ঠিক এক বছর আগে (২ জুন) ইংল্যান্ডের মাটিতে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ মিশন শুরু হয়েছিল। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের বড়ো ভরসা ছিলেন পেস বোলিং অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেটশিকারিও (১৩) ছিলেন এই তরুণ। কিন্তু বিশ্বকাপের মাঝপথেই অনাকাঙ্ক্ষিত সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল তাকে। খবর ছড়িয়েছিল যে, বড়ো প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে খেলতে ভয় পান সাইফউদ্দিন! যার কারণেই নাকি ইনজুরির বাহানা ধরেছিলেন।
এ খবর এখনো তাড়িয়ে বেড়ায়, কষ্ট দেয় সাইফউদ্দিনকে। বিশ্বকাপের এক বছর পর ঐ অপবাদ সম্পর্কে সবিস্তারে কথা বলেছেন এ তরুণ অলরাউন্ডার।
বিশ্বকাপের সেই সময়টা মনে করতে গিয়ে সাইফউদ্দিন ক্রিকবাজকে বলেছেন, ‘এটা আমার জন্য খুব কষ্টের ছিল। যখন বলা হলো যে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে আমি খেলিনি কারণ আমি বড়ো দলকে ভয় পাই। আমি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলাম, মিরাজ আমার রুমে এসেছিল এবং আমাকে সমর্থন দিয়েছিল।’
পিঠের ব্যথা নিয়েই বিশ্বকাপ খেলতে হয়েছিল সাইফউদ্দিনকে। এমনকি ইনজেকশন নিয়েও খেলেছেন তিনি। বলেছেন, ‘বিশ্বকাপে আমার সময়টা কেটেছিল রিহ্যাবের মধ্য দিয়ে। এতকিছুর পর কেউ যখন নিবেদন নিয়ে প্রশ্ন তোলে, তখন খুব কষ্ট দেয়।’
আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজে অগ্রজ রুবেলকে অনুসরণ করতে গিয়েই পিঠের ইনজুরিটা মাথাচাড়া দেয় সাইফউদ্দিনের। পাশের রুমে থাকা রুবেলকে দেখে ফ্লোরে ঘুমিয়েছিলেন তিনি। তাতেই বাধে বিপত্তি। ফিরে আসে সেই পিঠের ব্যথা। পরে ব্যথা নিয়েও সাকিব না থাকায় ফাইনালটা খেলেছিলেন তিনি। ফাইনালের পরও হেড কোচ রোডস ও ফিজিও তিহান চন্দ্রমোহনকে একসঙ্গে আবারও ব্যথার কথা বলেছিলেন।
ভারতের বিরুদ্ধে বিশ্বকাপের প্রস্তুতি ম্যাচে ৬ ওভারের পর আবার বোলিং করতে বললে অধিনায়ক মাশরাফিকের ব্যথার কথা জানান তিনি। মাশরাফিও প্রত্যুত্তরে আর কিছু বলেননি।
ড্রেসিংরুমে ফিরে নাকি হতাশায় ক্যাপ ছুড়েছিলেন সাইফউদ্দিন। যা মিথ্যা তথ্য বলেই দাবি করেন এ তরুণ। বিশ্বকাপ শুরুর আগে ২ লাখ টাকা মূল্যের একটি ব্যথানাশক ইনজেকশন দেওয়া হয় তাকে। মূলত আফগানিস্তান ম্যাচের পর ব্যথা কুঁকড়ে মরছিলেন সাইফউদ্দিন।
তিনি বলেন, ‘আফগানিস্তানের সঙ্গে ম্যাচের পর আমরা ৪-৫ ঘণ্টার বাস জার্নি করেছিলাম। নামার পর আমি নিজেকে ধরে রাখতে পারছিলাম না, দাঁড়াতেই পারছিলাম না। আমি বলেছিলাম, আমার খুব ব্যথা করছে, আমি নিতে পারছি না। প্রকৃত সত্য না জেনেই মানুষ দুইয়ে দুইয়ে চার মিলিয়েছে যে, আমি প্রস্তুতি ম্যাচ ধোনিকে বল করতে চাইনি যখন ১০০-এর দিকে যাচ্ছিল, ব্যথা সহ্য করতে না পেরেই আমি অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে না খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।’