শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

পৃষ্ঠপোষকদের সহযোগিতা চাইলেন দাবার সভাপতি

আপডেট : ০৩ ডিসেম্বর ২০১৯, ২১:২৪

স্পোর্টস রিপোর্টার

২০১৪ সালে বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশনের সভাপতি হয়েছিলেন র্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ। এই সময়টায় দাবা নিয়ে গভীর মনযোগে কাজ করেছেন। এতে তার কাছে মনে হয়েছে দেশে দাবা একটি গুরুত্বপূর্ণ খেলা। দাবা নিয়ে অনেক কিছু করার আছে। ভবিষ্যত্ প্রজন্মকে সঠিক পথে রাখতে দাবা খেলাটাকে কাজে লাগানো যায়। দক্ষিণ এশিয়ান দাবা কাউন্সিলের নবনির্বাচিত সভাপতি বেনজীর আহমেদ গতকাল বিকালে কুর্মিটোলায় র্যাবের সদর দফতরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দাবা নিয়ে নানা পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন।

দাবা ফেডারেশন একটা সময় অগোছাল ছিল। কর্মকাণ্ডে শৃঙ্খলা ছিল না। জাতীয় পর্যায়ে না খেলেও উন্নত দেশে খেলার নামে চলে যেতেন দাবাড়ুদের কেউ কেউ। বর্তমান সভাপতি যখন মিটিংয়ে বসে দেখতেন সংগঠকদের মধ্যে নানা বিভেদ, একজন আরেকজনকে তির ছুঁড়ছেন, সেই ফেডারেশন এখন একটা শৃঙ্খলার মধ্যে চলছে। দাবায় সবচেয়ে বড়ো সমস্যা অর্থ সংকট। এটা ভাবিয়ে তুলছে দাবা সভাপতিকে। অর্থ সংস্থান করে খেলাটা পরিকল্পিত পথে এগিয়ে নিতে পারলে শুধু খেলার উন্নয়নই নয়, সামগ্রিকভাবে সমাজের অবক্ষয় দূর হবে। পরিবার ও সমাজে অপরাধ দূর হবে। বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘স্কুলে দাবা খেলাটা হলে শিক্ষার্থীকে স্কুল বয়সেই সিদ্ধান্ত নিতে শেখায়। দায়িত্ব নিতে শেখায়। বুঝতে পারবে ভুল হলে দায়িত্ব আমার।’ শিশুদের মনোজগতের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, ‘ক্রিকেট সাফল্য দিয়েছে। ফুটবল জনপ্রিয় খেলা। আমরা দাবাটাকে আরো বেশি জনপ্রিয় করতে চাই।’ এ জন্য তিনি  পৃষ্ঠপোষকদের আহ্বান জানিয়েছেন, তারা যেন দাবার দিকে নজর দেন। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান রয়েছে তারা সামাজিক দায়বদ্ধতা নিয়েও কাজ করেন। এসব প্রতিষ্ঠান যদি দাবায় আসেন তাহলে উন্নতি হবে।

দাবায় পৃষ্ঠপোষকতা করার আহবান জানিয়ে দক্ষিণ এশিয়ান দাবা কাউন্সিলের সভাপতি বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘আমরা ছোটোখাটো স্পন্সর পেলেও বড়ো সাফল্য আনতে পারব। দেশে অনেক বড়ো বড়ো পৃষ্ঠপোষক রয়েছে। টেলিকম সেক্টরে আছে, প্রাইভেট সেক্টরে আছে। পৃষ্ঠপোষকতা পেলে দুই বছরের মধ্যে গ্র্যান্ডমাস্টার পাবো।’ সভাপতি জানিয়েছেন, আগামী বছর বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকীতে গ্র্যান্ডমাস্টার টুর্নামেন্ট হবে।

গত ২৯ নভেম্বর চার বছরের জন্য দক্ষিণ এশিয়ান দাবা কাউন্সিলের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন বেনজীর আহমেদ। এরই মধ্যে কাজও শুরু করেছেন তিনি। আন্তর্জাতিক ফিদে সংস্থার উদ্যোগে বাংলাদেশ জেলের কয়েদিদের জন্য দাবা খেলার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। কয়েদিদের মানসিক উন্নতির জন্য বিভিন্ন দেশে ঘণ্টায় ৩০০ ডলার খরচা করে মনোবিদ নিয়ে আসে। কয়েদিদের জন্য যদি দাবা খেলা শুরু করা যায় তাহলে তারাও উন্নতির পথে যাবে।

এ ব্যাপারে বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘ফিদে জেল দাবা শুরু করছে। ফিদের বক্তব্য হচ্ছে কয়েদিদের মনোজগেক উন্নত করে দাবা। জেলে দাবা হলে তাকে চিন্তা করতে শেখায়। এটা পুনরায় অপরাধ হতে কয়েদিকে মুক্ত রাখে। আন্তর্জাতিক দাবা সংস্থা আমাদেরকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। আমরা স্বররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কথা বলব কীভাবে জেলে দাবা শুরু করা যায়। এছাড়াও একজন সিইও নিয়োগ করা হয়েছে। তিনি চার বছরের জন্য দাবার একটা পরিকল্পনা প্রণয়ন করবেন। সবাই হবে, তবে স্পন্সরদের সহযোগিতা লাগবে দেশের দাবার উন্নয়নে।’ ­

 

 

গতকাল র্যাবের সদর দফতরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দেশের দাবা উন্নয়নে নানা পরিকল্পনার কথা বলছেন বেনজীর আহমেদ—ইত্তেফাক