শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

নিউ ইয়র্কে মৃতের সংখ্যা ৯/১১-কে ছাড়িয়ে গেল

আপডেট : ০৪ এপ্রিল ২০২০, ২১:৩৫

 

করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে

g রয়টার্স

প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে মৃতের সংখ্যা ৯/১১ নামে পরিচিত ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের সন্ত্রাসী হামলায় নিহতের সংখ্যাকে ছাড়িয়ে গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের মোট মৃত্যুর প্রায় এক-তৃতীয়াংশই নিউ ইয়র্কে এবং শহরটিতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে।

জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় রাত ৮টা থেকে শুক্রবার রাত ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টাতেই যুক্তরাষ্ট্রে এক হাজার ১৬১ জনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে ৩২ হাজার ১৩৩ জন। সব মিলিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে মৃতের সংখ্যা ৭ হাজার ৪০০ পেরিয়ে গেছে। আক্রান্ত হয়েছেন পৌনে ৩ লাখের বেশি। যুক্তরাষ্ট্রের করোনা মহামারির কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে নিউ ইয়র্ক। সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ছাড়িয়ে গেছে এবং ২৪ ঘণ্টায় ৫৬২ জন মারা গেছে। শুক্রবার পর্যন্ত নিউ ইয়র্কে মোট দুই হাজার ৯৩৫ জন করোনায় মারা গেছে। এটি ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর নিউ ইয়র্কে অবস্থিত বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্রের টুইন টাওয়ারে আল-কায়েদার সন্ত্রাসী হামলায় নিহতের সংখ্যাকে ছাড়িয়ে গেছে। উল্লেখ্য, ৯/১১ নামে পরিচিত ঐ হামলায় দুই হাজার ৭০০ মানুষ মারা গিয়েছিল।

দেশটির অন্যান্য অঙ্গরাজ্যে মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা ধীরে ধীরে বাড়লেও করোনা ভাইরাস নিউ ইয়র্ক জুড়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। এর ফলে বিপুল পরিমাণ আক্রান্তের চিকিত্সা করতে গিয়ে সেখানকার হাসপাতালগুলোকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাওয়া নিউ ইয়র্কের হাসপাতালগুলোর বাইরে টাঙানো হয়েছে তাঁবু। রোগীর চাপে নিউ ইয়র্কের স্বাস্থ্য কাঠামোও ভেঙে পড়তে বসেছে। সেখানকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চিকিত্সক জানান, হাসপাতাল শয্যার অভাবে তারা গুরুতর সব রোগীকেও চিকিত্সাসেবা দিতে পারছেন না।

চিকিত্সকরা বলছেন, সংক্রমণের বিস্তার রোধে মৃতপ্রায় রোগীদের কাছে স্বজনদের যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা থাকায় অনেককেই মৃত্যুর আগের কষ্টকর কয়েক ঘণ্টা একাকি কাটাতে হচ্ছে। টুইটারে নিউ ইয়র্কের কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটি মেডিক্যাল সেন্টারের গ্লোবাল হেলথ ইন ইমার্জেন্সি মেডিসিনের পরিচালক ড. ক্রেইগ স্পেনসার বলেন, ‘সেসব তাঁবুতে আমি নিদারুণ কষ্ট, একাকিত্ব আর মৃত্যু দেখেছি। মানুষ একাকি অবস্থায় মারা যাচ্ছে।’

এদিকে নিউ ইয়র্কের মেয়র বিল ডি ব্লাসিয়ো বলেছেন, ভাইরাসের ছোবলের সবচেয়ে ভয়াবহ দিনগুলো এখনো সামনে বলে আশঙ্কা তার। সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, ‘সময়ের সঙ্গে দৌড়াতে হচ্ছে আমাদের।’ পরিস্থিতি মোকাবিলায় সেনাবাহিনীকে কাজে লাগাতেও ফের অনুরোধ করেছেন তিনি। মেয়র বলেন, ‘আমরা এমন এক শত্রুর সঙ্গে লড়ছি যে হাজারো মার্কিনিকে মেরে ফেলছে, অসংখ্য মানুষের মৃত্যু হচ্ছে, যাদের মারা যাওয়ার দরকার ছিল না।’