শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

সিকান্দার রাজাদের কণ্ঠে হাহাকার

আপডেট : ১৯ জুলাই ২০১৯, ২১:১৯

জিম্বাবুয়ের সদস্যপদ স্থগিত

স্পোর্টস রিপোর্টার

জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটে সংকটের যেন শেষ নেই। একটার পর একটা সংকট কাটছেই না। বরং আরও ঘনীভূত হলো দেশটির ক্রিকেট সংকট। জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট বোর্ডে সরকারি হস্তক্ষেপের অভিযোগে তাদের সদস্যপদ স্থগিত করেছে আইসিসি। সেই সঙ্গে জিম্বাবুয়ে ক্রিকেটের নামে বরাদ্ধ সব অর্থ আটকে দেওয়া হয়েছে এবং জিম্বাবুয়ের সব ধরনের দলকে আইসিসির অনুমোদিত সব ধরনের খেলায় নিষিদ্ধ করা হয়েছে। অক্টোবরের আইসিসি সভার মধ্যে জিম্বাবুয়ে তাদের সমস্যার সমাধান করতে পারলে অবশ্য এই স্থগিতাদেশ তুলে নেওয়া হতে পারে।

আইসিসির এই পদক্ষেপের কারণে তাত্ক্ষণিক মহাবিপদে পড়েছেন এমনিতেই অর্থনৈতিক সংকটে থাকা ক্রিকেটাররা। এই নিষেধাজ্ঞা দ্রুত উঠিয়ে না নেওয়া হলে তারা ক্যারিয়ার সংকটে পড়ে যাবেন। এই অবস্থায় দলটির সিনিয়র ক্রিকেটার সিকান্দার রাজা বলেছেন, তারা বুঝতে পারছেন না যে খেলা ছেড়ে অন্য চাকরির খোঁজ করবেন কি না।

সিকান্দার রাজা এ ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, ‘এটা কেবল একজন খেলোয়াড়ের নয়, পুরো দেশের ব্যাপার। আমি এটা সহজভাবে নিতে পারিনি। আমি নিশ্চিত, আমার সতীর্থরাও একই রকম অনুভব করেছে। আমরা এখান থেকে কোথায় যাব? এখান থেকে উত্তরণের কোনো উপায় কি আছে? দুই বছরের নিষেধাজ্ঞা (যদি হয়) অনেক ক্যারিয়ারের সমাপ্তি টেনে দিতে পারে। আমরা যদি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে খেলতে না পারি, তাহলে সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশে ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজেও খেলতে পারব না।’

সিকান্দার রাজার শঙ্কা, এই পরিস্থিতিতে ক্রিকেটাররা বিকল্প ক্যারিয়ারের কথা ভাবতে পারেন, ‘আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার হিসেবে আমরা কোথায় যাব আমি জানি না। শুধু ক্লাব ক্রিকেট থাকবে নাকি আমাদের জন্য ক্রিকেটই থাকবে না? আমরা কি আমাদের খেলার সামগ্রী পুড়িয়ে চাকরির জন্য আবেদন করব? এই মুহূর্তে আমি জানি না আমাদের কী করা উচিত।’

সিকান্দার রাজাদের ক্রিকেট বোর্ড জিম্বাবুয়ে ক্রিকেটকে নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত নেওয়াটা অবশ্য সহজ ছিল না। লন্ডনে এ বিষয় নিয়ে আইসিসির সাধারণ সভায় কয়েক দফা বৈঠকের পর তারা এই সিদ্ধান্ত নেয়। আইসিসির চেয়ারম্যান শশাঙ্ক মনোহর নিজেই বলেছেন, ‘আমরা হালকা কোনো কারণে কোনো সদস্যকে বহিষ্কারের মতো সিদ্ধান্ত নিই না। কিন্তু আমাদের অবশ্যই খেলাটাকে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপমুক্ত রাখতে হবে। জিম্বাবুয়েতে যেটা ঘটেছে, সেটা আইসিসি গঠনতন্ত্রের গুরুতর অবমাননা। আমরা এ রকম পরিস্থিতি বিনা বাধায় চলতে দিতে পারি না।’

আইসিসি একই সঙ্গে জিম্বাবুয়ের জন্য বরাদ্দ আটকে দিয়েছে। কারণ তারা মনে করছে, এই অর্থ সরকারি হস্তক্ষেপে অন্য কোথাও সরিয়ে ফেলা হতে পারে।

এই প্রথম আইসিসি তার কোনো পূর্ণ সদস্য বোর্ডের সদস্যপদ স্থগিত করল। এর আগে শ্রীলঙ্কায় রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপের কারণে তাদের সতর্ক করে দেওয়া হয়েছিল এবং শ্রীলঙ্কা দ্রুত নির্বাচনে চলে গিয়েছিল। সেই সঙ্গে আইসিসির আরেকটি সিদ্ধান্ত লক্ষণীয়। এখন নিষেধাজ্ঞায় আছে নেপাল ক্রিকেট বোর্ড। কিন্তু তাদের দলকে আইসিসির বিভিন্ন খেলায় অংশ নিতে দেওয়া হচ্ছে।

এখন জিম্বাবুয়ে কী করবে সেটা বলতে গিয়ে শশাঙ্ক মনোহর বলেছেন, ‘আইসিসি চায় তাদের সংবিধা মেনে জিম্বাবুয়েতে ক্রিকেট চালু থাকুক।’ আইসিসি তার ব্যাখ্যায় বলেছে, তিন মাসের মধ্যে নির্বাচিত কমিটির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করলে অক্টোবরের আইসিসি সভায় তাদের সদস্যপদ পুনর্বিবেচনা করা হবে।

এই সিদ্ধান্তের ফলে আপাতত জিম্বাবুয়ের মেয়েদের ও ছেলেদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে খেলা অনিশ্চিত হয়ে গেল। সেই সঙ্গে সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিতব্য ত্রিদেশীয় সিরিজেও তারা সম্ভবত খেলতে পারছে না।