শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

‘স্বাধীন মতপ্রকাশের জন্য কাউকে যেন নির্যাতন, হত্যার শিকার হতে না হয়’

আপডেট : ১০ অক্টোবর ২০১৯, ০০:৪২

বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)-এর শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে হত্যার ঘটনায় নিন্দা ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ, বাংলাদেশে ব্রিটিশ হাইকমিশন ও জার্মান দূতাবাস। গতকাল বুধবার ঢাকায় জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর দপ্তর থেকে প্রকাশ করা একটি আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে উদ্বেগ জানিয়ে বলা হয়েছে, স্বাধীন মতপ্রকাশের জন্য কাউকে যেন নির্যাতন, হত্যার শিকার হতে না হয়। এছাড়া ব্রিটিশ হাইকমিশন ও জার্মান দূতাবাসের পক্ষ থেকে ফেসবুক পেজে বিবৃতি দেওয়া দিনে উদ্বেগ জানানো হয়েছে।

বুয়েটের তরুণ শিক্ষার্থী আবরার হত্যার ঘটনায় জাতিসংঘ নিন্দা জানিয়ে বৃিবতিতে বলেছে, স্বাধীনভাবে নিজের দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশের জন্য তাকে খুন হতে হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। গত কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সহিংসতায় অনেক বেশি প্রাণ ঝরে গেছে, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন অনেকেই। কিন্তু আপাতদৃষ্টিতে এসব ঘটনায় দায়ীরা বিচারের বাইরে থেকে যাচ্ছে। জাতিসংঘের বাংলাদেশ দপ্তর লক্ষ্য করছে, আবরার হত্যাকাণ্ডের সন্দেহভাজন অভিযুক্তদের ধরার ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিয়েছে। জাতিসংঘ স্বাধীন তদন্ত প্রক্রিয়ার আহ্বান জানাচ্ছে, যাতে নিরপেক্ষ পদ্ধতিতে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা যায় এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকানো যায়। বাকস্বাধীনতা একটি মানবাধিকার এবং সেই অধিকার প্রয়োগ করার কারণে যেন কেউ নিপীড়ন, নির্যাতন বা হত্যার শিকার না হয় বলে বিবৃতিতে বলা হয়েছে।

এদিকে গতকাল রাজধানীর বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্রাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস-বিস) মিলনায়তনে ডিক্যাব টকে বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী মিয়া সেপ্পো আবরার হত্যা সম্পর্কে বলেন, এই ঘটনা ভীতিকর। কোনো অভিভাবক চান না, তার সন্তান বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে এভাবে মারা যাক। তিনি বলেন, এ মৃত্যুর পর মানুষের ক্ষোভ দেখছি আমরা। এ হত্যার স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্ত এবং বিচার চায় জাতিসংঘ।

মঙ্গলবার জার্মান দূতাবাস প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা প্রত্যেক গণতন্ত্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মূল্যবোধগুলোর একটি। এর মধ্য দিয়ে জনগণের বাকস্বাধীনতা ও মতামত প্রকাশের স্বাধীনতার পাশাপাশি জনসমক্ষে নিজের সেই মত তুলে ধরার অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। জার্মান সরকার সমানুভূতির সঙ্গে জার্মানিসহ বিশ্বব্যাপী এই অধিকারগুলোকে সমর্থন করে। এসব মূলনীতির কোনো লঙ্ঘনই যেন শাস্তি থেকে পার না পায় সেই বিষয়টিকে আমরা গুরুত্ব দিয়ে থাকি।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, জার্মান দূতাবাস পরিতাপের সঙ্গে বুয়েট শিক্ষার্থীর হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি লক্ষ্য করেছে। দূতাবাস কর্তৃপক্ষ নিহত শিক্ষার্থীর পরিবার ও বন্ধুদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছে এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পক্ষে সমর্থন জানানোর জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে। কেননা এটি গণতন্ত্রের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি স্তম্ভ।

অন্যদিকে ঢাকায় ব্রিটিশ হাইকমিশন গতকাল এক বিবৃতিতে বলেছে, বুয়েটে ঘটে যাওয়া ঘটনায় আমরা বিস্মিত ও মর্মাহত। যুক্তরাজ্য বাকস্বাধীনতা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, মানবাধিকার ও আইনের শাসন প্রসঙ্গে নিঃশর্তভাবে অঙ্গীকারবদ্ধ।