শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

বাংলাদেশে এসে অভিভূত ইনফান্তিনো

আপডেট : ১৭ অক্টোবর ২০১৯, ২১:৩০

বিশ্ব ফুটবলের ১৮৭তম দল বাংলাদেশ। তবে তা সত্ত্বেও দেশটির ফুটবল উন্মাদনা যে আকাশচুম্বি এ ব্যাপারে কোনো ধারণাই ছিল না ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনোর। গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশে সৌজন্য সফরকালে তিনি জানান, ফুটবলের প্রতি দেশটির আগ্রহ অভিভূত করেছে তাকে। তিনি এটাও জানান, বয়সভিত্তিক নারী ফুটবলে দারুণ সম্ভাবনা আছে বাংলাদেশের।

ফিফা র্যাংকিংয়ের শীর্ষ ১০০ দলে কখনোই ঢুকতে পারেনি বাংলাদেশ। ফুটবলের স্বর্ণসময় নব্বইয়ের দশকে নিজেদের সর্বোচ্চ র্যাংকিং ১১০তম স্থান অর্জন করেছিল দলটি। গেল বছর তো র্যাংকিংয়ের ডাবল সেঞ্চুরি ছোঁয়া থেকে দূরে ছিল মোটে তিন ধাপ!

এমন জাতির ফুটবলে আগ্রহ সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা থাকাটা খুবই স্বাভাবিক। ফিফাপ্রধান ইনফান্তিনো অকপটে স্বীকারও করে নিলেন ব্যাপারটা। জানালেন, এখানে আসার পরে জনমনে ফুটবল উন্মাদনা দেখে ধারণাটা ১৮০ ডিগ্রি উল্টে গেছে তার। 

গতকাল রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনে ইনফান্তিনো বলেন, ‘দেশটা ফুটবল সম্পর্কে অল্পবিস্তর জানে, কিন্তু এটা নিয়ে তেমন উচ্ছ্বাস নেই এখানে, এখানে আসার আগে এমন একটা ধারণাই ছিল। কিন্তু এসে পুরোপুরি ভিন্ন এক পরিস্থিতিই দেখলাম। এখন যাবার মুহূর্তে দেশটা সম্পর্কে ইতিবাচক এক মনোভাব নিয়েই যাচ্ছি।’

কাতারের বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে লড়াকু পারফরমেন্স দিয়েও ২-০ গোলে হেরেছিল বাংলাদেশ। এরপর কোলকাতায় ভারতের বিপক্ষে তো একটুর জন্য জয়বঞ্চিত হয়েছেন জামাল ভূঁইয়ারা। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের এমন পারফরমেন্সের ভূয়সী প্রশংসাও করলেন ফিফাপ্রধান।

ইনফান্তিনোর ভাষ্য, ‘সাম্প্রতিক সময়ে দলটার পারফরমেন্স দারুণ। এইতো দুদিন আগেও ভারতের বিপক্ষে শেষ সময়ের গোলে ১-১ ড্র নিয়ে ফিরেছে বাংলাদেশ। একটু এদিক ওদিক হলে জয়ও নিয়ে ফিরতে পারত তারা। এটা দেখায় খেলাটার প্রতি খেলোয়াড়দের, মানুষের আবেগ-ভালোবাসা অসাধারণ। ফুটবলে যে কোনো কিছু হতে পারে এরও দারুণ এক বিজ্ঞাপন ম্যাচটা।’ ফিফা সভাপতি জানান, দেশের বয়সভিত্তিক পর্যায়ের সাফল্যগুলোর খবরও ভালোই রেখেছেন তিনি। বয়সভিত্তিক ফুটবলের বাংলাদেশের পারফরমেন্সের ভূয়সী প্রশংসাও করেন তিনি।

এরপর ইনফান্তিনো দক্ষিণ এশীয় ফুটবলকে আরো প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করে তোলার জন্যে আরো বেশি আঞ্চলিক প্রতিযোগিতা বাড়ানোর আহ্বান করেন। তিনি বলেন, ‘আমি আসার পর বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া দলের সংখ্যা বাড়িয়েছি। তবে এ অঞ্চলের ফুটবলকে আরো এগিয়ে নিতে অর্থ ঢালতে হবে। তার আগে অবশ্য দলগুলোর মধ্যে উত্সাহ সৃষ্টি করতে হবে। এ অঞ্চলে প্রতিযোগিতার সংখ্যা বাড়ালে দলগুলোর মধ্যে সে উত্সাহটা আসবে। কেননা তখন দলগুলোর সাফল্য পাবার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে।’

ফিফাপ্রধান এর আগে গতকাল ভোর পাঁচটায় বাংলাদেশে এসে পৌঁছান। মূলত আরো ঘণ্টা চারেক আগে আসার কথা থাকলেও প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে কিছুটা বিলম্বে বাংলাদেশে আসেন তিনি। এরপর সকাল সাড়ে ১০টায় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত্ শেষে দুপুর সাড়ে ১২টায় বাফুফেতে পৌঁছান ইনফান্তিনো। সেখানে বাফুফে কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত্ করেন তিনি। ফিফা সভাপতি এরপর সংবাদ সম্মেলন শেষে গতকালই লাওসের উদ্দেশে ব্যক্তিগত বিমানে দেশ ছাড়েন।