দিন শেষে ভারতের স্কোরের মাঝে উইকেটের ঘরে সংখ্যাটা হতে পারত ‘২’। দিনের খেলা শেষ হওয়ার দুই ওভার আগে নিজের দ্বিতীয় স্পেলে বোলিং করতে এসেছিলেন আবু জায়েদ রাহী। গতকাল বোলিংয়ে বাংলাদেশে আশা-ভরসার স্থান রাহীর বলে স্লিপে ক্যাচও দিয়েছিলেন ৩২ রানে থাকা মায়াঙ্ক আগারওয়াল। সোজা হাতে আসা ক্যাচটা ফেলে দেন প্রথম স্লিপে থাকা ইমরুল কায়েস।
ওভার শেষে স্লিপে দাঁড়াতে ইতস্তত করছিলেন ইমরুল। এত সহজ ক্যাচ ফেলে হয়তো ভেতরে ভেতরে পুড়ছিলেন। অধিনায়ক মুমিনুল হককেও জিজ্ঞসা করেছেন, ফিল্ডিং পজিশন নিয়ে। মুমিনুলের সবুজ সংকেত পেয়েই আবার স্লিপে যান ইমরুল।
ফিল্ডিংয়ে এই ক্যাচ মিস ছাড়াও ইন্দোরে গতকাল ব্যাটে-বলে ভারতের সামনে পাত্তা পায়নি বাংলাদেশ। ছন্নছাড়া, বিবর্ণ ছিল টাইগারদের পারফরম্যান্স। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের শুরুতেই ব্যাটিং বিপর্যয়ে ১৫০ রানে গুটিয়ে গেছে টাইগারদের প্রথম ইনিংস। ভারতও তুলে ফেলেছে ১ উইকেটে ৮৬ রান। প্রথম দিন শেষেই ম্যাচে অনেকটা পিছিয়ে পড়েছে বাংলাদেশ। দিনের খেলা শেষে সংবাদ সম্মেলনে এমনটাই বলেছেন অধিনায়ক মুমিনুল।
ম্যাচে বাংলাদেশের অবস্থান নিয়ে তিনি বলেছেন, ‘বাস্তবিক অর্থে, আমরা অনেক পিছিয়ে আছি, প্রথম ইনিংসে ১৫০ করার পরে, আমার কাছে মনে হয় খুব কঠিন। যেখানে আপনি যতই ভালো চিন্তা করেন, যতই পজিটিভ চিন্তা করেন, এটা একটু কঠিন। তার মধ্যে দিন শেষে ওরা আপনার ১ উইকেট ৮৬ রান তুলেছে। ভবিষ্যত্ দেখলে আমরা অনেক পিছিয়ে আছি।’
টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্তকে নিজের ভুল বলেই জানিয়েছেন মুমিনুল। তবে সেটাও বাংলাদেশের বাজে ব্যাটিংয়ের কারণে। তিনি বলেছেন, ‘আপনি টসে হারবেন অথবা জিতবেন। এরকম একটা ইনিংস যখন, মানে ব্যর্থ হবে, তো আমার কাছে মনে হয়, এরকম প্রশ্ন আসতেই পারে। আমার কাছে মনে হয়, আমরা মানে অল্প রানে অলআউট হওয়াতে, আমার কাছে মনে হয় যে, আমার সিদ্ধান্তটা খারাপ ছিল, পুরোটাই আমার ভুল, আমার কাছে মনে হয়।’
ভারতীয় বোলারদের সামনে প্রতি মুহূর্তেই সংগ্রাম করেছে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। তবে উইকেট ‘আনপ্লেয়েবল’ ছিল না বলেই মনে করেন মুমিনুল। তিনি বলেছেন, ‘উইকেট আনপ্লেয়েবল ছিল না, উইকেট কোনোভাবেই আনপ্লেয়েবল ছিল না, তারা বিশ্বের এক নম্বর বোলিং অ্যাটাক আমার কাছে মনে হয়। এদেশের সঙ্গে খেলতে হলে, আমাদের অনেক বেশি শক্ত হতে হবে। হয়তো আমরা ঐ জায়গায় একটু পিছিয়ে গিয়েছিলাম আমার কাছে তাই মনে হয়। উইকেট খেলার মতোই ছিল হয়তো আমরা মাঝখানের সিদ্ধান্তগুলোতে খুব মনোযোগী হতে পারিনি।’
বোলারদের মধ্যে রাহী ভালো করেছেন। এলোমেলো বোলিং করেছেন এবাদত। প্রচুর হাফ বলি দিয়েছেন তিনি। নতুন বলে অফ স্ট্যাম্পের বাইরে সুইং করাতে দেখা যায়নি তাকে। তারপরও এবাদত পাশে পাচ্ছেন অধিনায়ককে। মুমিনুল বলেছেন, ‘দেখেন যে দুজন টেস্ট বোলার, পেস বোলার বল করছে, তারা কিন্তু বেশি টেস্ট ম্যাচ খেলেনি। বেশি হলে ৫ থেকে ৬টা। আমার কাছে মনে হয়, খুব বেশি প্রত্যাশাও করা যাবে না। কারণ ওদের একটু সময় লাগবে।’
একাদশে সাত ব্যাটসম্যান খেলানো, মুস্তাফিজকে বসিয়ে রাখা এবং মুশফিকের পাঁচ নম্বরে আসার সিদ্ধান্তটা টিম ম্যানেজমেন্টের। যদিও পরে নিজেই দায়ভার নিয়েছেন অধিনায়ক। তিন পেসার না খেলানোর কারণ নিয়ে মুমিনুল বলেছেন, ‘আমরা সবসময় কিন্তু ব্যাটিংয়ে একটু বেশি মনোযোগ দেই। যেটার কারণে হয়তো দুইটা পেস বোলার।’