স্কুল-কলেজ খোলার পর বেশকিছু জায়গায় টেলিফোন লাইন সচল ও মোবাইলে ইন্টারনেট সেবা চালু করা হয়েছে। মোট ১০০টি টেলিফোন এক্সচেঞ্জের মধ্যে ১৭টি চালু করা হয়েছে। চালু হয়েছে প্রায় ৫০ হাজার ল্যান্ডলাইন। গত ৫ আগস্ট সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিলের আগে নিরাপত্তার কারণে গোটা জম্মু-কাশ্মীরে টেলিফোন ও সব রকমের ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এদিকে কাশ্মীরে কারফিউ তুলে নিতে ভারতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কোঅপারেশন (ওআইসি)।

কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের প্রেক্ষিতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে অনুষ্ঠিত এক রুদ্ধদ্বার বৈঠক কোনো সিদ্ধান্ত বা বিবৃতি ছাড়াই শেষ হয়েছে। পাকিস্তান ও চীনের অনুরোধে দীর্ঘ পাঁচ দশক পর কাশ্মীর ইস্যুতে শুক্রবার বৈঠক হয়। আনন্দবাজারের খবরে বলা হয়েছে, চীন ব্যতীত নিরাপত্তা পরিষদের অন্য সদস্যরা বলেছেন, কাশ্মীর সমস্যা ভারত-পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক বিষয়। কাশ্মীরকে আন্তর্জাতিক ইস্যু করে তোলার কোনো প্রয়োজন নেই। যদিও চীন ও পাকিস্তানের পক্ষ থেকে এ দাবি জানানো হয়েছিল।

নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত বৈঠকে নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী পাঁচ স্থায়ী সদস্য ও ১০টি অস্থায়ী সদস্য দেশের প্রতিনিধিরা মিলিত হন। নিরাপত্তা পরিষদের প্রেসিডেন্ট দেশ হিসেবে পোল্যান্ড একটি বিবৃতি দিক এটাই ছিল চীনের চাওয়া। পাকিস্তান ও ব্রিটেন এতে সমর্থন দিলেও পোল্যান্ড বিবৃতি দিতে রাজি হয়নি। বৈঠকের আনুষ্ঠানিক কোনো সাংবাদিক সম্মেলনও হয়নি। তবে প্রতিনিধিরা যার যার মতো গণমাধ্যমকে পরিস্থিতি জানিয়েছেন।

বৈঠক শেষে জাতিসংঘে চীনের রাষ্ট্রদূত ঝাং জুন ভারত ও পাকিস্তানকে সংযত আচরণ করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, সদস্য দেশগুলো কাশ্মীরের পরিস্থিতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত মালিহা লোধি গণমাধ্যমকে বলেন, এ বৈঠকের মাধ্যমে প্রমাণ হয়, কাশ্মীর একটি আন্তর্জাতিক বিরোধপূর্ণ ইস্যু। পাকিস্তান কাশ্মীরের শান্তিপূর্ণ সমাধান চায়।

তবে ভারতের রাষ্ট্রদূত সৈয়দ আকবারুদ্দিন বলেন, কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের ইস্যু ভারতের অভ্যন্তরীণ। কাশ্মীরে সুশাসন প্রতিষ্ঠা, সামাজিক-অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্বার্থে বর্তমান সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেখানকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। শান্তিপূর্ণভাবে এ সমস্যার সমাধানে ভারত প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

কাশ্মীর ইস্যুতে উত্তেজনা হ্রাসের তাগিদ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুক্রবার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সঙ্গে এক ফোনালাপে এ আহ্বান জানান। হোয়াইট হাউসের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ফোনালাপে দুই নেতা যুক্তরাষ্ট্র ও পাকিস্তানের মধ্যকার ক্রমবর্ধমান সম্পর্ক আরো জোরদারের উপায় নিয়ে আলোচনা করেন।

অন্যদিকে কাশ্মীর সীমান্তে পাকিস্তানি বাহিনীর গুলিতে আরো এক ভারতীয় সেনা নিহত হয়েছেন। জম্মু-কাশ্মীরের রাজৌরি সীমান্তে এ ঘটনা ঘটে। গত সপ্তাহে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী দাবি করেছে, ভারতের স্বাধীনতা দিবসে কাশ্মীর সীমান্তে গোলাগুলিতে এ নিয়ে চার পাকিস্তানি ও  পাঁচ ভারতীয় সেনা সদস্য নিহত হলেন। তবে ভারতের দাবি, তাদের কোনো সেনা নিহত হয়নি। খবর :এনডিটিভি, হিন্দুস্তান টাইমসের।