শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

ঘরে থাকাই এখন দায়িত্ব পালন—মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ

আপডেট : ৩০ মার্চ ২০২০, ২১:০৫

বাকি সবার মতোই লম্বা সময় ধরে গৃহবন্দি হয়ে আছেন জাতীয় দলের টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। এই বন্দিত্বের সময়ে পরিবারে যেমন বৈচিত্র্য খুঁজে পাচ্ছেন, তেমনি ক্রিকেটকে মিস করছেন অনেক। বন্দি এই সময়ের গল্প করেছেন রিয়াদ।

একান্ত সাক্ষাত্কার নিয়েছেন দেবব্রত মুখোপাধ্যায়

কেমন কাটছে এই হোম কোয়ারেন্টাইনের জীবন?

খুব খারাপ বলব না। অনেক দিন পর পরিবারের সঙ্গে খুব ভালোভাবে সময় কাটাতে পারছি। বিশেষ করে ছেলের সঙ্গে। পুরোপুরিই ঘরবন্দি আছি, তবে সময় খারাপ কাটছে না। সকালে উঠে নাশতা করেই ছেলের সঙ্গে খেলতে শুরু করি। কখনো ওর হোমওয়ার্ক দেখিয়ে দেই। ম্যাথ করাই, বাংলা করাই কখনো। এমনিতে তো এসবের সুযোগ খুব একটা হয় না! গতকালই যেমন ওর সঙ্গে ড্রয়িং করলাম; আমিও ওর সঙ্গে ছবিতে কালার করলাম। কত বছর পর ছবি আঁকলাম, নিজেরও মনে নেই!

কিছু শারীরিক পরিশ্রম করুন?

দুপুরের দিকে ট্রেডমিলে রানিং করি। কিছু ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ, ঘরে বসে ফিটনেসের কাজ যতটা করা যায়, চেষ্টা করছি। মারিওর সঙ্গে কথা বলে (জাতীয় দলে সদ্য সাবেক ট্রেনার মারিও ভিল্লাভারায়ন) এসব কাজ করছি। ট্রেডমিলে খুব বেশি রানিং করলেও কিছু সমস্যা হয়, মারিও সেসব বলে দিয়েছে।

ক্রিকেট কতটা মিস করছেন?

অনেক, অনেক। আসলে এমনভাবে ব্যাট-বল থেকে একেবারে দূরে তো থাকা হয় না। হয় কী, যখন টানা খেলার মধ্যে থাকি, মনে হয় একটু বিশ্রাম পেলে ভালো হতো। কিন্তু দুই তিন দিনের মধ্যেই আসলেই সেই বিশ্রামের টানটা চলে যায়। একটু হলেও এরপর ব্যাট ধরি, বল ধরি। এবার তো সেই সুযোগই পাচ্ছি না। ফলে ব্যাট-বল খুব মিস করছি।

কত দিন হলো?

আজ... মনে হয় ১৩ দিন হয়ে গেল। এই ১৩ দিনে আমি বাসা থেকে নামিনি। কিছু দরকার হলে অর্ডার করে আনিয়ে নেই। খুব কিছু দরকারও হয় না। শুধু মাঝে মাঝে অস্থির লাগে, কখন আবার ক্রিকেটে ফিরতে পারব।

এই অবস্থায় মনকে মানিয়ে নেওয়া কতটা কঠিন?

অবশ্যই কঠিন। আমাদের তো এত লম্বা সময় টানা ঘরে থাকার অভ্যাস নেই। নরম্যালি খেলা বা দলের প্র্যাকটিস না থাকলেও দু-একদিন বিশ্রাম নিয়ে আমরা হয়তো ফিটনেস ট্রেনিং করতে বের হই। ব্যাট নিয়ে হালকা নক করি। কিছু না কিছু করি। এখন কিছুই করার সুযোগ নেই। কঠিন সময়। তবে নিজেকে এটিই বোঝাচ্ছি যে, এটাই আমার দায়িত্ব।

নিজেকে মোটিভেটেড করছেন কী করে?

আমি যদি ঘরে থাকি, তাহলে শুধু নিজেকে না, হয়তো আরো পাঁচ জনকে রক্ষা করছি। সবাই যদি এভাবে ভাবি, তাহলে গোটা দেশ রক্ষা পায়। সামাজিক দায়িত্ব ও কর্তব্য হিসেবেই এটা করা উচিত। অন্য কিছুর অপশন আছে বলেও আমি মনে করি না।

এই অবস্থায় থাকলে আপনারা ক্রিকেটাররা মানসিকভাবে অবসাদগ্রস্ত হয়ে ওঠার ভয় আছে?

মানসিক স্বাস্থ্যের ব্যাপারটি এখনো হয়তো ততটা প্রকট হয়ে ওঠেনি। তবে আল্লাহ না করুক, যদি আরো অনেক দিন, ধরুন এক মাস আমাদের এভাবেই থাকতে হলো, তখন কিন্তু এক ধরনের অবসাদ অনেককে পেয়ে বসতে পারে। এজন্য এখন থেকেই সবাইকে নিজে থেকেই চেষ্টা করতে হবে ভালো থাকতে। দৈনন্দিন কাজে নতুনত্ব আনা, উদ্ভাবনী কিছু করা, এসব ভাবতে হবে। কেউ হয়তো অনেকদিন ছোটদের বই পড়ে না, হুট করে পড়লে ভালো লাগতে পারে। এ ধরনের নানা সময়ে নানা কিছু করার পথ খুঁজতে হবে।