রাজধানীর তুরাগে ইস্টওয়েস্ট মেডিক্যাল কলেজের সামনে গত ৫ সেপ্টেম্বর ভিক্টর পরিবহনের বাসের ধাক্কায় সংগীত পরিচালক পারভেজ রব নিহতের ঘটনায় দায়ী বাসচালককে পুলিশ এখনো আটক করতে পারেনি। এ ঘটনার দুই দিন পর উত্তরা পশ্চিম থানা এলাকায় ভিক্টর পরিবহনের আরেকটি বাসের চাপায় পারভেজ রবের ছেলের বন্ধু মেহেদী নিহত ও ছেলে আলভী আহত হন। ঐ ঘটনায় গ্রেফতার বাসচালক রফিকুল ইসলামের দুই দিনের রিমান্ড গতকাল শেষ হওয়ার পর তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে ট্রমা সেন্টারে চিকিত্সাধীন ইয়াসির আলভীর চোখে-মুখে যন্ত্রণার ছাপ। তার পেলভিসে আঘাত লেগেছে। শরীরের নিচটা ক্রমেই অবশ হয়ে যাচ্ছে। আলভীর মা রুমানা সুলতানা নির্বাক। মাত্র চার দিনের ব্যবধানে বাসের ধাক্কায় স্বামীকে হারানো, আবার একই কোম্পানির বাসের ধাক্কায় সন্তান মারাত্মক আহত—মাথায় তার আকাশ ভেঙে পড়েছে। চোখে অন্ধকার দেখছেন তিনি। এ পৃথিবীতে তিনি কীভাবে দাঁড়াবেন—তার সাহসটুকু তিনি খুঁজে পাচ্ছেন না। ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়া আলভীর ছোটো বোন রামিসা ইবনাত কাতর নয়নে তাকিয়ে আছে ভাইয়ের দিকে।
উত্তরা পশ্চিম থানার ওসি তপন চন্দ্র সাহা বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে বাসচালক রফিকুল ইসলাম বাসের কন্ডাক্টর, হেলপার ও মালিকের নাম জানিয়েছে। এদের মধ্যে কন্ডাক্টর ও হেলপারকে আটকের চেষ্টা করা হচ্ছে। বাসমালিককে থানায় ডেকে পাঠানো হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে বাসচালক বলেছে, ঘটনার দিন ৭ সেপ্টেম্বর সকালে আলভী ও তার বন্ধু মেহেদীসহ বেশ কয়েকজন উত্তরা কামারপাড়ায় ভিক্টর পরিবহনের বাসটি আটক করে সেটি তার বাবাকে চাপা দিয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন। এ সময় আলভীসহ বন্ধুরা বাসের সামনে দাঁড়িয়ে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেন। তারা উত্তেজিত হয়ে বাসে ইট ছোড়ার চেষ্টা করছিলেন। তখন চালক রফিকুল পালানোর জন্য বাসটি দ্রুতগতিতে চালিয়ে দেন। এ সময় দুই যুবক বাসের নিচে চাপা পড়েন।
তুরাগ থানার ওসি নূরুল মোত্তাকিন বলেন, সংগীত পরিচালক পারভেজ রবকে চাপা দেওয়া বাসটির চালক ও হেলপারকে আটকের জন্য অভিযান চলছে। তবে বাসের মালিক অন্য একটি মামলায় আগেই গ্রেফতার হয়ে জেলে রয়েছেন।