শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

অপবাদ ঘুচাতে চায় দক্ষিণ আফ্রিকা

আপডেট : ২২ মে ২০১৯, ২২:০৩

স্পোর্টস ডেস্ক

বিশ্বকাপটা বরাবরই দক্ষিণ আফ্রিকানদের জন্য একটা আক্ষেপের নাম। সব সময়ই জয়ের সম্ভাবনা থাকলেও কোনোবারই শিরোপা ছোঁয়া হয়নি প্রোটিয়াদের। তাদের বলা হয় ‘চোকার্স’। কারণ, যখন প্রমাণ করার সময় আসে, তখন ব্যর্থ হয় দক্ষিণ আফ্রিকা।

এবার নাকি নিজেদের এই বদনাম ঘুচিয়ে ফেলবে দলটি। এমন দাবি করলেন দেশটির সাবেক কিংবদন্তি ক্রিকেটার কেপলার ওয়েসেলস। তিনি মনে করেন, এবার ইংল্যান্ডের মাটিতে ক্রিকেট বিশ্বের সবচেয়ে বড় এই আসরের ট্রফি জয়ের সকল যোগ্যতাই দলটির আছে।

ওয়েসেলস হলেন দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটের প্রথম টেস্ট অধিনায়ক। এমনকি ১৯৯২ বিশ্বকাপে প্রোটিয়াদের নেতৃত্বেও ছিলেন তিনি। ওয়েসেলস মনে করেন, তার দল এবারের বিশ্বকাপ ফেবারিট নয়। এটাই হতে পারে আশীর্বাদ। কে জানে, হয়তো চাপমুক্ত হয়ে বিশ্বকাপ জিতেই যেতে পারে ফাফ ডু প্লেসিসের দল।

তিনি বলেন, ‘বেশ অনেকগুলো আসর পর দক্ষিণ আফ্রিকা এবারে ফেবারিটের তালিকায় নেই। এটা হয়তো আমাদের জন্য ইতিবাচক হতে পারে। তারা বিশ্বকাপ জিতবে খুব বেশি মানুষ তেমনটা আশা করছে না। সুতরাং তারা রাডারের বাইরে থাকবে। আমি মনে করি, দলটির জন্য সেমিফাইনাল পর্যন্ত যাওয়াটা খুবই সহজ হবে। আর যদি চাপমুক্ত থেকে ক্রিকেট খেলতে পারে, তাহলে এবারই হয়তো শিরোপার আক্ষেপটা মুছে যেতে পারে দলটির।’

১৯৯২ সাল থেকে ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ফেভারিট না হয়েও সেমিফাইনাল পর্যন্ত যেতে পারে তারা। এরপর আরো ছয়টি বিশ্বকাপে অংশ নেয় প্রোটিয়ারা। প্রতিটি বিশ্বকাপের ফেভারিটের তকমা গায়ে ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার। সেরা খেলোয়াড় স্কোয়াডে রেখে, খেলোয়াড়দের সেরা ফর্ম নিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করেছিল প্রোটিয়ারা। কিন্তু কোনোবারই সাফল্যে নিজেদের রঙিন করতে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা। সেমিফাইনাল পর্যন্ত যাওয়াটাই এখন অবধি দক্ষিণ আফ্রিকার সেরা অর্জন। চার সেমিফাইনালে পৌঁছে প্রতিবারই ব্যর্থ হয়েছে তারা। সর্বশেষ ২০১৫ সালে যেমন হেরেছে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে।

ক্রিকেট ইতিহাসের প্রথম তিনটি বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয়েছিল এই ইংল্যান্ডে। এরপর সর্বশেষ ১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপেরও আয়োজক ছিল ইংল্যান্ড। সেই আসরে বার্মিংহামে দ্বিতীয় সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টাই হওয়া ম্যাচটি রীতিমতো ক্রিকেট ইতিহাসের অংশ হয়ে গেছে। চাপের মুখে প্রোটিয়ারা কতটা ভেঙে পড়ে তারই প্রমাণ সেই ম্যাচটি।

সেই ম্যাচের উদাহরণ টেনে ওয়েসেলস বলেন, ‘একটা বিশ্বকাপের শিরোপা জেতা পর্যন্ত জনগণ তাদের চোকার বলবেই। এটা খুবই স্বাভাবিক। ১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপ আসরে তারা ছিল সেরা দল। কিন্তু, সেমিফাইনালে কি হয়েছিল সেটা নিশ্চয়ই সবাই জানেন। যদিও, সেবার তো বটেই এখন পর্যন্ত তারা বিশ্বকাপ শিরোপা জিততে পারেনি।’

বিস্ময়করভাবে গত বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেয়া এবি ডি ভিলিয়ার্সকে এবার দক্ষিণ আফ্রিকা নিঃসন্দেহে খুব ‘মিস’ করবে। ৬১ বছর বয়সী ওয়েসেলসও মনে করছেন কোনোভাবেই ভিলিয়ার্সের অভাব পূরণ করা যাবে না।

বললেন, ‘যে কোনো দলের জন্যই এবি ডি ভিলিয়ার্স একটা বড় ফ্যাক্টর। দক্ষিণ আফ্রিকাকে এখন হাশিম আমলার ওপর নির্ভর করতে হবে। আর অন্যদের কাজটা ঠিকভাবে করতে হবে।’

অন্যদের মতো কেপলারের বিবেচনাতেও এবার বিশ্বকাপের ফেবারিটের তালিকায় থাকবে না দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে, ফেবারিট হিসেবে তিনি তিনটি দলের নাম বললেন। তারা হল - ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও স্বাগতিক ইংল্যান্ড।

ওয়েসেলস বলেন, ‘ওয়ানডে ক্রিকেটে ভারত এখন খুব শক্তিশালী একটা দল। আর আমি মনে করি ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়াকেও হারানো খুব কঠিন হবে। ইংল্যান্ড খুব ভয়ংকর হয়ে উঠতে পারে। কারণ, তারা স্বাগতিক দল। কন্ডিশনে সবচেয়ে ভালো বোঝাপড়া আছে তাদের। তবে, একই সাথে এটা তাদের জন্য বাড়তি চাপের কারণও বটে। এই চাপটা ভারত বা অস্ট্রেলিয়ার থাকবে না।’