ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, সচেতনতা ও সাবধানতা অবলম্বনের মাধ্যমে অনেক দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিত এবং মাস্টারপ্ল্যানের মাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে ভবন নির্মাণ করার কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে উপাচার্য উল্লেখ করেন। গতকাল মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের অক্টোবর স্মৃতি ভবনের টিভিকক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শোক দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
১৯৮৫ সালের ১৫ অক্টোবরের স্মৃতি স্মরণ করে উপাচার্য বলেন, অসাম্প্রদায়িক চেতনা এবং নৈতিক ও মানবিক মূল্যবোধে উদ্বুদ্ধ হয়ে সেদিন ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ হতাহতদের পাশে দাঁড়িয়ে উদ্ধার কাজে অংশ নিয়েছিল। উপাচার্য এ ধরনের দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে সকলকে সচেতন থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমাদের দায়িত্বের জায়গাটি জাগ্রত রাখতে এবং নিজ নিজ অবস্থানে দায়িত্বের প্রতি সবসময় যত্নশীল থাকতে হবে।
উপাচার্যের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো অংশ নেন প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দীন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, পংকজ দেবনাথ এমপি, জগন্নাথ হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মিহির লাল সাহা, প্রাক্তন প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. নিম চন্দ্র ভৌমিক, ঢাবি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব রঞ্জন কর্মকার।
উল্লেখ্য, ১৯৮৫ সালের ১৫ অক্টোবর রাতে জগন্নাথ হলে সংঘটিত মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় নিহতদের স্মরণে প্রতি বছর দিবসটি পালন করা হয়। দুর্ঘটনায় ২৬ জন ছাত্র, ১৪ জন অতিথি ও কর্মচারীসহ মোট ৪০ জন নিহত হন। দিবসটি উপলক্ষ্যে সকল হল, হোস্টেল ও প্রধান প্রধান ভবনে কালো পতাকা উত্তোলন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা অর্ধনমিত রাখা ও কালোব্যাজ ধারণ করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ সকালে অপরাজেয় বাংলার পাদদেশ থেকে শোকর্যালি সহকারে জগন্নাথ হল স্মৃতিসৌধে যান এবং পুষ্পস্তবক অর্পণ ও নীরবতা পালন করেন।
দিবসটি উপলক্ষ্যে জগন্নাথ হল প্রাঙ্গণে হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের প্রার্থনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। জগন্নাথ হল প্রাঙ্গণে দিনব্যাপী নিহতদের তৈলচিত্র ও তত্সম্পর্কিত দ্রব্যাদি প্রদর্শন এবং রক্তদান কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। বাদআছর নিহতদের আত্মার শান্তির জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদসহ সকল হল মসজিদে মোনাজাত করা হয়।