বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

এবার থিতু হতে চান আল আমিন

আপডেট : ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ২১:৪৫

 স্পোর্টস রিপোর্টার

মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়াম তখন ফাঁকা। বিসিএল খেলে ফেরা কয়েকজন ক্রিকেটার সকালে অনুশীলন করে চলে গেছেন। তখন অ্যাকাডেমি মাঠে আর খেলোয়াড়রা কেউ নেই। জনা কয়েক সাংবাদিক অনিশ্চিত কারো অপেক্ষায় ছিলেন। এই সময় বছর চারেক বয়সের ছেলে মিনহাজের হাত ধরে ঢুকলেন আল আমিন হোসেন। তাকে দেখে হই হই করে উঠলেন সাংবাদিকরা। আল আমিনও সোল্লাসে চিত্কার করে উঠলেন।

মিনহাজ চমকে উঠলো। সাংবাদিকদের চিত্কার আর বাবার উল্লাস দেখে একটু ঘাবড়েই গেল। সে তো আর বুঝতে পারেনি, এই চেনা জগতের উল্লাসের জন্য গত বছর চারেক ধরে কেমন অপেক্ষায় ছিলেন তার বাবা।

চার বছরের অপেক্ষা ঘুচিয়ে গত বছরের শেষদিকে টেস্ট আর টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ফিরেছেন। এবার চার বছরের বিরতি শেষে প্রিয় ফরম্যাট ওয়ানডেতেও ফিরলেন পেসার আল আমিন হোসেন। এই মাঝের সময়টা তাকে অনেক শিক্ষা দিয়েছে। সবকিছু মিলিয়ে তার উপলব্ধি হলো, এবার নিজেকে জাতীয় দলে থিতু করতে হবে। সেই ২০১৩ সালে শুরু করেছিলেন। এতদিনে দলে তার সিনিয়র একজন থাকার কথা। কিন্তু যাওয়া-আসা করতে করতে জায়গাটাই পাকা করা হয়নি। এবার সেটা করতে চান বলে বলছিলেন, ‘ক্যারিয়ার যখন শুরু করেছিলাম, টানা চলতে থাকলে এতদিনে দলে যথেষ্ট প্রতিষ্ঠিত থাকতাম। মাঝে মোটামুটি বিরতি গেছে। তার পরও চেষ্টা করেছি। এখন সুযোগ এসেছে। সবসময় চেষ্টা করি সুযোগ কাজে লাগাতে। টেস্ট ও টি-টোয়েন্টিতে সুযোগ পেয়েছি, দুটিতেই মোটামুটি ভালো করেছি। ওয়ানডেতে আরেকটি সুযোগ এসেছে। একাদশে জায়গা পেলে চেষ্টা করব ভালো করার।’

 টেস্ট যদিও ফেরার পর খেলে ফেলেছেন। কিন্তু কোচ রাসেল ডমিঙ্গো তাকে সীমিত ওভারের ক্রিকেটেই বেশি পছন্দ করছেন। তবে আল আমিন সব ফরম্যাটের দুয়ারই খোলা রাখতে চান, ‘শুধু সাদা বলের চিন্তা করলে তো বিসিএল ফাইনাল খেলতে যেতাম না! সাদা বলের অনুশীলনই করতাম। যারা টেস্টে ছিল না, কোচের সঙ্গে সাদা বলে অনুশীলন করেছে। আমারও করার কথা ছিল। কিন্তু বিসিএল ফাইনাল খেলতে গিয়েছি। এখন টিম ম্যানেজমেন্টে যারা থাকেন, তাদের নানা রকম ভাবনা থাকে কাকে কীভাবে কাজে লাগাবে। আমার চিন্তা-ভাবনা, আমি সব বলে খেলতে চাই। যেখানে সুযোগ আসবে, ভালো করার চেষ্টা করব।’

আল আমিন একটা ব্যাপার বুঝেছেন যে, নিজেকে শোধরাতে হবে। এই দফা ভুল আর করা চলবে না। নিজেকেই যেন বলছিলেন, ‘আমি যখন বাদ পড়েছি, খেলার কারণে সম্ভবত বাদ পড়িনি। কিছু ইস্যু ছিল। সেগুলো ঠিক করার চেষ্টা করেছি। ভুল করলেই কেবল ভুল বোঝা যায়। মানুষ ভুল থেকেই শেখে। এটা শৃঙ্খলার ইস্যু হতে পারে, ক্রিকেটের ইস্যু হতে পারে। শেখার তো কোনো শেষ নেই।’

আল আমিন মনে করেন, শুধু তার নয়, দলেরও খারাপ সময়টা কেটে গেছে। দলের উত্থান-পতন থাকে। সেই পতন সামলে, এবার সামনে তাকানোর পালা, ‘দলের খারাপ-ভালো সময় আসেই। তুলনা করলে আমাদের দল বেশ ভালো ক্রিকেট খেলছে। বাজে সময় আসেই। বাজে সময় কিভাবে মোকাবিলা করব ও ভালো সময় এলে কিভাবে কাজে লাগাব, সেটিই আসল।’