১৫১ রানের নান্দনিক ইনিংস খেলে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডেতে পাকিস্তানকে ৯ উইকেটে ৩৫৮ রানের পাহাড় সমান সংগ্রহ এনে দিয়েছিলেন ওপেনার ইমাম উল হক। কিন্তু রানের পাহাড় চড়েও শেষ পর্যন্ত ম্যাচটি জিততে পারেনি পাকিস্তান। প্রতিপক্ষের স্বপ্ন চুরমার করে দেন ইংল্যান্ডের ওপেনার জনি বেয়ারস্টো। তার ১২৮ রানে পাকিস্তানের বিশাল সংগ্রহকে টপকে ৬ উইকেটে জয় তুলে নেয় ইংলিশরা।
এই পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল ইংল্যান্ড। নটিংহ্যামে আগামীকাল ১৭ মে অনুষ্ঠিত হবে সিরিজের চতুর্থ ওয়ানডে। শেষ দুই ওয়ানডের অন্তত একটা জিতলেই সিরিজ জিতে নেমে স্বাগতিক ইংল্যান্ড
বিস্ট্রলে টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং বেছে নেয় ইংল্যান্ড। ব্যাট হাতে নেমে ২৭ রানে ২ উইকেট হারায় পাকিস্তান। শুরুর ধাক্কা সামলে ওঠার চেষ্টায় সফল হন ওপেনার ইমাম ও চার নম্বরে নামা হারিস সোহেল। তৃতীয় উইকেটে ৬৮ রানের জুটি গড়েন তারা। এখানে ৪১ বলে ৪১ রান অবদান রেখে আউট হন সোহেল।
এরপর অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদের সঙ্গে আবারো বড় জুটি গড়েন ইমাম। দলকে উপহার দিয়েছেন ৬৭ রান। যার মধ্যে ২৭ রান অবদান রেখে আউট হন সরফরাজ। দলপতি ফিরে যাবার পরই ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ সেঞ্চুরি তুলে নেন ইমাম। ৯৭তম বলে তিন অঙ্কে পা দিয়েই মারমুখী হয়ে উঠেন তিনি। তাই দেড়শ রানে পৌঁছাতে ৩১ বল মোকাবিলা করেছেন ইমাম। ইংল্যান্ড পেসার টম কারানের বলে বোল্ড আউট হওয়ার আগে ১৩১ বলে ১৬টি চার ও ১টি ছক্কায় পাকিস্তানের পক্ষে পঞ্চম ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ১৫১ রান করেন ইমাম
৪৬তম ওভারে দলীয় ৩১০ রানে আউট হন ইমাম। এরপর টেল-এন্ডারদের বদৌলতে শেষ পর্যন্ত ৯ উইকেটে ৩৫৮ রানে বিশাল সংগ্রহ পায় পাকিস্তান। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এটি দ্বিতীয় ও ওয়ানডে ক্রিকেটে পাকিস্তানের সর্বোচ্চ অস্টম দলীয় সংগ্রহ। শেষের দিকে ইমাদ ওয়াসিম ১২ বলে ২২, ফাহিম আশরাফ ১১ বলে ১৩ ও হাসান আলি ৯ বলে অপরাজিত ১৮ রান করেন। ইংল্যান্ডের পেসার ক্রিস ওকস ৬৭ রানে ৪ উইকেট নেন।
জয়ের ৩৫৯ রানের বড় লক্ষ্যমাত্রায় খেলতে নেমে বিধ্বংসী রূপ ধারণ করেন ইংল্যান্ডের দুই ওপেনার জেসন রয় ও জনি বেয়ারস্টো। আক্রমণে আসা পাকিস্তানের প্রথম পাঁচ বোলারকে ব্যাট হাতে তুলোধুনো করেন রয় ও বেয়ারস্টো। ১৭ ওভারেই স্কোরবোর্ডে ১৫৩ রান জড়ো করেন তারা। এরমধ্যে রয় ৫৩ বলে ৭২ ও বেয়ারস্টো ৪৯ বলে ৭৮ রান করেন। তবে ১৮তম ওভারের তৃতীয় বলে ভেঙে যায় ইংল্যান্ডের ওপেনিং জুটি। পাকিস্তানের ফাহিম আশরাফের বলে আউট হওয়ার আগে ৮টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৫৫ বলে ৭৬ রান করেন রয়।
রয় থেমে গেলেও মোকাবিলা ৭৪তম বলেই সেঞ্চুরির স্বাদ নেন বেয়ারস্টো। সেঞ্চুরির স্বাদ নিয়ে জো রুটের সঙ্গে দলের রানের চাকা সচল রাখেন তিনি। তবে ব্যক্তিগত ১২৮ রানে থেমে যেতে হয় তাকে। পাকিস্তানের পেসার জুনায়েদ খানের বলে বোল্ড হবার আগে ১২৮ রান করেন তিনি। তার ৯৩ বলের ইনিংসে ১৫টি চার ও ৫টি ছক্কা ছিল।
বেয়ারস্টো যখন ফিরেন তখন ইংল্যান্ডের রান ২৩৪। এ অবস্থায় রুট ৪৩ ও বেন স্টোকস ৩৭ রানের ছোট দুটি ইনিংস খেলে দলকে জয়ের কাছাকাছি নিয়ে যান। এরপর দলের জয় নিশ্চিত করেছেন মঈন আলী ও অধিনায়ক ইয়ন মরগান। এই জয়ে পাকিস্তানের বিপক্ষে সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করে ম্যাচ জেতার নয়া রেকর্ড গড়ল ইংল্যান্ড। মঈন ৩৬ বলে ৪টি চার ও ৩টি ছক্কায় অপরাজিত ৪৬ ও মরগান ১২ বলে অপরাজিত ১৭ রান করেন। ম্যাচ সেরা হয়েছেন ইংল্যান্ডের বেয়ারস্টো।- বাসস