বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

ফেডারেশন কাপ কোয়ার্টার ফাইনাল

মোহামেডানে আলো দুই আবাহনী আঁধারে

আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০১৯, ২২:৪৮

দ্বৈরথের পুরোনো ঝাঁঝটা খোদ আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচেই নেই। তবুও নতুন কোচ শন লেনের অধীনে মোহামেডান যেন ‘আবাহনী’কে পেলেই জ্বলে উঠছে। গতকাল সোমবার ফেডারেশন কাপের কোয়ার্টার ফাইনালে চট্টগ্রাম আবাহনীকে ২-০ গোলে হারিয়ে সেমিফাইনালে উঠে গেছে মোহামেডান। এর আগে রহমতগঞ্জের কাছে পেনাল্টি শুট-আউটে ৪-৩ এ হেরে প্রতিযোগিতা থেকে বিদায় নিয়েছে শিরোপাধারী আবাহনী লিমিটেড।

শিরোপা পুনরুদ্ধারের লক্ষ্য নিয়ে টুর্নামেন্টে আসা চট্টগ্রাম আবাহনী গ্রুপপর্বে খেলেছে দারুণ ফুটবল। উভয় ম্যাচেই দুই গোল ব্যবধানে জেতা কোচ মারুফুল হকের শিষ্যরা শেষ ম্যাচেই হারিয়েছিল শিরোপাপ্রত্যাশী বসুন্ধরা কিংসকে। অন্যদিকে গ্রুপপর্বের প্রথম দুই ম্যাচে ড্রয়ের পর মোহামেডানের শেষ আটে খেলা নিয়েই ছিল সংশয়।

তবে গতকাল দিনের দ্বিতীয় ম্যাচের শুরু থেকে দেখা গেল অন্য দৃশ্যই। শুরু থেকে মুহুর্মুহু আক্রমণ শানানোর ফলটা ২৫ মিনিটে পায় মোহামেডান। প্রতিপক্ষ রক্ষণের ভুলে পাওয়া বল আয়ত্তে নিয়েই দূরের পোস্টে কামান দাগেন শাহেদ হোসাইন।

কোচ শন লেনের শিষ্যরা মিনিট পাঁচেক পর ব্যবধান দ্বিগুণ করে । এবারও রক্ষণাত্মক ভুলের সুবাদেই মিলল সুযোগটা। বক্সের সামনে বাতাসে থাকা বল বিপদমুক্ত করতে ব্যর্থ হয় চট্টগ্রাম আবাহনীর রক্ষণ। সুযোগটা নিয়ে মোহামেডান মিডফিল্ডার ইউসুফ সিফাত ঢুকে পড়েন প্রতিপক্ষের বিপত্সীমায়। তার বাড়ানো বলেই ওবি মোনেকের গোল। ম্যাচ থেকে তখনই ছিটকে যায় চট্টগ্রাম আবাহনী।

এরপর অবশ্য ম্যাচে ফেরার জোর চেষ্টাই চালিয়েছিল চট্টগ্রামের দলটি। ৩৬ মিনিটে চার্লস দিদিয়েরের করা শট দুর্দান্ত রিফ্লেক্সে ফেরান মোহামেডান গোলরক্ষক মাজহারুল ইসলাম হিমেল। ফলে গোলবঞ্চিত থেকেই প্রথমার্ধ শেষ করে চট্টগ্রাম আবাহনী।

দ্বিতীয়ার্ধেও হাই-প্রেসে বল আদায় করে প্রতি আক্রমণে ওঠার কৌশলটা ধরে রাখে মোহামেডান। ৭৪ মিনিটে ওবি মোনেকের পাস থেকে সোলেমান ডায়াবেটের শট গোলপোস্টে প্রতিহত না হলে ব্যবধানটা আরো বাড়াতে পারত সাদা-কালোরা।

এ অর্ধের শুরুতে ফিরে আসার লক্ষ্যে কিছু আক্রমণ গড়লেও শেষদিকে মোহামেডানের একতরফা আক্রমণই সহ্য করেছে মারুফুল হকের শিষ্যরা। তবে ব্যবধান আর বাড়েনি তাতে। ফলে ২-০ গোলের জয় নিয়ে ২০১৫ সালের পর প্রথমবারের মতো শেষ চার নিশ্চিত করে পুনরুজ্জীবনের পথে থাকা মোহামেডান।

দিনের শুরুর ম্যাচ বিদায় দেখেছে ‘আসল’ আবাহনীর। যার মূল ‘কৃতিত্ব’ দুই গোলরক্ষকের। মূল সময়ে গোলশূন্য থাকায় গতকাল বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ম্যাচটা গড়িয়েছিল অতিরিক্ত সময়ে। কোচ মারিও লেমোসের শিষ্যরা চতুর্থ মিনিটেই এগিয়ে গিয়েছিল। মেইলসন আলভেসের লম্বা পাস বক্সে খুঁজে পায় ক্রেভেন্স বেলফোর্টকে। দারুণভাবে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে দূরের পোস্টে তার করা শট এগিয়ে দেয় আবাহনীকে।

এরপর জুয়েল রানাকে দারুণ পজিশনিংয়ে ঠেকিয়ে রহমতগঞ্জকে ম্যাচে রেখেছিলেন পরবর্তী সময়ে দলটির নায়ক বনে যাওয়া গোলরক্ষক রাসেল মাহমুদ। ১১৮ মিনিটে আরেক গোলরক্ষক শহীদুল আলম সোহেলের ভুলে গোল হজম করে আবাহনী। বক্সে আসা ক্রস বিপদমুক্ত করতে লাফিয়ে উঠলেও বলের নাগাল পাননি তিনি। সুযোগটা কাজে লাগিয়ে রহমতগঞ্জকে সমতায় ফেরান এনামুল ইসলাম।

পেনাল্টি শুটআউটে দ্বিতীয় শট নিতে আসা বেলফোর্টের শট ঠেকিয়ে দেন রহমতগঞ্জ গোলরক্ষক। পরের শটে সোহেল রানার শটও কাঁপাল গোলপোস্ট। তবে গোলরক্ষক নিয়মভঙ্গ করায় পুনরায় নিতে হয় পেনাল্টিটি। দ্বিতীয় সুযোগে ভুল করেননি তিনি। এরপর শেষ শটে সানডে চিজোবার দুর্দান্ত পেনাল্টিটি ঠেকিয়ে দেন রাসেল। রহমতগঞ্জ ডাগ আউট তখন উন্মাতাল। আবাহনীকে বিদায় করে দুই বছর পর আবারও শেষ চারে ওঠে দলটি।

আজকের খেলা

সাইফ স্পোর্টিং-পুলিশ এফসি

বসুন্ধরা কিংস-মুক্তিযোদ্ধা

বিকাল ৩:৩০ ও সন্ধ্যা ৬:৩০টা

বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম।