শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

হরমুজে ইরানি ড্রোন ধ্বংসের দাবি পেন্টাগনের, প্রত্যাখ্যান তেহরানের

আপডেট : ১৯ জুলাই ২০১৯, ২১:০৯

বিবিসি ও রয়টার্স

হরমুজ উপকূলে মার্কিন নৌবাহিনীর জাহাজ ইউএসএস বক্সার ইরানের একটি ড্রোন ধ্বংস করেছে বলে পেন্টাগন দাবি করেছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের এই দাবি প্রত্যাখ্যান করে কোনো ড্রোন খোয়া না যাওয়ার কথা জানিয়েছে ইরান।

হরমুজ প্রণালিকে ঘিরে ওয়াশিংটন-তেহরান ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যেই সেখানে ড্রোন ভূপাতিতের এই দাবি উঠলো। বৃহস্পতিবার সকালে ঐ ড্রোনটি মার্কিন নৌযানের এক হাজার গজের মধ্যে উড়ে এসে ‘হুমকি’ দেওয়ায় পালটা পদক্ষেপ হিসেবে সেটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় বলে জানিয়েছে পেন্টাগন। হোয়াইট হাউসের এক অনুষ্ঠানে এমনটাই জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেন, ‘ড্রোনটি ইউএসএস বক্সারের এক হাজার গজের মধ্যে উড়ে এসেছিল, সরে যাওয়ার জন্য সেটিকে কয়েকবার বলা হলেও ড্রোনটি তা অবজ্ঞা করে।’

যুক্তরাষ্ট্র এ ঘটনাকে আন্তর্জাতিক জলসীমায় জাহাজ চলাচলে বিঘ্ন ঘটাতে ইরানের ধারাবাহিক ‘উসকানির’ অংশ হিসেবেই দেখছে। ট্রাম্প বলেন, ‘নিজেদের লোকজন, স্থাপনা ও স্বার্থ রক্ষার অধিকার রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের। তাত্ক্ষণিকভাবে ঐ ড্রোনটি ধ্বংস করে দেওয়া হয়।’ পেন্টাগন জানিয়েছে, হরমুজ উপকূলে চলাচলের সময় উড়ে আসা একটি ড্রোনের বিরুদ্ধে ‘আত্মরক্ষামূলক ব্যবস্থা’ নিয়েছে ইউএসএস বক্সার। পেন্টাগনের মুখপাত্র কমান্ডার রেবেকা রেবারিচ বলেন, ‘আমাদের মূল্যায়ন বলছে, ড্রোনটি ছিল ইরানি।’ ড্রোনটিকে ‘ইলেকট্রনিক জ্যামিংয়ের’ মাধ্যমে ভূপাতিত করা হয় বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মার্কিন কর্মকর্তা বলেছেন।

ওয়াশিংটন ড্রোন ভূপাতিত করার দাবি করলেও তেহরান বলছে, তাদের কোনো ড্রোনই খোয়া যায়নি। মার্কিন জাহাজ ভুল করে নিজেদেরই কোনো ড্রোন ধ্বংস করেছে কি-না, ওয়াশিংটনকে তাও খতিয়ে দেখতে বলেছে তারা। শুক্রবার ইরানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি ইরানি ড্রোন ধ্বংসের দাবিকে উড়িয়ে দেন। টুইটারে তিনি বলেন, ‘হরমুজ প্রণালি কিংবা অন্য কোথাও আমরা কোনো ড্রোন হারাইনি। ইউএসএস বক্সার ভুল করে তাদেরই কোনো মনুষ্যবিহীন ড্রোন ধ্বংস করে ফেলেছে কি-না, তা নিয়ে আমি উদ্বিগ্ন।’ শিয়া সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশটির সেনাবাহিনীও পরে এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে, জানিয়েছে আরটি। ইরানের সব ড্রোনই ঘাঁটিতে ফিরেছে এবং সবগুলোই অক্ষত রয়েছে জানানো হয়। এর আগে ওয়াশিংটনের দাবির পর ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফ বৃহস্পতিবার বলেছিলেন, ‘এখন পর্যন্ত কোনো ড্রোন হারানোর খবর পাওয়া যায়নি।’

ছয় বিশ্ব শক্তির সঙ্গে চার বছর আগে তেহরানের স্বাক্ষরিত পরমাণু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্র বেরিয়ে যাওয়ার পর থেকেই হরমুজকে ঘিরে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনার পারদ চড়ছিল। ইরানের তেল রপ্তানি বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের একের পর এক পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়ায় ঊর্ধ্বতন ইরানি কর্মকর্তাদের অনেকেই হরমুজ দিয়ে তেলবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন। সম্প্রতি ঐ অঞ্চলে বেশ কয়েকটি ট্যাংকারে হামলার ঘটনাও ঘটেছে। এসব হামলা তেহরানই করাচ্ছে বলে ওয়াশিংটন অভিযোগ করলেও ইরান তা অস্বীকার করে আসছে। সম্প্রতি জিব্রাল্টারে ইরানি একটি তেলবাহী ট্যাংকার আটকের ঘটনায় যুক্তরাজ্যের সঙ্গেও তেহরানের সম্পর্কের অবনতি হয়েছে।